ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জ্যামাইকা টেস্ট

মিসবাহর পাঁচ হাজারে ১ রানের কষ্ট

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ২৬ এপ্রিল ২০১৭

মিসবাহর পাঁচ হাজারে ১ রানের কষ্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেস্ট ক্রিকেটে ৯৯ রানে আউট হওয়া ক্রিকেটারের তালিকটা বেশ লম্বা। আছে ১৯৯, এমন কি ২৯৯ রানে আউটের ঘটনাও। সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি বা ট্রিপল সেঞ্চুরি না পাওয়া সেইসব ব্যাটসম্যানের সান্ত¡না ‘আউট’ তো ক্রিকেটরই অংশ। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি বা ট্রিপল সেঞ্চুরি না পেয়ে অপরাজিত থাকার কষ্টটা অনেক বেশি। প্রায় ১৪০ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এই তালিকাটাও ছোট্ট, সর্বশেষ যে আক্ষেপে পুড়লেন মিসবাহ-উল হক। জ্যামাইকা টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে অপরাজিত থাকলেন ৯৯-এ, সঙ্গীর অভাবে ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি হলো না পাকিস্তান অধিনায়কের, এটি আবার তার শেষ আন্তর্জাতিক সিরিজ। ইতিহাসের মাত্র ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরির ১ রান দূরে অপরাজিত মিসবাহ। ১৯৯-এ দু’জন। মিসবাহর কষ্ট কিছুটা লাঘব হতে পারেÑ ২৯৯ রানে অপরাজিত ডন ব্র্যাডম্যানের ট্রিপল সেঞ্চুরি হয়নি সঙ্গীর অভাবে। আফসোসের দিনেই একটি ল্যান্ডমার্ক ছুঁয়েছেন মিসবাহ। সপ্তম পাকিস্তানী হিসেবে টেস্টে ৫ হাজার রানের মালিক হয়েছেন তিনি। ৭৩ টেস্টে তার মোট রান এখন ৫০৫০। বৃষ্টি-বাধায় প্রথম দুইদিনের বেশিরভাগ সময় নষ্ট হওয়া জ্যামাইকা টেস্টেও এসেছে নাটকীয় পরিবর্তন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৮৬ রানের জবাবে অলআউট হওয়ার আগে ৪০৭ রান করেছে সফরকারীরা। এরপর চতুর্থদিন শেষে ৯৩ রানের মধ্যে স্বাগতিকদের ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন ইয়াসির শাহ। ইনিংস হার এড়াতে ক্যারিবীয়দের চাই আরও ২৮ রান, তারপর লিড। সবমিলিয়ে মিসবাহ-ইয়াসিরের নৈপুণ্যে দারুণ সম্ভাবনায় জাগিয়ে শেষদিনে মাঠে নামে পাকিস্তান। ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি আরও তিনটি, বাবর আযম (৭২) ইউনুস খান (৫৮) ও সরফরাজ আহমেদের (৫৪)। উইন্ডিজের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন ২ পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও আলজারি জোসেফ। পাকিস্তান ইনিংসের শেষ ব্যাটসম্যান অভিষিক্ত মোহাম্মদ আব্বাস ১ রান করে এলবিডব্লিউ হলে অপরাজিত ৯৯-এর আফসোসে পড়েন অধিনায়ক মিসবাহ। টেস্ট ইতিহাসেই এমন অভিজ্ঞতা এর আগে হয়েছে মাত্র পাঁচজনের। ১৯৭৯ সালের এ্যাশেজে পার্থে ইংলিশম্যান জিওফ বয়কট প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই স্বাদ পান। ১৯৯৫ সালে সেই পার্থেই আরেক এ্যাশেজে ইংল্যান্ড এবার এই অভিজ্ঞতা ফিরিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়াকে। অভাগার নাম স্টিভ ওয়াহ। তৃতীয় ব্যাটসম্যানটিও ইংল্যান্ডের, তবে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। এজবাস্টন টেস্টে ৯৯ রানে অপরাজিত ছিলেন এ্যালেক্স ট্যুড। সঙ্গীরা সব আউট হয়েছিলেন বলে নয়, ইংল্যান্ড আসলে ২০৮ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছিল। তখন ট্যুডর সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১ রান দূরে। বেচারা টেস্টে আর কখনও সেঞ্চুরিই পাননি। একটিই ফিফটি, সেটিও অপরাজিত ৯৯ রানের। কি কষ্ট। পরের দু’জন দক্ষিণ আফ্রিকান। ২০০২ সালে সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে সেঞ্চুরিটা এভাবেই ফসকে গিয়েছিল হঠাৎ দুর্দান্ত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা শন পোলকের। পরের বছর হেডিংলি টেস্টে এ্যান্ড্রু হল ৯৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। টেস্টে মিসবাহ একবার ৯৯ রানে আউট হয়েছেন। আছে ৯৬ আর ৯৭-এ কাটা পড়ার অভিজ্ঞতা। বিপরীতে সেঞ্চুরি ১০টি। তাই তার দুঃখটা হয়তো একটু কম। যদিও এই স্বাদটা এক অর্থে তারজন্য অচেনা নয়। ওয়ানডেতে মিসবাহ কখনই সেঞ্চুরি পাননি। একবার অপরাজিত ছিলেন ৯৬ রানে, সেটিও সঙ্গীর অভাবে।
×