স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রবিন সিং উত্তর যুগে তাকেই ভাবা হতো ভারতের সবচেয়ে প্রতিভাবান পেস বোলিং-অলরাউন্ডার। ২০০৭ সালে টি২০ দিয়ে অমিত সম্ভাবনা নিয়ে দলে এসেছিলেন ইউসুফ পাঠান। কিন্তু সেই সম্ভাবনার বিচ্ছুরণটা ঠিকমতো ঘটাতে পারেননি। ধারাবাহিক হতে পারেননি। ২০১২ সালের মার্চে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। বর্তমানে বিরাট কোহলির নেতৃত্বে দারুণ সফল দলটিতে অমিত মিশ্র-শিখর ধাওয়ানদের মতো তারকারাও অনিয়মিত। অথচ প্রায় পাঁচ বছর বাইরে থাকা পাঠান এখনও নিজেকে ভারত জাতীয় দলের যে করও চাইতে সেরা বলে মনে করেন। আইপিএলে সম্প্রতি দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে মাত্র ৩৯ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৫৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে জোতানোর পর প্রশ্ন ছিল, জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখেন কি না? ‘আমার কাছে এটা কোন বগ ব্যাপার নয়। বরং আপনিই বলুন, ভারতীয় দলে কে আমার চেয়ে এগিয়ে? আমার তো মনে হয় কেউ আমার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আসতে চাইবে না। আমি নিজেকে এক বিশেষ প্রতিভা হিসেবেই মনে করি।’ জবাব পাঠানের।
আগের চার ম্যাচে ২৭ রান। সর্বোচ্চ অপরাজিত ২১। উইকেট মাত্র ১টি। অনেকে কলাকাতার মতো তারকাখচিত দলে ইউসুফ পাঠানের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু অধিনায়ক গৌতম গাম্ভীর এক সময়ের জাতীয় দল সতীর্থের সামর্থ্যরে ওপর আস্থা হারাননি। দিল্লী ম্যাচে সেটিরই প্রতিদান দিয়েছেন। মূলত পাঠানের দুরন্ত ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে ক্লোজ ম্যাচে ১ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটের জয় পায় তার কলকাতা। বুঝিয়ে দেন কেন তিনি এখনও আইপিএলের অন্যতম আকর্ষণীয় ক্রিকেটার। এই ৩৪ বছর বয়সে এসে আত্মবিশ্বাসই ইউসুফের বড় শক্তি, ‘আমার নিজের প্রতিভাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমার নিজেরই। অবস্থা বদলাতে সময় লাগে না। আমি যদি নিজের সেরাটা দিয়ে যাই তা হলে আজ না হলে কাল সুযোগ আসবেই। আমি অন্যদের দিকে তাকাই না। আমার কাজ ভাল ক্রিকেট খেলা। এবার শুরুটা ভাল হয়েছে। আমি নিজের খেলা নিয়ে খুশি এবং সবসময় নিজেকে তৈরি রাখতে চাই যাতে যখনই সুযোগ পাব, তখনই যাতে সেরাটা দিতে পারি।’
ইউসুফকে আশান্বিত করতে পারে যুবরাজ সিংয়ের ফেরা। দীর্ঘদিন বাইরে থাকার পর সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ফিরেই আলো ছড়িয়েছেন ভারতের ২০১১ বিশ্বজয়ের নায়ক। এমন কি আইপিএলে ভাল করে টি২০তে ফিরেছেন আশীষ নেহরার মতো বর্ষিয়ান পেসারও। সেক্ষেত্রে পাঠানের অপশনটা আরও ভাল। কারণ রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিনদের সবাই স্পিন বোলিং-অলরাউন্ডার। কপিল দেব, রবিন সিংয়ের পর আধুনিক ভারত সে অর্থে ভাল কোন পেস বোলিং-অলরাউন্ডার পায়নি। সম্প্রতি হারদিক পা-িয়া কিছুটা আশা দেখাচ্ছেন। এদিকে আইপিএলে নিজ দল কলকাতাকে অন্যতম শিরোপার দাবিদার বলেও উল্লেখ করেন ইউসুফ পাঠান। ব্যাটিং-বোলিংয়ে ভূমিকা রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চান। যেখানে আত্মবিশ্বাস তার বড় সম্পদ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে মাত্র ৫ রানে হারিয়ে ২০০৭ টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছিল ধোনির ভারত। জোহানেসবার্গের স্মরণীয় সেই ফাইনালে আন্তর্জাতিক অভিষেক ইউসুফের। ওয়ানডেতে পরের বছর। ২০১২ পর্যন্ত দেশের হয়ে খেলেছেন ৫৭ ওয়ানডে ও ২২টি টি২০ ম্যাচ।