ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফেডারেশনগুলোকে আরও গতিশীল হতে হবে

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১১ এপ্রিল ২০১৭

ফেডারেশনগুলোকে আরও গতিশীল হতে হবে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একটি দেশের আন্তর্জাতিক গেমসের সাফল্য-ব্যর্থতা অনেকটাই নির্ভর করে দেশটির অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের ওপর। সম্প্রতি আবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ শাহেদ রেজা। তিনি বলেছেন সব ক্রীড়া ফেডারেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে আগামীতে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে সফলতা আনতে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন। বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল ছিলেন অসম্ভব ক্রীড়াপাগল। তার বন্ধু সৈয়দ শাহেদ রেজাও তাই। এক সময় কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন রেজা। কিন্তু খেলা যার অস্তিত্বে, সে কি অন্য কোন কিছুতে স্থির থাকতে পারে? পারে না বলেই আবারও ক্রীড়াঙ্গনে ফিরে আসেন। বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) মহাসচিব পদে অভিষিক্ত হন। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে একই পদে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। জনকণ্ঠের সঙ্গে একান্ত আলাপনে শাহেদ রেজা জানান, ‘ক্রীড়ায় উন্নয়নের জন্য প্রতি ফেডারেশনের কর্মতৎপর হওয়ার কোন বিকল্প নেই। তাদের কি সমস্যা, কি দরকার ... এ নিয়ে বিওএ অচিরেই তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে।’ রেজা আরও যোগ করেন, ‘আমি মনে করি সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং সঠিক সমন্বয় থাকলে অবশ্যই যেকোন ফেডারেশন তাদের খেলায় সফলতা পাবে। যেমনটা পাচ্ছে আরচারি, শূটিং সাঁতার। এই তিনটি ফেডারেশন সঠিক কক্ষপথেই আছে। তাদের মতো বাকি ফেডারেশনগুলোকেও চেষ্টা করতে হবে। সেক্ষেত্রে বিওএ অবশ্যই তাদের যতটা সম্ভব সাহায্য করবে প্রয়োজনীয় অর্থ এবং বিদেশী কোচ দিয়ে।’ এসএ গেমস, এশিয়ান গেমস এবং কমনওয়েলথ গেমসÑ এই তিনটি ক্রীড়া আসরে নিয়মিতভাবেই অংশ নেয় বাংলাদেশ ক্রীড়া দল। রেজা মনে করেন দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ নিলে এই আসরগুলোতে বাংলাদেশ আগের চেয়ে আরও ভাল করবে। শাহেদ রেজা মনে করেন গত চার বছরেও বিওএর কিছু সাফল্য ছিল। যেমন ৩৯ বছর পর বিওএর এজিএম করতে পারা, ১১ বছর ১১ মাস ১১ দিন পর বাংলাদেশ গেমস (২০১৩) আয়োজন করা, ছোট ছোট দলকে আন্তর্জাতিক গেমসে পাঠানো, এশিয়ান গেমস ও ইয়ুথ অলিম্পিকে পদক পাওয়া। ২০১০ ঘরের মাঠে এসএ গেমসে বাংলাদেশ ১৮ সোনা জিতেছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে তা ৪টিতে নেমে আসে। সেটা স্বীকার করে শাহেদ রেজা বলেন, ফেডারেশনগুলো খেলোয়াড়দের ভালভাবে তৈরি করতে পারলে আরও সোনা আসতে পারত। দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়াতে নিজের দায়িত্ব আরও বাড়ল মনে মনে করেন রেজা। এটাও মানেন এতে প্রত্যাশার চাপ আরও বেড়ে গেল। ‘আমার পুরো পরিষদ জয়লাভ করেছে। তাদের সবাইকে নিয়ে চলব। যারা নির্বাচনে আমাদের পরিষদের বাইরে ছিলেন, তাদের নিয়েও চলব। ক্রীড়াঙ্গনকে আমরা এগিয়ে নিতে চাই।’ অতীতের তিক্ততা ভুলে এবার সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নব নির্বাচিত কমিটির সদস্যদের। সেই সঙ্গে শুধু প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ না থেকে এ্যাথলেটদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাও করবে এ্যাসোসিয়েশন। এমনটাই জানিয়েছেন বিওএ এর সদ্য পুনঃনির্বাচিত কোষাধ্যক্ষ এবং উপ-মহাসচিব। বিওএর উপ-মহাসচিব আশিকুর রহমান মিকু বলেন, ‘খেলার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের খেলোয়াড়রা, প্রশিক্ষকরা যাতে চলতে পারে সেজন্য উন্নত প্রশিক্ষণের দরকার। আমরা চীনের সঙ্গে প্রশিক্ষণের বিষয়ে একটি চুক্তি করেছি।’ বিওএর কোষাধ্যক্ষ কাজী রাজিব উদ্দিন আহমেদ চপল বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে যদি আমরা না দিতে পারি তাহলে তো দেশের খেলাধুলার মানোন্নয়ন হবে না। বিওএও আশা করে সেই ব্যবস্থাটা নেবে।’ আগেরবারের অভিজ্ঞতা বলে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ফেডারেশন কর্তাদের তিক্ততার কারণে বার বারই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ক্রীড়াঙ্গন। তবে এবার সবকিছু ভুলে গিয়ে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার নব-নির্বাচিত কমিটির। তবে অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে সৈয়দ শাহেদ রেজা কমিটির পূর্ণ প্যানেলে একক আধিপত্যের ফলে কর্তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবে রূপ নেবে, তা বলে দেবে সময়ই।
×