ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গীবাদমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৮ এপ্রিল ২০১৭

জঙ্গীবাদমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাম্প্রদায়িক, জঙ্গীবাদ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার করার মধ্য দিয়ে শুক্রবার শুরু হয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দুদিনব্যাপী নবম জাতীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তারা বলেছেন, এমন একটি সমাজ থাকবে যেখানে জাতি-ধর্মের কোন বিভেদ থাকবে না। সকল নাগরিক সমান সুবিধা ভোগ করবে। কোন ধর্ম ও বর্ণের মধ্যে তফাত থাকবে না। বর্তমানে জাতি-ধর্ম নিয়েই সবচেয়ে বেশি বিভেদ দেখা দিয়েছে। আমাদের এই অবস্থা থেকে ফিরে আসতে হবে। উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের অন্যতম সভাপতি হিউবার্ট গমেজ। বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী ও নির্মল রোজারিও, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে পরিষদের পক্ষ থেকে বর্ণাঢ্য এক র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন থেকে বের হয়ে শাহবাগ ঘুরে আবার সম্মেলনস্থলে এসে শেষ হয়। পরে উদ্বোধক রেহমান সোবহান জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, বেলুন উড়িয়ে ও শান্তির প্রতীক পায়রামুক্ত করে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় হিউবার্ট গমেজ সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন। এ সম্মেলনে সারাদেশ থেকে আগত পরিষদের প্রতিনিধি, কাউন্সিলর ও নেতৃবৃন্দসহ হাজারো সদস্য অংশগ্রহণ করছেন। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধকালে প্রবাসী সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল দেশের মানুষের মধ্যে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। এ কারণেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর সংবিধানে রাষ্ট্রের সব নাগরিকের সমান সুযোগ ও অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। কিন্তু একটি গোষ্ঠী সংবিধান সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলে কেউ থাকবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এ শব্দটি এখন বেশ ব্যবহৃত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমাজ বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের সবাইকে আবার ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান দিয়ে গিয়েছিলেন তা যদি থাকত, তাহলে আজকে এ সংগঠনের জন্ম হতো না এবং এ সম্মেলনেরও কোন দরকার পড়ত না। তিনি বলেন, সামরিক সরকার ওই সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করাতেই আজ নানা মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আর সেই মৌলবাদী জঙ্গীগোষ্ঠী ও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়েছে বিএনপি ও বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বোমা মেরে মানুষ হত্যা করেন, তার মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। রার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি হিউবার্ট গমেজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্য রাখেনÑ ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, এ্যাডভোকেট সুব্রত কুমার চৌধুরী প্রমুখ।
×