ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় দলের জার্সিতে ৭০ গোল সি আর সেভেনের, সতীর্থদের প্রশংসা

রোনাল্ডোর হাসি, রোবেনের কান্না

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৭ মার্চ ২০১৭

রোনাল্ডোর হাসি, রোবেনের কান্না

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ বাছাই ফুটবলে উড়ছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগাল। অপরদিকে উল্টো রথে আছে আরিয়েন রোবেনের হল্যান্ড। পরশু রাতে পর্তুগীজরা যেমন জিতেছে, তেমনি আরেকবার হেরেছে ডাচরা। তাতে সি আর সেভেন তৃপ্তির হাসি হেসেছেন আর কান্না সামলাতে পারেননি রোবেন। ইউসেবিও, পাউলেটাকে ছাড়িয়ে পর্তুগালের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনটি অনেক আগেই নিজের করে নিয়েছেন রোনাল্ডো। এবার ব্রাজিলের জীবন্ত কিংবদন্তি, সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার পেলের রেকর্ডের দিকে ছুটছেন পর্তুগীজ অধিনায়ক। লিসবনে হাঙ্গেরির বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে জোড়া গোল করে কালো মানিকের দিকে অনেকখানি এগিয়ে গেছেন। সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলারকে ছাড়িয়ে যেতে সি আর সেভেনের চাই আর মাত্র আট গোল। বাছাইপর্বের ‘বি’ গ্রুপে হাঙ্গেরিকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে পর্তুগাল। এর মধ্যে দুটি গোলই করেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। এর ফলে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সব মিলিয়ে রোনাল্ডোর গোলসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০। ম্যাচ খেলেছেন ১৩৭। পেলে আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ারে করেছেন ৭৭ গোল। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে রোনাল্ডো যেভাবে একের পর এক গোল করে চলেছেন, তাতে পেলেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য হয়ত খুব বেশি অপেক্ষাও করতে হবে না তাকে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি গোল করার তালিকায় রোনাল্ডোর এখন আছেন ১৪তম অবস্থানে। আর দুটি গোল করলেই তিনি ছাড়িয়ে যাবেন আরও চার খেলোয়াড়কে। যাদের মধ্যে আছেন জার্মানির মিরোসøাভ ক্লোসা। বিশ্ব ফুটবলের দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক গোলের শতকও গড়ে ফেলতে পারেন রোনাল্ডো। এখন পর্যন্ত মাত্র একজনই করতে পেরেছেন গোলের সেঞ্চুরি। ইরানের আলি ডাইয়ি। ১০৯ গোল নিয়ে তিনিই আছেন সবার ওপরে। অবশ্য নিজের ৭০তম আন্তর্জাতিক গোল নয়, দেশের জয়কেই বড় করে দেখছেন রোনাল্ডো। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, আমি জানি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমার গোল সংখ্যা কত। তবে বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো ম্যাচটা আমরা জিতেছি এবং বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার লড়াইয়ে বেশ ভালভাবেই আছি আমরা। ম্যাচের শুরুটা মন মতো হয়নি জানিয়ে রোনাল্ডো বলেন, আমরা একটু ধীরে শুরু করেছিলাম। হাঙ্গেরির কৌশলটা বুঝতেই আমাদের কিছু সময় পেরিয়ে গেছে। তবে পুরো খেলাটা বদলে গেছে প্রথম গোলের পর। দল ভাল খেলতে শুরু করে, আত্মবিশ্বাসীও হয়ে ওঠে দারুণভাবে। পর্তুগাল দলটা খুব ভাল। আমাদের বেশ কয়েকজন তরুণ প্রতিভা আছে। বিশ্বকাপ ফুটবলের অন্যতম সেরা দল হল্যান্ড। এই দলটির নান্দনিক ফুটবল সবাইকে মোহিত করে। সবশেষ দুই বিশ্বকাপে শেষ চারেও খেলেছে। এরমধ্যে ২০১০ সালে ফাইনাল। কিন্তু ২০১৮ বিশ্বকাপ ডাচরা খেলতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে ঘোরতর সংশয় আছে। ইউরোপের বাছাইপর্বে হল্যান্ড খেলছে ‘এ’ গ্রুপে। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দল সরাসরি পেয়ে যাবে বিশ্বকাপের টিকেট। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা দলগুলোকে আবার নামতে হবে পরবর্তী রাউন্ডের লড়াইয়ে। সেই জায়গায় পাঁচ ম্যাচ শেষে হল্যান্ড আছে চতুর্থ স্থানে। বুলগেরিয়ার মাঠে হারের পর এটিকে ভৌতিক অভিজ্ঞতা বলছেন ডাচ অধিনায়ক আরিয়েন রোবেন। ম্যাচ শেষে বেয়ার্ন মিউনিখ উইঙ্গার বলেন, আমি আর কী বলতে পারি। আমরা এখানে ভাল ফলাফলের আশা নিয়েই এসেছিলাম। কিন্তু এখানে আমাদের একটা ভৌতিক অভিজ্ঞতা হয়ে গেল। এই হারের জন্য অভিষিক্ত ম্যাথিসকে অনেকেই দোষারোপ করছেন। তবে রোবেন সেটা মনে করছেন না। তিনি বলেন আমরা সবাই ভুল করেছি। পুরো খেলায় ছিল ভুলের ছড়াছড়ি। কেবল ম্যাথিসকে দোষ দিয়ে কী লাভ। একে অন্যকে দোষারোপ করে কোন লাভ নেই। আমরা ম্যাচটা হেরেছি। এটাই সত্য। এটাই বাস্তবতা। হল্যান্ড শেষবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারেনি ২০০২ সালে। ১৯৮২ ও ১৯৮৬ সালেও ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরের বাইরে ছিল ডাচরা। এবারও সেই একই পরিণতি এড়াতে চাইলে বাছাইপর্বের বাকি পাঁচি ম্যাচের প্রায় প্রতিটিতেই জিততে হবে তাদের।
×