ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলা

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২৫ মার্চ ২০১৭

লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলা

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের বাইরে বুধবার সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বিশ্বনেতৃবৃন্দকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলবে। এই ঘটনায় ৪ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হয়েছে। গত মাসেই ব্রিটেনের নতুন সন্ত্রাসী আইন পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান ম্যাক্স হিল এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছিলেন, ব্রিটেন এখন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলার হুমকির সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বিমানবন্দর ও মেট্রোস্টেশনে একযোগে তিনটি সন্ত্রাসী হামলার এক বছর পূর্তির দিনেই লন্ডনে ওই সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটল। বুধবারের হামলায় হতাহতের সংখ্যা বাড়েনি, গোড়াতেই আক্রমণকারীকে গুলি করে মেরে ফেলায়। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে অনেক কিছুই, তবে সবচেয়ে বড় বার্তা হলো সন্ত্রাসীকে সুযোগ না দেয়া। শুরুতেই তাকে কাবু করে ফেলা, প্রয়োজনে তাকে থামিয়ে দেয়া। সেটি যদি হত্যাকা-ের মাধ্যমেও করতে হয় তাহলে সেটাই করা সমীচীন। শেষ পর্যন্ত ওই সন্ত্রাসী হামলার দায় আইএসই নিয়েছে। বৃহস্পতিবার নিজস্ব ওয়েবসাইটে বার্তা দিয়ে তারা এই দায় স্বীকারের কথা জানায়। সাম্প্রতিক বিশ্বে যেখানেই বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা ঘটুক না কেন তার বেশির ভাগেরই দায় স্বীকার করে নিচ্ছে আইএস। বর্তমান বিশ্বে আইএস মূর্তিমান আতঙ্কেরই নাম। তাদের নীতিনৈতিকতার কোন বালাই নেই। ইসলামবিরোধী কর্মকা-ের জন্য ইতোমধ্যে তারা ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ঘৃণা কুড়িয়েছে। ইসলামের নামে তারা বর্বরতা ছড়াচ্ছে। যুক্তরাজ্যের লন্ডন নগরে জঙ্গী হামলার পর আমেরিকান সরকার নড়েচড়ে বসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মাঝে মাঝে আইএসের অনুমিত সদস্য সংখ্যা প্রকাশ করে থাকে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে পেন্টাগন বলেছিল, দুটি দেশে আইএস জঙ্গীর সংখ্যা ২০ থেকে ৩০ হাজার। কোন কোন মাসে শত শত আইএস জঙ্গী নিহত হয়েছে। শুরুতে তুরস্কের সঙ্গে উন্মুক্ত সীমান্তের সুবাধে তারা সদস্য সংগ্রহ করতে পারলেও বর্তমানে সীমান্ত কার্যত বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি শীর্ষস্থানীয় একজন মার্কিন জেনারেল জানান, ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) এখনও ১২ থেকে ১৫ হাজার জঙ্গী রয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, দুর্ধর্ষ জঙ্গী সংগঠনটির শক্তিতে ক্ষয় ধরেছে। ক্ষুদ্র বা বৃহৎÑ যে পর্যায়েই সন্ত্রাস পরিচালিত হোক না কেন তার চূড়ান্ত মূল্য দিতে হয় সাধারণ মানুষকেই। মানুষ জীবন পায় একবারের জন্যই, সেই জীবন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে অকালে যাতে ঝরে না যায় বিশ্ববাসীর সেটাই প্রত্যাশা। সন্ত্রাসবাদ মানবতার শত্রু হিসেবেই শনাক্ত হয়। বিশ্বের শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ সব সময়েই সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে। বিশ্বনেতাদের কর্তব্য হচ্ছে এই গ্রহ থেকে সন্ত্রাস নির্মূল করার জন্য সম্মিলিতভাবে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া, সন্ত্রাস উস্কে দেয়া নয়। সন্ত্রাসী দমনে কার্যকর পন্থা হলো শুরুতেই তাকে অকার্যকর করে দেয়া।
×