ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কঠিন চ্যালেঞ্জে সেই চিলির সামনে আর্জেন্টিনা

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৩ মার্চ ২০১৭

কঠিন চ্যালেঞ্জে সেই চিলির সামনে আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সর্বশেষ ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। ৪৭ বছর পর আবারও দেশটির না খেলার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে বর্তমানে লিওনেল মেসির দেশের যে অবস্থান তাতে পরের ম্যাচগুলোতে ভাল না করলে বাদ পড়তে পারে চূড়ান্ত যজ্ঞ থেকে। সামনের দু’টি ম্যাচ তাই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ দিয়াগো ম্যারাডোনার দেশের জন্য। কঠিন এ চ্যালেঞ্জ নিতেই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ফের মাঠে নামতে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। পরপর দুই বছর কোপা আমেরিকার ফাইনালে হার মানা সেই চিলির সামনে আরেকবার আকাশী-সাদারা। ঘরের মাঠে চিলির বিরুদ্ধে জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা। বুয়েন্স আয়ার্সে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ৫টা ৩০ মিনিটে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা চাপে থাকলেও বেশ ফুরফুরে মেজাজ আছে ব্রাজিল। রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বর্তমানে এক নম্বরে অবস্থান করছে। তাদের বিশ্বকাপে খেলাও প্রায় নিশ্চিত। ‘প্রায়’ বাদ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন নিশ্চিত করতে এবার ব্রাজিলের সামনে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে থাকা উরুগুয়ে। উরুগুয়ের মন্টেভিডিওতে হাইভোল্টেজ ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর ৫টায়। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে টানা দুটি কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির কাছে হেরেই শিরোপা জেতা হয়নি আর্জেন্টিনার। ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালের পর আবার চিলির মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন মেসিরা। বাছাইপর্বের ম্যাচে মাঠে নামার আগে তাই কিছুটা প্রতিশোধ স্পৃহাও থাকতে পারে আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের। অবশ্য এরচেয়েও বড় কথা, বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জয় ভীষণ জরুরী বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম শীর্ষ জনপ্রিয় দলটির। দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বে ১০ দলের মধ্যে চারটি দল সরাসরি পাবে বিশ্বকাপের টিকেট। এই মুহূর্তে আর্জেন্টিনা আছে পঞ্চম স্থানে। বাকি ছয়টি ম্যাচের প্রতিটিতেই তাই জয়ের লক্ষ্য থাকবে দুইবারের বিশ্বকাপ জয়ীদের। বর্তমানে ১২ ম্যাচ শেষে আর্জেন্টিনার ঝুলিতে জমা আছে ১৯ পয়েন্ট। এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে চিলি। তৃতীয় স্থানে থাকা ইকুয়েডরের ঘরেও জমা ২০ পয়েন্ট। অন্যদিকে ১২ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ প্রায় নিশ্চিতই করে ফেলেছে শীর্ষে থাকা নেইমারের ব্রাজিল। উরুগুয়ের বিরুদ্ধে জয় পেলে প্রায় শব্দটা ঝেড়ে ফেলতে পারবে সেলেসাওরা। ১২ ম্যাচ শেষে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে উরুগুয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। গত বছর ভেনিজুয়েলা ও পেরুর সঙ্গে পরপর দুটি ম্যাচে ড্র এবং পরবর্তীতে প্যারাগুয়ে ও ব্রাজিলের কাছে হারের কারণে বাজে অবস্থায় আছে আর্জেন্টিনা। এ কারণেই ১৯৭০ সালের পর আবারও আর্জেন্টিনার বাদ পড়ার শঙ্কা আছে। এখন যে অবস্থা তাতে চিলির কাছে হারলে আরও পিছিয়ে পড়বেন মেসি, এ্যাগুয়েরো, হিগুয়াইনরা। আবার নিজেদের মাঠে বলিভিয়াকে যদি কলম্বিয়া হারাতে পারে, আর্জেন্টিনাও যদি নিজেদের ম্যাচে হেরে যায় তবে পঞ্চম স্থান থেকে আরও নীচে নেমে যাবে মেসির দল। তখন পঞ্চম স্থানে থেকে নেমে প্লে-অফ থেকেও বঞ্চিত হতে পারে আর্জেন্টিনা। চিলির বিরুদ্ধে কঠিন ম্যাচের পর আগামী বুধবার লাপাজে বলিভিয়া সফরে যাবে এডগার্ডো বাউজার দল। বলিভিয়ান আবহাওয়ায় সাধারণত খুব একটা ভাল কখনই করতে পারেনি আর্জেন্টাইনরা। এর অর্থ হচ্ছে চিলির বিরুদ্ধে ফলাফলের ওপরই দুইবারের বিশ্বকাপ বিজয়ীদের ভাগ্য অনেকটা নির্ভর করছে। এর আগে সান্টিয়াগোতে বাছাইপর্বের প্রথম লেগে গত বছর মার্চে চিলিকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা। চিলির সামনে একমাত্র সমস্যা হিসেবে দেখা দিতে পারে তারকা স্ট্রাইকার আর্টুরো ভিদালের নিষেধাজ্ঞা ও আর্সেনাল তারকা এ্যালেক্সি সানচেজের ফিটনেস। গত সপ্তাহে আর্সেনালের হয়ে খেলতে নেমে গোঁড়ালির ইনজুরিতে আক্রান্ত সানচেজ অবশ্য দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন। কোপা আমেরিকার ব্যর্থতা কাটিয়ে নতুন কোচ টিটের অধীনে বাছাইপর্বে টানা ছয়টি ম্যাচ জিতেছে ব্রাজিল। এ মুূহূর্তে তাই ভীষণ চনমনে পেলের দেশ। কোপা আমেরিকায় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল। তবে রাশিয়ার পথে বাছাইপর্বে সুস্পষ্ট ব্যবধানে শীর্ষে আছে সেলেসাওরা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা উরুগুয়ের তুলনায় তাদের পয়েন্টের ব্যবধান চার। দলের পুনরুত্থানে ৬ ম্যাচে পাঁচ গোল করা ম্যানচেস্টার সিটি তারকা গ্যাব্রিয়েল জেসুস অবশ্য ইনজুরির কারণে খেলতে পারছেন না। তবে এসব নিয়ে ভাবছেন না ব্রাজিল কোচ। কেননা টিটের হাতে স্ট্রাইকিং পজিশনে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় আছেন। নেইমারের নেতৃত্বে লিভারপুলের দুই তারকা রবার্টো ফিরমিনহো ও ফিলিপ কুটিনহো খেলতে পারেন। উরুগুয়ের কোচ ওস্কার তাবারেজ জানিয়েছেন নেইমারকে আটকাতে তার দলের পূর্ণ প্রস্তুতি আছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে উরুগুয়ের হয়ে খেলতে পারছেন না বার্সিলোনা তারকা লুইস সুয়ারেজ। এর ফলে আক্রমণ ভাগে সব দায়িত্ব বর্তেছে এডিনসন কাভানির কাঁধে।
×