ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বিশ্ব শিশু-কিশোর ও যুবনাট্য দিবসে বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২১ মার্চ ২০১৭

বিশ্ব শিশু-কিশোর ও যুবনাট্য দিবসে বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোমবার ছিল বিশ্ব শিশু-কিশোর ও যুবনাট্য দিবস। কিশোর ও তরুণ শিল্পীদের বৈচিত্র্যময় পরিবেশনায় উদ্্যাপিত হলো দিবসটি। বহুমাত্রিক পরিবেশনায় উচ্চারিত হলো সকল ধরনের নির্যাতন বন্ধ করে শিশুদের বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়। নৃত্য-গীতের সঙ্গে ছিল নাট্যাংশ, কোরিওগ্রাফি ও ক্লাউন শোর মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনা। আর সবকিছুতেই দেখা মিলল ছোটদের সৃষ্টিশীলতা। ‘শিশু হত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা’ প্রতিপাদ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পিপলস থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশন (পিটিএ)। ইন্টারন্যাশনাল এ্যামেচার থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশন (আইটা) ও ইন্টারন্যাশনাল এ্যাসোসিয়েশন অব থিয়েটার ফর চিলড্রেন এ্যান্ড ইয়ং পিপলের (আসিজেট) বাংলাদেশ কেন্দ্র হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পিটিএ। সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সোমবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে শিশু শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীতের সুরে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর খুদে শিল্পী গেয়ে শোনায় উৎসব সঙ্গীত ‘আমরা সবাই মঞ্চকুঁড়ি/নট নন্দনে ফুটব’। সেই সুরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচ করে পিটিএর সদস্যভুক্ত ছোটদের আরেকটি নৃত্যদল। নৃত্য-গীতের মেলবন্ধন শেষে উৎসব উদ্বোধন করেন পিটিএর প্রতিষ্ঠাতা ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। উদ্বোধনী বক্তব্যে লিয়াকত আলী লাকী প্রতি মাসে শিশু-কিশোর ও যুবকদের নিয়ে নির্মিত দু’টি করে নাট্য প্রদর্শনীর ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার পাশাপাশি তিনি বলেন, আগাম মে মাসে সাহিত্যনির্ভর জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্য উৎসবের আয়োজন করা হবে। সমাজ গঠনে শিশুদের গুরুত্ব প্রসঙ্গে বলেন, শিশুদের ক্ষমতায়ন হতে হবে। তাদের আকাক্সক্ষা উপলব্ধির পাশাপাশি বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ, শিশুরাই গড়ে তুলবে আগামীর বাংলাদেশ। তাই তাদের প্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্রটি তৈরি করে দিতে হবে। সৃজনশীল দেশ গড়তে হলে দাঁড়াতে হবে শিশুদের পাশে। অংশ নিতে হবে মানবিক সমাজ গড়ার আন্দোলনে। অনুষ্ঠানে আইটা ও আসিটেজের পক্ষ থেকে পাঠানো বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে পিটিএর শিশু শিল্পীরা ‘অবহেলায় মৃত্যু আর নয়’ শীর্ষক গানের সুরে কোরিওগ্রাফি উপস্থাপন করে। ‘বাংলাদেশের মানুষ মোরা/বাংলা মোদের মূল’ গানের সুরে সম্মেলক নৃত্য পরিবেশন করে বন্ধুমহল শিল্পী সংস্থার শিল্পীরা। এছাড়াও নৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দন ও ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয়। বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক নাট্যাংশ পরিবেশন করে জেনেসিস থিয়েটার, পিদিম থিয়েটার ও পিপলস থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশন। বাংলা কলেজ যুব থিয়েটারের কিশোররা পরিবেশন করে সম্মেলক গান। লোক নাট্যদল উপস্থাপন করে ক্লাউন শো। সকলের অংশগ্রহণে সম্মেলক কণ্ঠে ‘এ মাটি নয় জঙ্গীবাদের’ গানের সুরে শেষ হয় অনুষ্ঠান। বিগত ২৭ বছর যাবত পিপলস থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশন শিশু-কিশোর ও যুবনাট্য আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে সারাদেশের প্রায় ২৫০টি শিশু-কিশোর ও যুবনাট্য সংগঠন এই এ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্ভুক্ত। ১৯৯৫ সাল থেকে জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্যোৎসব ও যুব নাট্যোৎসব আয়োজন শুরু করে পিটিএস। ইতোমধ্যে আয়োজন করেছে ৫টি যুব নাট্যোৎসব ও ১৩টি শিশু-কিশোর নাট্যোৎসব। অপর্ণা খানের সঙ্গীতসন্ধ্যা ও কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা ॥ এ প্রজন্মের উদীয়মান কণ্ঠশিল্পী অপর্ণা খান। সঙ্গীতচর্চার পাশাপাশি কবিতার প্রতি রয়েছে তার বিশেষ অনুরাগ। সেই সুবাদে লিখেছেন বেশ কিছু কবিতা। সেগুলো প্রকাশিত হলো কাব্যগ্রন্থ ‘ভালোবাসা ভালোবাসি’। সোমবার এক আয়োজনে এই শিল্পী সঙ্গীতসন্ধ্যার পাশাপাশি কাব্যগ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন উৎসব সাংস্কৃতিক পরিষদ। কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, বিশিষ্ট সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরী ও কবি মারুফুল ইসলাম। কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সঙ্গীত পরিবেশন করেন অপর্ণা খান। সুরেলা কণ্ঠে গেয়ে শোনান ‘ঝিরিঝিরি বরষায়’, ‘সারাদিন তোমায় ভেবে’, ‘শোনো শোনো কথাটি শোনো’সহ বেশ কিছু গান। চার দিনব্যাপী এ্যানিমেশন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ॥ এ্যানিমেশন চলচ্চিত্রকে দেশীয় দর্শকদের মাঝে আরও জনপ্রিয় করতে শুরু হলো ‘মাইক্রোসফট এ্যানিমেশন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের আয়োজনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এ আয়োজন শুরু হয় সোমবার। চার দিনব্যাপী এ আয়োজনের মোট ১৫টি এ্যানিমেটেডে চলচ্চিত্র দেখানো হবে। উৎসবের চলচ্চিত্র প্রদর্শনী সকাল থেকে শুরু হলেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল সোমবার সন্ধ্যায়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুত, জ্বালানি এবং খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এছাড়াও অতিথি ছিলেন কার্টুনিস্ট শিশির কুমার ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম এ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভুঁইয়া। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি এস এম আরিফ রায়হান শোভন। উদ্বোধনী দিনে বেলা ১১টায় দেখানো হয় ‘পেঙ্গুইনস অব মাদাগাস্কার’, বেলা ১টা ৩০ মিনিটে ‘ওয়াল-ই’, বিকেল সাড়ে ৪টায় ‘ইনসাইড আউট’ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ‘কর্পস ব্রাইড’। আজ মঙ্গলবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনে সকাল ১১টায় ‘এপ্রিল এ্যান্ড দ্য এক্সট্রা অর্ডিনারি ওয়ার্ল্ড’, দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ‘ম্যারি এ্যান্ড দ্য ম্যাক্স’, বিকেলে সাড়ে ৪টায় ‘সং অব দ্য সি’ এবং সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় ‘মোয়ানা’ চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শিত হবে। চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। সবক’টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে টিএসসি অডিটরিয়ামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে এ্যানিমেশন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করে। এবারের আয়োজনটি তৃতীয় আসরের।
×