ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফারজানা তাবাসসুম

যেন প্রাইভেট ফার্ম

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১৬ মার্চ ২০১৭

যেন প্রাইভেট ফার্ম

বেশ কিছুদিন ধরেই প্রাইভেট ভার্সিটি নিয়ে ব্লগে বেশ কিছু লেখালেখি হচ্ছে। আর এর প্রায় প্রত্যেকটিতেই একটি মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়েই বেশি মাতামাতি হচ্ছে, আর সেটি হচ্ছে বিদেশী ফুলের নামে নাম একটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। বাস্তবে কিন্তু প্রায় প্রতিটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়েরই একই অবস্থা। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই কিন্তু বিএসসি করে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করছি। ক্লাস রুম সঙ্কট, শিক্ষক সঙ্কট ও খেলার মাঠের সঙ্কটসহ যা বলা হয়েছে, তা সত্য কিন্তু তা তো শুধু ওই ইউনিভার্সিটির একার নয়, প্রতিটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়েরই একই সমস্যা। হয়ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না যে কখন এক ব্যাচ বের হবে তারপর তারা ক্লাস রুমে ঢুকবে, কিন্তু তাদেরও শিক্ষক সঙ্কট আছে। এর শাখা ক্যাম্পাস নিয়ে কথা বলা হয়েছে কিন্তু এমনও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যারা শপিংমল ভাড়া নিয়ে ক্লাস নেয়, দেখলে বোঝাই যায় না আসলে বিশ্ববিদ্যালয় না শপিংমল। যদিও কথিত ওই ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একটি ক্যাম্পাসেও একই অবস্থা। বলা হয়ে থাকে “বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে যে থাকেনি, সে আসলে শিক্ষা জীবনের আসল আনন্দই পায়নি”। ঠিক লেয়ার কিংবা ব্রয়লার মুরগি যেভাবে একটি ফার্মে বড় করা হয়, আমরাও ঠিক বিশ্ববিদ্যালয় নামের ফার্মে চার বছর পড়াশোনা করছি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে হল তো স্বপ্ন, আমরা কলেজে যে বড় ক্যাম্পাস পেয়েছি তার অর্ধেকও আমরা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাই না। তবে এর জন্য আমি ইউজিসিকেই দায়ী করি, কারণ তারা বার বার সময় বৃদ্ধি না করে কেন এ্যাকশনে যায় না? প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টিও তাদের নজরে আনা উচিত, কারণ যদিও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জিপিয়ে দেখে নিচ্ছে কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে না। বর্তমানে প্রশ্ন ফাঁসের কারণে জিপিএ ৫ দেখে ভাল শিক্ষার্থী ভাবা যায় না। তাই প্রতি বিষয়ে ৯০০ ভর্তি না করে কোয়ালিটি সম্পন্ন ৯ জন ভর্তি করানও ভাল কারণ প্রোডাক্ট ভাল হলে বিজ্ঞাপন কিংবা ওয়েবসাইট রাঙ্কিং লাগে না, মানুষ নিজেই ভালকে খুঁজে নিবে। এক সময় আরবী নামের একটি বিশ্ববিদ্যালয় বেশ নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। বর্তমানে তা শাখা ক্যাম্পাস ও সার্টিফিকেট বাণিজ্যের কারণে নামসর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। আর এর জন্য ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে আসা ছাত্রছাত্রীদের । যারা বর্তমানে বেশ বড় বড় পদে থেকেও নিজের ভার্সিটির নাম বলতে লজ্জা পান। ঠিক তেমনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ও যেন নামসর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত না হয় এবং আমাদের যেন ভবিষ্যতে ভার্সিটির নাম বলতে লজ্জা না পেতে হয়, তার জন্য ফুলের নামে নাম ওই ভার্সিটি ব্যবস্থা নিবে এটাই আমি আশা করি। নারায়ণগঞ্জ থেকে
×