ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে এমপির উদ্যোগ ম্লান

থামছে না মাদক আগ্রাসন

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

থামছে না মাদক আগ্রাসন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী নগরীতে মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে নানা তৎপরতা শুরু করেছে মহানগর পুলিশ। তবে থামছে না মাদকের আগ্রাসন। এখনও প্রকাশ্যে মাদকের আখড়া বসছে নগরীর বিভিন্ন স্থানে। অভিযোগ উঠেছে খোদ পুলিশের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা মাদক কারবারি আর সেবনকারীদের জিইয়ে রাখছেন। ফলে ম্লান হচ্ছে নগর পুলিশের মাদকমুক্ত নগর গড়ার উদ্যোগ। সম্প্রতি গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে মাদকের সঙ্গে পুলিশের সম্পৃক্ততা। রাজশাহী নগরের মাদকপল্লী হিসেবে খ্যাত গুড়িপাড়া মোড়ে যাত্রী ছাউনিতে মাদক (হেরোইন) সেবন করছে দুই মাদকসেবী। আর তাদের সামনে সাদা পোশাকে বসে রয়েছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। অভিযোগ উঠেছে নগরীর রাজপাড়া থানার এএসআই রানা ও এএসআই মুর্শেদ রীতিমতো পাহারা বসিয়ে মাদকসেবীদের সুযোগ করে দিচ্ছেন। জানা গেছে, মহানগর পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম মাদকমুক্ত নগর উদ্যোগ নিয়ে নানা কর্মসূচী পালন করছেন। এর অংশ হিসেবে নগরীতে মাদক বিক্রেতাদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেয়া হয়। গত তিন মাসে কয়েক দফায় নগরীর ১৮৫ মাদক বিক্রেতা আত্মসমর্পণ করে। যাদের হতদরিদ ৫০ জনকে পুনর্বাসন করা হয়। তবে পুলিশ কমিশনারের এই প্রশংসনীয় উদ্যোগ ম্লান হচ্ছে কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার কারণে। ওই সব অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার সামনেই চলছে মাদক বিক্রি ও সেবন। গত রবিবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর রাজপাড়া থানার গুড়িপাড়া মোড়ে যাত্রী ছাউনিতে মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় ও সেবন করতে দেখা গেছে। যেখানে সাদা পোশাকে রাজপাড়া থানার দুইজন পুলিশ কর্তাকে বসে থাকতে দেখা যায়। তাদের সামনে দুইজন মাদক সেবন করছেন। মাদকের পাশাপাশি নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে পুলিশের সদস্যরাও। গত শনিবার রাতে জুয়ার বোর্ড থেকে কারা পুলিশের তিন সদস্যকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে সন্ত্রাস ও জঙ্গী দমন, মাদকবিরোধী অভিযান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রাজশাহী মহানগর পুলিশের বেশকিছু সফলতা অর্জন হলেও সে অর্জন অনেকটায় ম্লান করে দিচ্ছে কিছু অসাধু কর্মকর্তা। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আটক বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে রাতে টহলের সময় সাধারণ লোকজনকে আটক করে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। নগরীর চার থানাসহ গোয়েন্দা পুলিশের কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার এই আটক বাণিজ্যের কারণে মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য পুলিশ কমিশনারের নানামুখী সফল পদক্ষেপ ম্লান হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। এসব বিষয়ে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ইফতেখায়ের আলম বলেন, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত নগরী গড়ে তুলতে মহানগর পুলিশ কমিশনার কাজ করে যাচ্ছেন। তার নানামুখী পদক্ষেপে ইতোমধ্যেই অনেক সফলতা এসেছে। এই সফলতা কেউ যদি ম্লান করার চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেন ওসি। বিনা কারণে হয়রানি বা আটক করে অর্থ নিয়ে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে কোন অভিযোগ থাকলে সরাসরি আরএমপি সদর দফতরে জানানো আহ্বান জানিয়ে এসি ইফতেখায়ের বলেন, অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে। আর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
×