ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আজ থেকে শহীদ মিনারে একুশের অনুষ্ঠানমালা

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আজ থেকে শহীদ মিনারে একুশের অনুষ্ঠানমালা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আবার এসেছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। ইতিহাসের তাৎপর্যময় মাসটিতে প্রতি বছরের মতো এবারও নানা আয়োজনে স্মরণ করা হচ্ছে ভাষা শহীদদের। সেই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত দুই সপ্তাহব্যাপী অমর একুশের অনুষ্ঠানমালা। বিকেল চারটায় ভাষা শহীদদের স্মৃতির স্মারক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ অনুষ্ঠানের সূচনা হবে। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন ভাষাসংগ্রামী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী। ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’ সেøাগানে ৮ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়োজনটি চলবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। পরবর্তীতে ১৮ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উৎসবটি ছড়িয়ে যাবে ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে। বিকেল ৪টায় শুরু হয়ে রাত আটটা পর্যন্ত চলমান প্রতিদিনের আয়োজনে থাকবে শিশু সংগঠনের পরিবেশনা, একক ও দলীয় আবৃত্তি, একক ও সমবেত নৃত্য, একক কণ্ঠের গান, গণসঙ্গীত ও পথনাটকের পরিবেশনা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দিনে থাকবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের পরিবেশনা। সব মিলিয়ে অংশ নেবেন আড়াই হাজার শিল্পী। একুশের অনুষ্ঠানমালা উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন জোট সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। এছাড়া আয়োজনের প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ, উৎসব আহ্বায়ক ঝুনা চৌধুরী, জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ প্রমুখ। মুহাম্মদ সামাদ বলেন, একুশের অনুষ্ঠানমালা হচ্ছে আমাদের অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির প্রকাশ। এ আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ হচ্ছে সম্প্রীতির চেতনাকে ছড়িয়ে দেয়া। একুশের অনুষ্ঠানমালার পেছনের কথা তুলে ধরে গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ১৯৮৩ সালে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকার একুশের প্রভাতফেরি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জন্ম নেয়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ১৯৮৪ সাল থেকে একুশের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করছে। একুশের দুটো তাৎপর্য রয়েছে। একটি সাংস্কৃতিক ও অন্যটি রাজনৈতিক। মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে একটি অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার সংগ্রাম শুরু করেছিলাম। সেই সংগ্রাম এখনও চলছে। অন্যদিকে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে লালন করার সংগ্রামও আমাদের করতে হচ্ছে। এখনও সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এবারের উৎসবের মর্মবাণী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে গোটা জাতিকে আজ দ্বিধাবিভক্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে, চলছে সহিংসতা। তার বিপরীতে আমরা সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। তাদের মধ্যে মৈত্রীর বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে চাই। সাম্প্রতিক পাঠ্যবইয়ের সাম্প্রদায়িকীকরণের প্রসঙ্গটি উঠে আসে সংবাদ সম্মেলনে। বক্তারা বলেন, পাঠ্যবইয়ে অযৌক্তিক পরিবর্তন, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সমর্থন আমাদের একইসঙ্গে শঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ করেছে। এ বছরের পাঠ্যবই প্রকাশিত হওয়ার আমরা হতবাক হয়েছি। আকাক্সক্ষার বিপরীতে এই সর্বনাশের পথে পা বাড়ানো এক গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস দেয়। একই ষড়যন্ত্রকে রোধ করা গেলে ভবিষ্যতের গভীর সঙ্কট এড়ানো যাবে না। এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে পাঠ্যবইয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পরিবর্তনের প্রতিবাদে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ৩টায় সর্বস্তরের নাগরিকদের অংশগ্রহণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শিখা চিরন্তর পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। এশিয়ান কিউরেটোরিয়াল ফোরাম শুরু কাল ॥ আধুনিক বিশ্বে শিল্পকলার এক অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে কিউরেটিং। তবে আমাদের দেশে এখনও সেভাবে ভিত্তি অর্জন করেনি পেশাদার কিউরেটর বা কিউরেটিং। কিউরেটিংত্বে পেশাদারিত্বে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে সমসাময়িক কিউরেটোরিয়াল চর্চার ওপর আলোচনাভিত্তিক এশিয়ান কিউরেটোরিয়াল ফোরাম। এদিন সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে তিন দিনের এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হবে। এই ফোরামে সমবেত হবেন এশিয়ার ১২ দেশের পেশাদার শিল্পী এবং কিউরেটর যারা এই মহাদেশে শিল্প কিউরেটিং বিষয়ে বিভিন্ন ধারণা এবং চর্চার ক্ষেত্র নিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করবেন। যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, বৃত্ত আর্টস ট্রাস্ট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, তাইওয়ানের কুয়ান্দু চারুকলা জাদুঘর এবং দেশটির জাতীয় সংস্কৃতি ও শিল্পকলা ফাউন্ডেশন। মঙ্গলবার রাজধানীর ডেইলি স্টার- বেঙ্গল আর্টস প্রিসিঙ্কটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের হেড অব অপারেশন্স সারওয়ার জাহান চৌধুরী ও বৃত্ত আর্টস ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা শিল্পী মাহবুবুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিল্পী, শিল্পকর্ম, প্রদর্শনী কিংবা শিল্পকর্ম রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়েই রচিত হয় শিল্পকলার সম্পূর্ণ ক্ষেত্র। যেখানে অনেক পেশার মানুষ জড়িত। এই সম্পূর্ণ ক্ষেত্রকে শিল্পের ভাষায় ‘আর্ট ইকোসিস্টেম’ বলা হয় যেখানে কিউরেটর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা এই মহাদেশের শিল্পের ক্ষেত্রেও ধীরে ধীরে স্বীকৃতি পাচ্ছে। আর এই আর্ট ইকোসিস্টেমে একটি সময়োচিত অবদান রাখার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ান কিউরেটোরিয়াল ফোরাম। এ ফোরামে আলোচনার পাশাপাশি দেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প উদ্যোগ এবং প্রতিষ্ঠান যেমন ছবিমেলা, ঢাকা আর্ট সামিট, কলাকেন্দ্র ইত্যাদি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থাপনা পেশ করবেন। এশিয়ান কিউরেটোরিয়াল ফোরাম শুরু কাল ॥ আধুনিক বিশ্বে শিল্পকলার এক অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে কিউরেটিং। তবে আমাদের দেশে এখনও সেভাবে ভিত্তি অর্জন করেনি পেশাদার কিউরেটর বা কিউরেটিং। কিউরেটিংয়ে পেশাদারিত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে সমসাময়িক কিউরেটোরিয়াল চর্চার ওপর আলোচনাভিত্তিক আয়োজন এশিয়ান কিউরেটোরিয়াল ফোরাম। এদিন সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে তিনদিনের এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হবে। এ ফোরামে সমবেত হবেন এশিয়ার ১২ দেশের পেশাদার শিল্পী এবং কিউরেটর যারা এই মহাদেশে শিল্প কিউরেটিং বিষয়ে বিভিন্ন ধারণা এবং চর্চার ক্ষেত্র নিয়ে বিভিন্ন দৃৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করবেন। যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, বৃত্ত আর্টস ট্রাস্ট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, তাইওয়ানের কুয়ান্দু চারুকলা জাদুঘর ও তাইওয়ানের জাতীয় সংস্কৃতি ও শিল্পকলা ফাউন্ডেশন। মঙ্গলবার রাজধানীর ডেইলি স্টার-বেঙ্গল আর্টস প্রিসিঙ্কটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের হেড অব অপারেশন্স সারওয়ার জাহান চৌধুরী ও বৃত্ত আর্টস ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা শিল্পী মাহবুবুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিল্পী, শিল্পকর্ম, প্রদর্শনী কিংবা শিল্পকর্ম রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়েই রচিত হয় শিল্পকলার সম্পূর্ণ ক্ষেত্র। যেখানে অনেক পেশার মানুষ জড়িত। এই সম্পূর্ণ ক্ষেত্রকে শিল্পের ভাষায় ‘আর্ট ইকোসিস্টেম’ বলা হয় যেখানে কিউরেটর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা এই মহাদেশের শিল্পের ক্ষেত্রেও ধীরে ধীরে স্বীকৃতি পাচ্ছে। আর এই আর্ট ইকোসিস্টেমে একটি সময়োচিত অবদান রাখার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ান কিউরেটোরিয়াল ফোরাম। শেষ হলো জাতীয় পথনাট্যোৎসব ॥ ‘মূল্যবোধের অবক্ষয় রুখব, মানবিক সমাজ গড়ব’ সেøাগানে ৩১ জানুয়ারি থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হয় জাতীয় পথনাট্যোৎসব। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আয়োজিত আট দিনের এ উৎসবের সমাপনী দিন ছিল মঙ্গলবার। এদিন বিকেল থেকে রাত অবধি মঞ্চস্থ হয় ছয়টি পথনাটক। আব্দুল্লাহ আল হারুন রচিত ও জাহিদুর রহমান নির্দেশিত ‘পরগাছা’ নামের পথনাটক পরিবেশন করে লোক নাট্যদল (বনানী)। প্রবীর দত্ত রচিত ও হাফিজুর রহমান নির্দেশিত ‘তালা’ উপস্থাপন করে থিয়েটার (তোপখানা)। শেখ ফরিদ আহম্মেদ রচিত ও নির্দেশিত ‘অবক্ষয়’ পরিবেশন করে শহীদ সুফি নাট্যচক্র। আব্দুল আলীম আজিজের রচনা ও বৈদ্যনাথ অধিকারী নির্দেশিত ‘আলোর মশাল জ্বালো’ পরিবেশন করে দৃষ্টিপাত নাট্যদল। কচি খন্দকারের রচনা ও নির্দেশনায় নড়াইলের দৃষ্টিপাত নাট্যদল পরিবেশন করে ‘বিপন্ন দেশ মানুষ অস্তিত্ব’। সুষম নাট্য সম্প্রদায় মঞ্চস্থ করে খন্দকার আনোয়ার রচিত ও হামজা আনোয়ার নির্দেশিত ‘কে ময়নার খুনি’।
×