ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শীতের দেখা নেই মাঘেও

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭

শীতের দেখা নেই মাঘেও

নিখিল মানখিন ॥ মাঘেও তীব্র শীতের দেখা নেই। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠে গেছে ৩১ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ১৩ থেকে ১৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। আর ১৪ দিন পর বিদায় নেবে মাঘ। মাঘের বাকিদিন অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে তীব্র শীতের পূর্বাভাস নেই। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বয়ে যাবে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তবে দেশের সর্বত্র তীব্র শীত অনুভূত হবে না। ঢাকাসহ বেশ কিছু এলাকায় দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। এবার তীব্র শীত ছাড়াই মাঘ মাসের বিদায় ঘটবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। মাঘ মাসেও শীত নেই ! কনকনে শীত ছাড়াই অর্ধেকটা সময় পার করেছে মাঘ মাস। ‘মাঘের শীতে বাঘ পালায়’ প্রবাদটি মিথ্যে হতে চলেছে ! অবশ্য এবার দেশে কনকনে শীত পড়বে না বলে অনেক আগেই পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছেন আবহাওয়াবিদরা। তাঁদের পূর্বাভাসই বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। এখন পর্যন্ত ‘স্থিতাবস্থা’ বজায় রেখেছে শীত! কনকনে শীতে কাঁপতে হয়নি দেশবাসীকে। মাঝারি ধরনের শীত পড়লেও স্বাভাবিকের কাছেই ঘোরাফেরা করেছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ বছর শীত মৌসুমের গোড়াতেই বারবার হোঁচট খেয়েছে উত্তুরে হাওয়া। ভরা ডিসেম্বরেও শীত-শীত ভাবটা উধাও হওয়ার অবস্থা হয়েছিল। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শীতের মাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও গত বছরের মতো মানুষের হাড় কাঁপাতে পারেনি। জানুয়ারিতেও পুরো বৈশিষ্ট ফুটিয়ে তুলতে পারেনি শীতকাল ! শীতের এই অকাল-বিদায়ের জন্য পশ্চিমা ঝড় এবং সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের যৌথ আবির্ভাবকেই দায়ী করছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলছেন, ভারতের উত্তরপ্রদেশের ওপর দিয়ে একটি পশ্চিমা ঝড় (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠা-া, ভারি হাওয়া) বয়ে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশের উপরে রয়েছে একটি লঘুচাপ। তার প্রভাবেই জলীয় বাষ্প ঢুকেছে। সেই জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে তৈরি করছে মেঘ। আর তার ফলেই উত্তুরে হাওয়া আটকে গেছে। তৈরি হয়েছে গুমোট আবহাওয়া। পুরো ব্যাপারটাই শীতের স্বভাববিরুদ্ধ। শীতকালে সাধারণ ভাবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। ফলে দিনে ঝকঝকে রোদ পাওয়া যায়। মাটি গরম হয়। রাত হলেই সেই তাপ দ্রুত বিকিরিত হয়ে ঠান্ডা হয় মাটি। তার সঙ্গে উত্তুরে হাওয়ার যুগলবন্দীতে কনকনে ঠা-া পড়ে। কিন্তু শীতের সেই স্বাভাবিকতা এবার ধাক্কা খেয়েছে পদে পদে। সূচনা পর্বে দফায় দফায় ঝড়, ঘূর্ণিঝড় তার রাস্তায় কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছিল। তার পরেও মাথা তোলার চেষ্টা করেছিল ঠা-া। তিন-চার দিন ঠা-া ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেই পথও কার্যত বন্ধ করে দিয়েছে পশ্চিমা ঝড় আর লঘুচাপ। হিমাচলে যতই বরফ পড়ুক ঝড় ও লঘুচাপের দ্বারা ঠা-া বাতাসের রুদ্ধ হওয়া পথ এবার আর সরানো সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। অর্থাৎ মাঘের বিদায়ের আগেই শীতকে বিদায় নিতে হচ্ছে বলে মনে করছে আবহাওয়া অফিস। এদিকে, আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, আর ক’দিন পরই বিদায় নেনে জানুয়ারি। মাঘ মাস ইতোমধ্যে অর্ধেকটা সময় পার করে দিয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। ওই মাসের প্রথমার্ধে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ১টি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। ওই মাসের প্রথমার্ধে দেশের নদ-নদীর অববাহিকা ও অন্যত্র সকালের দিকে হালকা/মাঝারি ধরনের কুয়াশা থাকার সম্ভাবনা আছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ১/২ দিন বজ্রঝড় হতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদফতর।
×