ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্প্যানিশ লা লিগা, স্বস্তির জয়ে খুশি কোচ জিনেদিন জিদান, রিয়াল মাদ্রিদ ২-১ মালাগা

রামোস ঝলকে জয়ের ধারায় রিয়াল

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭

রামোস ঝলকে জয়ের ধারায় রিয়াল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উড়তে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ আচমকাই আকাশ থেকে মাটিতে নেমে পড়ে। টানা ৪০ ম্যাচ অপরাজিত থাকার গৌরবময় রেকর্ড গড়ার পর টানা দুই ম্যাচে হার মানে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। অবশেষে হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে জিনেদিন জিদানের দল। শনিবার রাতে স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে মালাগাকে ২-১ গোলে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে অধিনায়ক ও ডিফেন্ডার সার্জিও রামোসের জাদুতেই মূলত কাক্সিক্ষত জয় পেয়েছে গ্যালাক্টিকোরা। স্প্যানিশ তারকা একাই করেন দুই গোল। দারুণ এই নৈপুণ্যের মধ্য দিয়ে শাপমোচন করলেন রামোস। কেননা সপ্তাহ খানেক আগে সেভিয়ার কাছে রিয়াল ২-১ গোলে হেরেছিল মূলত তার কারণেই। ওই ম্যাচে আত্মঘাতী গোল করেছিলেন তিনি। দ্রুতই সেই দুঃখ ঘুচিয়ে দলের ত্রাতা হলেন স্প্যানিশ অধিনায়ক। এই জয়ে ১৮ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই আছে রিয়াল মাদ্রিদ। দুইয়ে থাকা সেভিয়ার পয়েন্ট ৩৯। তিনে রয়েছে বার্সিলোনা। তাদের সংগ্রহ ৩৮ পয়েন্ট আর ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। রবিবার রাতের ম্যাচের পর পয়েন্ট তালিকায় কিছুটা ওলটপালট হতে পরে। তবে রিয়ালের শীর্ষস্থানে থাকা নিয়ে কোন সংশয় নেই। সেভিয়ার বিরুদ্ধে রামোসের আত্মঘাতী গোলেই শেষ পর্যন্ত হেরে বসে রিয়াল মাদ্রিদ। রিয়ালকে বহু ম্যাচ জেতানো রামোস এক ম্যাচেই হয়ে যান ভিলেন। কারণ তার মারাত্মক ভুলের কারণেই ৪০ ম্যাচ পর হারের স্বাদ পায় মাদ্রিদ জায়ান্টরা। তবে লা লিগার পরের ম্যাচেই আবার নায়ক রামোস। তার চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্যেই স্বরূপে ফিরেছে জিনেদিন জিদানের দল। ঘরের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই গোলের পেছনে ছুটতে থাকে রিয়াল। একের পর এক আক্রমণে অতিথি মালাগাকে দিশেহারা করতে থাকেন রোনাল্ডো, বেনজামারা। প্রথম ১৫ মিনিটেই একাধিকবার মালাগার রক্ষণভাগে আক্রমণ চালান স্বাগতিক তারকারা। এর মধ্যে অন্তত দুটি গোল পেতেই পারত রিয়াল, তবে প্রথমে বেনজামা ও পরে রোনাল্ডোর প্রচেষ্টা সফল হয়নি। রোনাল্ডো তো অতিথি গোলরক্ষককে একা পেয়েও তার হাতে বল তুলে দেন। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে রামোসকে আর রুখতে পারেনি মালাগা। টনি ক্রুসের কর্নার থেকে জোরালো হেডে বল জালে জড়ান রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক। প্রথমার্ধেই ব্যবধানটা দ্বিগুণ করেন রামোস। ৪৩ মিনিটে ক্রুসের ফ্রিকিক থেকে বল পেয়ে মালাগার জালে জড়িয়ে দেন তিনি। হেডে গোল করার পর এই গোলটিও ছিল দৃষ্টিনন্দন। ফ্রিকিক থেকে আসা বলে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে দৌড়ে গিয়ে বলে পা ছোঁয়ান তিনি। অথচ প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ধরেই নিয়েছিলেন বলটি বাইরে চলে যাচ্ছে। অসাধারণ গোলটির পর ধারাভাষ্যকাররা রামোসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠেন। তারা বলেন, প্রতিষ্ঠিত স্ট্রাইকারদের পক্ষেও এমন গোল করা দুরূহ। এবারের লা লিগায় রামোসের এটি ষষ্ঠ গোল। এর আগে ৩৭ মিনিটে রামোসের আরেকটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। তা না হলে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকের সারথী হতে পারতেন সময়ের অন্যতম সফল এই তারকা। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে বিরতির পর গোল পরিশোধের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠে মালাগা। বেশ কয়েকবার আক্রমণ চালায় দলটি। তবে রিয়ালের গোলপোস্টের নিচে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান কেইলর নাভাস। ৬৩ মিনিটে কাস্ত্রোর শট ফিরিয়ে দেন নাভাস। তবে ফিরতি বল পান জুয়ান জুয়ানপি। গোল করতে মোটেও ভুল করেননি এই মিডফিল্ডার। বাকি সময়ে ব্যবধান বাড়ানোর বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। ফলে ২-১ গোলের স্বস্তির জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় রিয়ালকে। কঠিন ম্যাচটি জিতে খুশি রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমরা ম্যাচটা জিতেছি। এটাই বড় কথা। তবে প্রতিটি ম্যাচেই ফরোয়ার্ডদের গোলের সুযোগ মিস করার বিষয়টি পোড়াচ্ছে ফরাসী কিংবদন্তিকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইদানীং আমরা চারটি সুযোগ পেয়ে একটি গোল করছি। আমাদের প্রতিপক্ষরা মাঠে কঠিন পরীক্ষা নিচ্ছে।
×