ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাঙ্ককে মিনিস্টারিয়াল সভায় তোফায়েল

আপটার কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭

আপটার কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এশিয়া-প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্টের (আপটা) আওতায় বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, আপটার চতুর্থ রাউন্ড নেগোসিয়েশনের আওতায় শুল্ক সুবিধাপ্রাপ্ত পণ্য সংখ্যা ৪ হাজার ৬৪৮ থেকে বেড়ে ১০ হাজার ৬৭৭টিতে উন্নীত হবে। এতে করে আপটাভুক্ত দেশগুলোতে বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং এসডিজি অর্জনে সহায়ক হবে। ফলে বাংলাদেশের রফতানিও বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। শুল্ক ও বাজার সুবিধা বাংলাদেশের রফতানি বাজার সম্প্রসারণ এবং রফতানি আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। শুক্রবার ব্যাঙ্ককে অনুষ্ঠিত চতুর্থ মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিল সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আপটার ভবিষ্যত কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে হবে। ভবিষ্যত পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে পণ্য বাণিজ্যে শুল্ক সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি সেবাখাত, বিনিয়োগ এবং ট্রেড ফেসিলিটেশন বিষয়ে ২০০৯ সালে স্বাক্ষরিত ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি দ্রুত কার্যকর করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তা ও যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের জিডিপি অর্জন ৭ দশমিক ১১ ভাগ, মানুষের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬৬ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। একসময় যারা বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে আখ্যায়িত করেছিল, আজ তারাই বাংলাদেশকে বলছে মিরাক্কেল। নিজ অর্থায়নে বাংলাদেশ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দেশের ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালে বাংলাদেশ বিশে^র একটি মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আপটার চতুর্থ রাইন্ড নেগোসিয়েমনের আওতায় বাংলাদেশ ৫৯৮টি পণ্যে ১০ থেকে ৭০% এবং এলডিসিভুক্ত দেশের জন্য আরও ৪টি পণ্যে ২০ থেকে ৫০, চীন ২ হাজার ১৯১টি পণ্যে ৫ থেকে ১০০ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য আরও ১৮১টি পণ্যে শূন্য থেকে ১২.৫, ভারত ৩ হাজার ৩৩৪টি পণ্যে ৫ থেকে ১০০ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ১৪ থেকে ১০০, দক্ষিণ কোরিয়া ২ হাজার ৭৯৬টি পণ্যে ১০ থেকে ৫০ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৯৬১টি পণ্যে ২০ থেকে ১০০, শ্রীলঙ্কা ৫৮৫টি পণ্যে ৫ থেকে ৬২.৫ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৭৫টি পণ্যে ১০ থেকে ৫০, লাওস ৯৯৯টি পণ্যে ২০ থেকে ৩৭.৫, এবং মঙ্গোলিয়া ৩৩৩টি পণ্যে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ছাড় দিবে। এর ফলে বাংলাদেশ সর্বাধিক বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পাবে। প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালে এশিয়া প্যানপ্যাসিফিক অঞ্চলের সর্বপ্রথম প্রাধিকারযোগ্য বা প্রিফেনশিয়াল বাণিজ্য চুক্তি (ব্যাঙ্কক এগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষরিত হয়। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যাঙ্কক এগ্রিমেন্ট পুনর্গঠন করে আপটা স্বাক্ষরিত হয়। আপটা মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে শুল্ক সুবিধাসহ চতুর্থ রাউন্ড নেগোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আগামী ১ জুলাই তারিখ নির্ধারণ করা হয়। চতুর্থ মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিল সভায় বিগত প্রায় ৭ বছর নেগোসিয়েশনের পর সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। সভার সভাপতি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আপটার সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অভিনন্দন জানান। সভায় শ্রীলঙ্কার বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী রিশাদ বাথিউডেন, লাওসের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী খিম্মানি ফলসিনা, দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থ প্রতিমন্ত্রী সেং মোক চোই, চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নিং ফুকুই, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ভাগওয়ান্ট সিংবিশনই এবং মঙ্গোলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত টুগসবিলগুন তুমুর্কহুলেজ নিজেদের দেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন এবং আপটার ট্যারিফ কনসেশন, নন- ট্যারিফ মেজার্স ও রুলস অব অরিজিন সংক্রান্ত ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধন করেন।
×