ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে ১০ অস্ত্র উদ্ধার

তিন আরএসও জঙ্গী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ১১ জানুয়ারি ২০১৭

তিন আরএসও জঙ্গী গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ টেকনাফে আনসার ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলা, আনসার কমান্ডারকে হত্যা ও অস্ত্র লুটের অন্যতম হোতাসহ তিন আরএসও জঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তাদের স্বীকারোক্তি মতে আনসার ক্যাম্প থেকে লুটে নেয়া পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ ১০টি অস্ত্র ও ১৮৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাব সদস্যরা। ধৃত আরএসও জঙ্গী ও লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার হওয়ার খবরে মঙ্গলবার সকালে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় আসেন র‌্যাবের ডিজি বেনজির আহমদ ও আনসারের ডিজি মিজানুর রহমান। গ্রেফতারকৃত আরএসও জঙ্গীরা হচ্ছে- খাইরুল আমিন ও মাস্টার আবুল কালাম আজাদ। সোমবার রাত ৯টায় উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে একটি পিস্তল, একটি ওয়ানসুটার গান ও গুলিসহ প্রথমে এদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যমতে সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ওসব অস্ত্র উদ্ধার ও অপর এক রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা যায়, গত ২০১৬ সালের ১৩ মে টেকনাফে নয়াপাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয় কেন্দ্রে আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬৪০ রাউন্ড গুলি লুট এবং আনসার কমান্ডার আলী হোসেনকে হত্যা করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পর এক পাকিস্তানি নাগরিকসহ পাঁচ আরএসও ক্যাডারকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এদের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দেয়। তাদের দেয়া তথ্য যাছাই ও অন্য আসামিদের ধরতে তৎপরতা অব্যাহত রাখে প্রশাসনের লোকজন। সর্বশেষ সোমবার রাতে কুতুপালং এলাকা থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ দুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার ও তাদের দেয়া তথ্যমতে আনসার ক্যাম্প থেকে লুটে নেয়া একটি এসএমজি, ৬টি ম্যাগাজিন, একটি চাইনিজ রাইফেল ও একটি এমএফ-২ চাইনিজ রাইফেল উদ্ধার করেছে র‌্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের সদস্যরা। র‌্যাব ডিজির প্রেস ব্রিফিং ॥ টেকনাফের আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুটের ঘটনায় জড়িতদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। জড়িতদের মধ্য থেকে এ পর্যন্ত ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। আর লুটকৃত অস্ত্রের মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৫টি অস্ত্র। অবশিষ্ট ৬টি অস্ত্রও উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলেও দাবি করেছেন র‌্যাব মহাপরিচালক। প্রেস ব্রিফিংএ র‌্যাবের মহাপরিচালক আরও বলেন, টেকনাফের আনসার ক্যাম্প থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে সবাই হাল ছেড়ে দিলেও দীর্ঘ ৭ মাস পর লুট হয়ে যাওয়া অস্ত্র থেকে ৫টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে র‌্যাব। ঘটনার পরপরই ২০১৬ সালের জুন মাসে রফিক ডাকাতসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছিল। তবে কোন অস্ত্র উদ্ধার সম্ভব হয়নি দীর্ঘ ৭ মাসেও। দীর্ঘ ৭ মাস পর গতকাল রাতে ২ জনকে আটক করে র‌্যাব। তাদের স্বীকারোক্তি মতে নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন অরণ্যে অভিযান চালিয়ে হাসান নামে আরও রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার এবং লুট হওয়া ৫টি অস্ত্র ও ৫টি দেশীয় তৈরি অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয় র‌্যাব। আনসার ক্যাম্প থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলির মধ্যে ৫টি অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি ১৮৯ রাউন্ড গুলিও উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এছাড়া ৫টি দেশীয় বন্দুকসহ ২৬ রাউন্ড দেশীয় বন্দুকের গুলিও উদ্ধার করেছে র‌্যাব। ফের সক্রিয় আরএসও ॥ টেকনাফে আনসার ব্যারাকে ও মিয়ানমারের মংডুতে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর কক্সবাজারে ঘাপটি মেরে থাকা আরএসও জঙ্গীরা গ্রেফতার এড়াতে গা-ঢাকা দিয়েছিল। বর্তমানে তারা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। একটি বিশেষ মহলের ছত্রছায়ায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ঘাপটি মেরে থাকা আরএসও নেতা হাফেজ ছলাহুল ইসলাম, মৌলভী ছৈয়দ করিম, মৌলভী আজিজ, মৌলভী রফিক, রোহিঙ্গা মাস্টার আয়ুব, মৌলভী আবদুর রহমান, আবু বক্কর বিদেশে অবস্থানরত ডাঃ ইউনুছের পরামর্শে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন করে সন্ত্রাসীদের সংগঠিত করে চলছে।
×