ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মেডিক্যাল কলেজ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৯ জানুয়ারি ২০১৭

মেডিক্যাল কলেজ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে ভর্তি কার্যক্রম  বন্ধ ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যেসব বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে নীতিমালার শর্ত পূরণ করতে পারবে না আগামী শিক্ষাবর্ষে তাদের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, চিকিৎসা শিক্ষার মান নিয়ে সরকার কোন আপোস করবে না। যেসব কলেজে মানসম্মত শিক্ষক নেই, লাইব্রেরি ও ল্যাবরেটরিসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নেই, শিক্ষার্থীর সংখ্যার অনুপাতে হাসপাতালের শয্যা নেই সেসব কলেজ চালানোর কোন দরকার নেই। সরকার এ বছর চারটি কলেজের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেছে। রবিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের কে-৭৪ ব্যাচের নতুন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইসমাইল খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, বিএমডিসির সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ, বিএমএ সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম এ আজিজ, বিএমএর মহাসচিব অধ্যাপক এহতেশামুল হক বক্তব্য রাখেন। নতুন শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, ভাল চিকিৎসক হতে গেলে পড়ালেখাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। রাজনীতিকে প্রাধান্য দেয়ার প্রয়োজন নেই। পড়াশোনার পাশাপাশি মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটালে সুচিকিৎসক তৈরি হয়। তিনি বলেন, ‘আজ যারা মেডিক্যাল শিক্ষায় প্রবেশ করছো, ছয় বছর পর শিক্ষা শেষ করে গ্রামে গিয়ে নিজ এলাকার মানুষের সেবা করার মানসিকতা গড়ে তোল। গ্রামের মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু করবে। ইন্টার্নি চিকিৎসকদের রোগী ফেলে রেখে ধর্মঘটে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকদের প্রথম কাজ রোগীর চিকিৎসা করা। কোন ভুল বোঝাবুঝির কারণে রোগী ফেলে রেখে অযথা ধর্মঘট করা কোন মানবিক গুণাবলীর মধ্যে পড়ে না। তিনি বলেন, কোন আন্দোলন ছাড়াই সরকার ইন্টার্নি চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়েছে। তাই চিকিৎসায় অবহেলা করে অযথা আন্দোলনে যাওয়ার কোন অর্থ হয় না। তিনি বলেন, দেশের চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত আগ্রহ রয়েছে। এ বছর দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ নিখুঁত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারি থেকে সারাদেশের সকল মেডিক্যাল কলেজের নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হবে। হাসপাতাল স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছে জাপান ॥ নারী ও শিশুদের জন্য ঢাকায় একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছে জাপান। রবিবার জাপানের লিংক স্টাফ কোম্পানি লিমিটেডের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গিয়ে এই আগ্রহের কথা জানায়। জাপান সরকার ও জাপানী একটি হাসপাতালের সহায়তায় ঢাকায় এই হাসপাতাল স্থাপন করা হবে বলে জানায় প্রতিনিধিদল। লিংক স্টাফের প্রেসিডেন্ট ইয়াসুয়াকি সুগিতা চার সদস্য বিশিষ্ট এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অগ্রগতি সারাবিশে^ প্রশংসা অর্জন করছে। দেশী উদ্যোক্তার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের উদ্যোক্তারাও বাংলাদেশে আসছে স্বাস্থ্য স্থাপনা নির্মাণের আগ্রহ নিয়ে। তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এখন বিরাজ করছে বাংলাদেশে। সরকারও বেসরকারী উদ্যোগকে সব সময় স্বাগত জানায়। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের সরকারী হাসপাতালগুলোতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণে বেসরকারী সংস্থা নিয়োগ সংক্রান্ত এক সভা হয়। এ সময় মালয়েশিয়ার একটি বেসরকারী সংস্থা এই কার্যক্রম প্রক্রিয়ার প্রস্তাব সম্পর্কে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করে। বিভিন্ন দেশী ও বিদেশী সংস্থা দেশের সরকারী হাসপাতালগুলোতে পরিচ্ছন্নতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। সব ক’টি প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শীঘ্রই একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
×