ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইংরেজীর বদলে বাংলায় হবে কম্পিউটিং

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৪ জানুয়ারি ২০১৭

ইংরেজীর বদলে বাংলায় হবে কম্পিউটিং

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়াতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামী তিন বছরের মধ্যে ইংরেজীর বদলে বাংলায় হবে আরও বেশি কম্পিউটিং। এ সময়ের মধ্যে কম্পিউটারের অধিকাংশ কাজে বাংলা ব্যবহার করতে পারবে সাধারণ মানুষ। এর মাধ্যমে বাংলাকে গ্লোবাল প্লাটফর্মে নেতৃস্থানীয় ভাষা হিসেবে স্থান করে নিতে আরও এক ধাপ এগোবে বাংলাদেশ। এজন্য ১৫৯ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ‘গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় প্রায় ২ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের মোট ছয়টি নতুন ও সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রকল্পগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। মন্ত্রী জানান, মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে খরচ হবে ২ হাজার ৩ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ৪৭২ কোটি টাকা। মন্ত্রী বলেন, জনবলের অভাবে কিছু কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রকল্প পাসের আগে জনবল নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। জনবলের অভাবে প্রকল্পের কাজ যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রী জানান, যে কোন সুউচ্চ ভবন করতে হলে আশপাশে জলাধার রাখতে হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এবং দর্শনার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোসহ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের উন্নয়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেছেন বলে পরিকল্পনামন্ত্রী উল্লেখ করেন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলার ব্যবহার বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীতে বিদ্যমান প্রায় সাত হাজার ভাষার মধ্যে বাংলা সপ্তম বৃহত্তম ভাষা। তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলা-ভাষা সমৃদ্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ নিয়েছেন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরাও যাতে তথ্য প্রযুক্তিতে এ সুবিধা পেতে পারে, এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেছেন । জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় কম্পিউটিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলার ব্যবহার বাড়ানোর এ উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। সম্পূর্ণ সরকারী খরচে প্রকল্পটি ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হলো- আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলা ভাষাকে অগ্রগামী হিসেবে ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য ১৬টি সফওয়্যারের উন্নয়ন করা। এর মধ্যে রয়েছে বাংলা কর্পাস, বাংলা ওসিআর, বাংলা স্পিচ টু টেক্সট-টেক্সট টু স্পিচ, জাতীয় বাংলা কি বোর্ড, বাংলা স্টাইল গাইড, বাংলা ফন্ট এবং বাংলা মেশিন ট্রান্সলেটর। এসব সফটওয়্যার টুলসের উন্নয়ন করলে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলা ভাষা ব্যবহার সহজ হবে। পরবর্তী সময়ে প্রযুক্তি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আরও টুলসের উন্নয়ন করা হবে। অনুমোদিত অন্য ৫ প্রকল্প ॥ ১ হাজার ২৫৮ কোটি টাকার ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা সদর স্থানে ১৫৬টি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন’ প্রকল্প। এটি সংশোধিত (প্রথম) আকারে অনুমোদন পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেশের নগরায়ন বিবেচনায় উপজেলাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসকল উপজেলা সদরে হাল্কা ও মাঝারি ধরনের শিল্প-কারখানা, বেসরকারী বিভিন্ন অফিস ভবন, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ইত্যাদি নানা ধরনের অবকাঠমো রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং উন্নয়ন মূলত উপজেলা শহরগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। ফলে এখানে জনবসতিও দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অগ্নিকা- থেকে রক্ষা করার জন্য ফায়ার সার্ভিসের গুরুত্ব অনেক।[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ ংঃধৎঃ: }থএড়ইধপশ[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ বহফ: }থএড়ইধপশ অনুমোদন পেয়েছে প্রায় ৫৮৬ কোটি টাকার সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্প। এজন্য ভারতের কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে প্রায় ৪৭২ কোটি টাকা। চলতি বছর প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। এছাড়া অনুমোদন পেয়েছে ১২১ কোটি টাকার নাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী পুণ্যস্থান উৎসবের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ২৮১ কোটি টাকার ভোলা জেলার মেঘনা নদীর ভাঙ্গন হতে মনপুরা উপজেলাধীন রামনেওয়াজ লঞ্চঘাট এলাকা এবং তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙ্গন হতে চরফ্যাশন উপজেলাধীন ঘোষেরহাট লঞ্চঘাট এলাকা রক্ষা প্রকল্প এবং ৭০ কোটি টাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, গাজীপুর এর এ্যাপ্রোচ সড়ক প্রশস্তকরণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।
×