ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাবিনাদের ফাইনালে ওঠার লড়াই আজ

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২ জানুয়ারি ২০১৭

সাবিনাদের ফাইনালে ওঠার লড়াই আজ

জাহিদুল আলম জয় ॥ ছেলেরা না পারলেও বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলাররা ধারাবাহিকভাবে সাফল্যে ভাসাচ্ছেন দেশকে। গত কয়েক বছর অনুর্ধ পর্যায়ে তাক লাগানো সাফল্য পাচ্ছে লাল-সবুজের দেশের মেয়েরা। এবার আরেকটি গৌরময় সাফল্যের অপেক্ষায় বাংলার মেয়েরা। প্রথমবারের মতো সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার হাতছানি বাংলাদেশের। এ লক্ষ্যে আজ ভারতের শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ। আত্মবিশ্বাসে টগবগে থাকা কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের দল ম্যাচটি জিতে ইতিহাস গড়তে চায়। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে। একই স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে স্বাগতিক ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে নেপাল। এ দু’টি দলই সবশেষ তিন আসরের প্রতিটিতে ফাইনাল খেলেছে। শুধু তাই নয়, প্রতিবারই ভারত চ্যাম্পিয়ন ও নেপাল রানার্সআপ হয়েছে। এবারই প্রথম এর ব্যত্যয় হতে চলেছে। একটি দলকে প্রথমবার ফাইনালের আগেই বিদায় নিতে হবে। বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কারণেই মূলত নেপাল ও ভারতকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এখন তাই সাবিনা-স্বপ্নাদের দারুণ সুযোগ ফাইনালে খেলার। ভারতের সঙ্গে ড্র করার পর বেশ চনমনে বাংলাদেশ শিবির। তাদের লক্ষ্য একটাই ফাইনালে নাম লেখান। দুই জয় ও এক হারে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে সেরা চারে ওঠা মালদ্বীপের শুরুটা শ্রীলঙ্কাকে ৫-২ গোলে হারিয়ে। এরপর নেপালের কাছে ৯-০ গোলের বিশাল হার। গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভুটানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সেমি নিশ্চিত করে মালদ্বীপ। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে ভারতের বিরুদ্ধে রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে বাংলাদেশ। তবে লক্ষ্য পূরণ হওয়ার পর এখন ছোটনের দল সেমিতে অলআউট ফুটবল খেলতে চায়। গত আসরে এই মালদ্বীপকে গ্রুপ পর্বে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। দলটি সম্পর্কে তাই অনেকটাই ধারণা আছে সাবিনাদের। অবশ্য গ্রুপ পর্বের বাধা পেরিয়ে এবারই প্রথম সেমিতে আসা মালদ্বীপও ফাইনালে খেলার অভিন্ন স্বপ্ন বুনছে। এ কারণে মালদ্বীপকে হেলাফেলা করছে না বাংলাদেশ। সেমির দ্বৈরথে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ মহিলা দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে আমরা স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারিনি। যেটা আমরা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলেছিলাম। এখন আমাদের লক্ষ্য মালদ্বীপের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে অলআউট ফুটবল খেলা। তবে ভারতের বিরুদ্ধে অর্জনকেই সেরা বলছেন ছোটন। বলেন, এটিই আমার কোচিং ক্যারিয়ারের সেরা অর্জন। আগের সাফল্যগুলো এসেছিল বয়সভিত্তিক পর্যায়ে আর এটা জাতীয় দলের হয়ে। মেয়েরা যেভাবে খেলেছে আমি তাদের একশতে একশই দেব। মালদ্বীপকে সমীহ করলেও জয় ছাড়া ভিন্ন ভাবনা নেই বাংলাদেশ কোচের। এ প্রসঙ্গে ছোটন বলেন, প্রতিপক্ষ হিসেবে মালদ্বীপ অবশ্যই শক্তিশালী। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও নেপাল সবচেয়ে এগিয়ে। বাকিরা সবাই সমান। এখন সব দেশ মেয়েদের ফুটবল নিয়ে কাজ করছে এবং সবাই উন্নতি করছে। যেহেতু সেমিফাইনাল খেলা, সেহেতু কাউকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। আমরা সর্বোচ্চটা দিয়ে ফাইনালে ওঠার চেষ্টা করব। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুনও ভীষণ আত্মবিশ্বাসী ফাইনাল খেলতে। তিনি বলেন, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে ওঠায় আমি ভীষণ খুশি। এখন আমার একটাই লক্ষ্য ফাইনালে ওঠা। এ মুহূর্তে আর কোন ভাবনা নেই আমাদের। সেরাটা দিয়ে লক্ষ্য পূরণ করতে চাই। কোচ ও অধিনায়কের মতো আত্মবিশ্বাসী দারুণ ফর্মে থাকা গোলরক্ষক সাবিনা আক্তারও। তিনি বলেন, মালদ্বীপ বেশ শক্তিশালী দল। যখন যে দলের সঙ্গে খেলব, তাদের শক্তিশালী মনে করতে হবে। কোনভাবেই কোন দলকে দুর্বল ভাবা যাবে না। তবে আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে ফাইনালে উঠতে চাই। বাংলাদেশকে ফেবারিট মানছেন প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ কোচ নাওকো কাওমাতোও। তার হাত ধরেই প্রথমবার সেমির টিকেট পেয়েছে মালদ্বীপ। সেমির ম্যাচের আগে নাওকো বলেন, বাংলাদেশ দুইবার সেমিফাইনাল খেলেছে। আমরা এবারই প্রথম। আমার চোখে বাংলাদেশ ফেবারিট। বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড সাবিনা খাতুনকে নিয়ে বেশি চিন্তিত মালদ্বীপ কোচ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের চেয়ে দলীয় শক্তি ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের বেশি। তাদের অধিনায়ক সাবিনা আমার খুব ঘনিষ্ঠ। প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওর সঙ্গে আমার ফুটবল নিয়ে আলোচনা হয়। নাওকো বলেন, সাবিনার স্কোরিং দক্ষতা অসাধারণ। চলতি আসরে যারা ভাল স্ট্রাইকার, তাদের মধ্যে সে অন্যতম।
×