ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবুল মাল আবদুল মুহিত

সুদীর্ঘ ষাট বছরের বিচিত্র কর্মজীবন

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১ জানুয়ারি ২০১৭

সুদীর্ঘ ষাট বছরের বিচিত্র কর্মজীবন

নবম অধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের ওয়াশিংটন দূতাবাসে পদায়ন (গতকালের পর) বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, মূলধনী মেশিনারি, শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য কাঁচামালও অনেক আমেরিকা থেকে আমদানি হতো। পাকিস্তানের তখন দূতাবাস ছিল সম্ভবত ৫০/৬০টি দেশে। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং বৃটিশ কমনওয়েলথের সদস্যদের দেশে রাষ্ট্রদূতকে বলা হতো হাই কমিশনার আর অন্যরা ছিলেন এম্বাসেডর। সম্ভবত ভারত, যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও চীনে ছিল প্রধান দূতাবাসগুলো। তারপরেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল সউদি আরব, জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান এবং বেলজিয়াম। বেলজিয়ামের গুরুত্বটি ছিল এই জন্য যে ইউরোপীয় মুক্তবাজারের প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্রাসেলস্্ মোটামুটিভাবে প্রায় সর্বজন গৃহীত ইতোমধ্যেই হয়ে গিয়েছিল। মনে করা হতো যে কোন রাষ্ট্রদূত যদি পূর্বে উল্লিখিত পাঁচটি দেশের একাধিক দেশে দায়িত্ব পালন করে থাকেন তবে তিনি খুবই উঁচুমানের কর্মকর্তা ও সুনিপুণ কূটনীতিবিদ। ওয়াশিংটনে তখন রাষ্ট্রদূত ছিলেন আগা মোহাম্মদ হিলালি। তিনি ছিলেন মাদ্রাজ প্রদেশের লোক যার পূর্বপুরুষ ছিলেন ইরানের একজন কার্পেট বিক্রেতা। তার পিতা ভারতে ব্যবসা করতেন এবং সেই সূত্রে মাদ্রাজের সন্নিকটে মহিশূর রাজ্যের মুসলমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। এই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে ও সহায়তায় তারা ভারতে মাদ্রাজে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন। আগা হিলালিরা ছিলেন তিন ভাই। তিনি এবং আর এক ভাই আগা মোহাম্মদ শাহী দু’জনেই আইসিএস অফিসার হিসেবে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে নিযুক্ত ছিলেন। মহিশূরের প্রধানমন্ত্রী তার অতি সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে আগা হিলালির বিয়ে দেন। তিনি শুধু সুন্দরী ছিলেন না, মেহেমানদারিতে ছিলেন খুবই পারদর্শী এবং অনন্য পরিশীলিত মহিলা ছিলেন। তাছাড়া তিনি সম্ভবত রন্ধন কার্যেও বাহাদুর ছিলেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা পেলে একটি বিদেশ সার্ভিস গড়ে তোলা হয় যেখানে প্রথম দিকে অনেক আই সি এস অফিসার, সামান্য কিছু প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিসের বা অন্য কোন বিভাগের অফিসার, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে যুদ্ধকালে প্রথম শ্রেণীতে সরাসরি নিযুক্ত অফিসার কয়েকজনকে মৌখিক পরীক্ষা ও তাদের চাকরির রেকর্ড বিবেচনা করে নিযুক্তি দেওয়া হয় এবং তারাই হয় বিদেশ সার্ভিসে প্রথম জীবনবেগী অফিসার। সময়ে কিছু রাজনৈতিক নেতা ও অফিসার যারা বিদেশে দূতাবাসে এডহকভাবে নিযুক্ত হন তাদেরও সামান্য ক’জন বিদেশ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত হন। বাকি সবাই সারা পাকিস্তানের জন্য গৃহীত বার্ষিক কেন্দ্রীয় সুপিরিয়র সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিযুক্ত হন। সুপিরিয়র সার্ভিসে শুধু সিএসপি ও পিএফএসরাই (চধশরংঃধহ ঋড়ৎবরমহ ঝবৎারপব) উঁচু বেতন স্কেলের কর্মচারী ছিলেন এবং তাদের সংখ্যা প্রতিবছরে সিএসপি ২০/২৫ এবং পিএসএফ. সর্বোচ্চ ৮ জন অর্থাৎ মোট ৩০ জনের মতো ছিল। অন্যান্য সার্ভিসের (যথা- পুলিশ, অডিট ও এ্যাকাউন্টস্্, আয়কর, বাণিজ্য, শুল্ক, সচিবালয়ের সহকারী সচিব) নিযুক্তি হতো একটি নি¤œ বেতন স্কেলে। সিএসপি ও পিএফএস তাদের চাকরি শুরু করতেন ৩৫০ টাকা মাসিক বেতনে এবং অন্যরা করতেন ৩০০ টাকা মাসিক বেতনে। বাংলাদেশের উদ্ভব পর্যন্ত এই বেতন স্কেল ও নিযুক্তি প্রক্রিয়া বহাল ছিল। রাষ্ট্রদূত আগা হিলালি ১৯৩৬ সালের আইসিএস কর্মচারী ছিলেন। ১৯৪৭ সালে তিনি পাকিস্তানের পক্ষে চাকরি করার অভিমত ব্যক্ত করে ঢাকায় সচিবালয়ে উপসচিব হিসেবে নিযুক্তি পান এবং শাহবাগ হোটেলের কাছাকাছি কোথাও একটি ব্যারাকের মতো স্থাপনায় থাকতেন। তিনি ১৯৪৮ সালেই ফরেন সার্ভিসে নিযুক্তি পেয়ে দেশে-বিদেশে চাকরি করেন। তার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় হয় ১৯৬৮ সালের শেষ দিকে অথবা ১৯৬৯ সালের প্রথম দিকে। তিনি আমাকে জানালেন, তিনি আমার ওয়াশিংটন নিযুক্তি নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে আমাকে তিনি দুটো কাজ দিলেন। প্রথম, আমার জাহাজবাহী মালপত্রের সঙ্গে তার জন্য দুই বস্তা বাসমতি চাল আমাকে নিয়ে যেতে বললেন। আমার তখন কিন্তু আমার সঙ্গে চালের বস্তা নেবার কোন ইচ্ছাই ছিল না। অবশেষে অবশ্যি আমি তার দুই বস্তা চাল করাচীতে পেলাম এবং তার সঙ্গে আমার নিজের জন্য এক বস্তা যোগ দিলাম। দ্বিতীয় বিষয়টি ছিল গুরুতর। তখন পিএফএসএ মাত্র দুটি সচিব স্তরের পদ ছিল- একজন সচিব এবং অন্যজন অতিরিক্ত সচিব। এদের কেউ রাষ্ট্রদূত হয়ে পদায়িত হলে তারা তাদের নিজেদের বেতন পেতেন এবং বিভিন্ন ভাতা নির্ধারিত হারে পেতেন। এছাড়া সব জীবনবেগী রাষ্ট্রদূত যুগ্মসচিবের বেতন পেতেন। রাজনৈতিকভাবে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত বা অন্যান্য কূটনীতিবিদদের বেতন স্কেল প্রত্যেকের জন্য ব্যক্তিগতভাবে নির্ধারিত হতো। হিলালি সাহেব বললেন যে, তিনি একটি আবেদন করেছেন যে, তাকে একটি নির্দিষ্ট মাপকাঠি দিয়ে বিচার করে সচিবের সমান বেতন দেয়া হোক। সম্ভবত তিনি ৩০০০ রুপী মাসে পেতেন সেটা তিনি পদোন্নতি পেলে ৪০০০-এ উন্নীত হতো। তিনি একটি মাপকাঠিও প্রস্তাব করলেন যে, যে রাষ্ট্রদূত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের (ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীন) মধ্যে অন্তত তিন বা চারটিতে রাষ্ট্রদূত হবেন তাকে সচিবের বেতন ও মর্যাদা দেয়া যেতে পারে। আমার কাছে প্রস্তাবটি যুক্তিযুক্ত এবং ভালই মনে হলো। আমি এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মাজেদ আলীর সঙ্গে আলাপ করে বললাম যে, বিষয়টি আমি অর্থসচিব গোলাম ইসহাক খানের কাছে পেশ করতে চাই। তিনি বললেন তোমার প্রস্তাব পেশ করতে কোন অসুবিধা নেই কিন্তু বেতন বাড়ানো নিয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্তের আশা খুব কম। বাস্তবে তাই হলো। ইসহাক সাহেব মুচকি হেসে বললেন ‘তুমি এখন থেকেই তোমার হবু বসের জন্য সেবা শুরু করেছ। এই প্রস্তাব কিন্তু নতুন নয়। তবে পিএফএসের জন্য বিশেষ পদ সৃষ্টি বেশ জটিল ব্যাপার। তোমার প্রস্তাব আমরা পরীক্ষা করে দেখব।’ আমার মনে হয় এ ব্যাপারে আমরা যতদিন পাকিস্তানে ছিলাম ততদিন কোন বিবেচনাই হয়নি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে হিলালি সাহেব পাকিস্তানের পক্ষে খুব জোর প্রচার শুরু করলেন। সংবাদ সম্মেলন প্রায়ই করতেন এবং টেলিভিশন ও রেডিওতে বক্তব্য দিতেন। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে সাফাই গেয়ে লম্বা লম্বা চিঠি জনপ্রতিনিধি, সংবাদ মাধ্যম ও ওয়াশিংটন-নিউইয়র্কের কলাম লেখকদের কাছে পাঠাতেন। তবে তার অবসরের বয়স হয়ে গিয়েছিল এবং পাকিস্তান সরকার তাকে কোন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ আর দিল না। পরিবর্তে রাষ্ট্রদূত হয়ে গেলেন মেজর জেনারেল এএনএম রাজা যিনি সামরিক জীবনের অবসানের পর চীনে রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন। সম্ভবত জুলফিকার ভুট্টো পশ্চিম পাকিস্তানে রাষ্ট্রপতি হলে পর ১৯৭২ সালে পাকিস্তান নতুন রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খানকে। ওয়াশিংটনে এসে সাময়িক বাসস্থান ঠিক করার পরেই প্রথম ব্যক্তিগত দায়িত্ব হলো আমার সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর জন্য চিকিৎসক খুঁজে পাওয়া। দ্বিতীয় বিষয়টি হয়ে গেল সাময়িকভাবে একটি গাড়ি যোগাড় করা। ওয়াশিংটনে তখন কোন পাতাল রেল বা টিউব ছিল না এবং বাস এবং ট্যাক্সির উপরই নির্ভর করতে হবে। আর তৃতীয় বিষয় হলো মনোমতো একটি বাড়ি ভাড়া করা। কাজের মধ্যে জরুরী হলো মার্কিন পিএল ৪৮০ আইনের অধীনে খাদ্যদ্রব্য (গম, চাল, ভোজ্য তেল) খরিদ করা ও তাকে পাকিস্তানের পথে জাহাজজাত করা। আর একটি কাজ হলো বিশ্বব্যাংকের ১৯৬৯ সালের যে বার্ষিক সভা ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হবে তাতে পাকিস্তানের সরকারী দলের ভ্রমণসূচী এবং ওয়াশিংটনের কার্যক্রম চূড়ান্ত করা। এছাড়া একজন নতুন মুখ হিসেবে বিভিন্ন মহলে পরিচয় পাওয়া হয় একটি উল্লেখযোগ্য কাজ। বন্ধু-বান্ধবের পরামর্শ নিয়ে আমার স্ত্রীর জন্য একজন চিকিৎসক পেলাম ডা. শার্লি মার্টিন। তাদের তিনজন চিকিৎসকের একটি অংশীদারী চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান ছিল, যার দফতর ছিল বেশ দূরে ভার্জিনিয়ার সেভেন লকস হিল এলাকায়। ডাক্তারের সঙ্গে প্রথম মোলাকাতে আমার শকটচালক হলেন আমার বন্ধু আতাউর রহমান চৌধুরী। আগেই সাবধান করা হয়েছিল যে চিকিৎসকের মোলাকাতের জন্য সময় নির্ধারণ করা থাকলেও অপেক্ষায় ঘণ্টা বা তার চেয়ে বেশি সময় থাকতে হয়। ডাক্তার সাহেব অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানালেন যে মা ও ভ্রƒণের শিশু ভালই আছে এবং প্রায় মাসখানেক পরে দ্বিতীয় মোলাকাতের দিন নির্দিষ্ট করে দিলেন। এই চিকিৎসকের কাছে নিয়মিত তিন চার বার যেতে হয়। সন্তান প্রসবের সময় ছিল নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যা বেলায়ই বোধহয় আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। ডাক্তারের পরামর্শেই আমাদের হোটেলের খুব কাছেই ওয়াশিংটন সার্কেলের ওয়াশিংটন জেনারেল হাসপাতালে আগেই বলা ছিল। আমি ছেলেমেয়ে দু’জনকে কাদিরের হেফাজতে রেখে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আমার ভকস ওয়াগন গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছলে পরেই সব দায়িত্ব হাসপাতালের লোকজন নিয়ে নিলেন। ডাক্তার মার্গারেটকে আমি খবর দিয়েছিলাম। হাসপাতালের জরুরী বিভাগ বলল যে ডাক্তার তাদেরকে ইমার্জেন্সি ডেলিভারি রুমে রোগীকে নিয়ে যেতে বলেছেন। আমি এবং সম্ভবত আতাউর চৌধুরী ডাক্তারের অপেক্ষায় থাকি। ডাক্তার আসলেন এবং প্রসব বেদনাও চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছল। ভোর রাত তিনটায় একটি ফুটফুটে ছেলেকে জন্ম দিয়ে মা ও শিশু ঘুমিয়ে গেলেন। আমি সম্ভবত ১৪ ঘণ্টা হাসপাতালে ছিলাম। সকাল বেলা ৮/৯ টায় তাদের ভাল করে দেখে শুনে অবশেষে আমি বাড়ি গেলাম। আমি জার্মেনি থেকে একটি মার্সেডিস বেনজ গাড়ি কেনার ব্যবস্থা নিই। তাই আমাদের কিছুদিনের জন্য একটি পুরনো গাড়ি কিনতে হয়। কাগজের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে একটি গাড়িই কয়েকদিনের মধ্যে পাওয়া গেল। করাচী পিন্ডিতে আমার নিজস্ব গাড়ি ছিল ভকস ওয়াগনের বিটল মডেল। ওয়াশিংটনেও আমার প্রথম গাড়ি হলো প্রায় ৭০০ ডলারে কেনা একটি বিটল। এই গাড়ি প্রায় মাস ছয়েক ব্যবহার করে যে দামে এইটি কিনেছিলাম সেই দামেই বিক্রয় করি। এদিকে আমার বাড়ির খোঁজও ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। শহরতলী বেথেসডায় ৫০০৬ এজমুর লেনে আমি একটি চার কামরার বাড়ি ভাড়া নিয়েছি। সেখানে বাড়ির মালিক বাড়িটির চুনকাম করলেন না তবে পানির লাইন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা এবং বেসমেন্টে কিছু কাজ করাচ্ছিলেন। একই সঙ্গে ঘাস, কাঠ, গাছের ডালপাড়া কাটা এসব ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন। আমাদের নির্ঘণ্ট ছিল যে ৭ নবেম্বরে আমরা বাড়িতে স্থানান্তরিত হব। বাড়িটিতে কিছু আসবাবপত্র ছিল। ভাড়া হলো ৩৮৫ ডলার। আমি আসবাবপত্র কিছু ভাড়া করলাম মাসিক ৭৫ ডলার দিয়ে। আর কিছু আসবাবপত্র খরিদ করলাম। আমাদের বিছানাটি একটি কুইন বেড খরিদ করলাম। এছাড়া কিছু সোফাও খরিদ করলাম। ডাইনিং কামরায় নিয়মমাফিক আসবাবপত্র ছিল, অন্য তিনটি বেডরুমের বিছানাও ছিল। নবেম্বরে আমরা ৫০০৬ এজমুর লেনের বাসিন্দা হয়ে গেলাম। এজমুর লেনের বাসিন্দারা ছিলেন সাধারণত অবসরপ্রাপ্ত বয়স্ক লোকেরা। পরবর্তী রাস্তায় ছিল এজমুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। কাছেই ছিল একটি বেশ বিস্তৃত বাজার এলাকা। দুইটি চেইন গ্রোসারি স্টোরের শাখা ছিল, ছিল সারারাত্রির জন্য ফার্মেসী, চুলকাটার দোকান ইত্যাদি। আমার বাড়ি থেকে দফতরে যাবার রাস্তা ছিল রকরীক পার্কওয়ে হয়ে মেসাচুসেটস এভিনিউ দিয়ে মোট ৪/৫ মাইল দূরত্ব যা গাড়িতে চড়ে ৪০/৫৫ মিনিটে সম্পন্ন করা যেত। ইউসকনসিন এভেন্যু ও মেসাচুসেটস এভিনিউ দিয়ে ছিল বিকল্প রাস্তা কিন্তু সম্ভবত সময় অনেক বেশি লাগত। ওয়াশিংটনে তখন একজন প্রসিদ্ধ বাঙালী সাংবাদিক বসবাস করতেন। প্রসিদ্ধ সম্পাদক আলতাফ হোসেন যেনি এক সময় আইয়ুব মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন তার ছেলে এজাজ হোসেন। মন্ত্রী সাহেব আমার আব্বার সহপাঠী ছিলেন বলে তাকে আগেই চিনতাম, তবে এজাজের সঙ্গে তেমন পরিচয় ছিল না কারণ সে অনেকদিন থেকেই জেনেভায় বসবাস করত। চলবে...
×