ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশাসন নীরব

ভোলায় বিষ টোপ দিয়ে চলছে পাখি নিধন

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬

ভোলায় বিষ টোপ দিয়ে চলছে পাখি নিধন

হাসিব রহমান, ভোলা ॥ মেঘনা নদী। চার দিকে জলরাশি। শীতের উষ্ণ রোদেলা আলো ঝলমল করছে পানিতে পড়ে। ভেসে আসছে কিচির মিচির শব্দ। চরের কাছাকাছি যেতেই চোখে পড়ে রং বে রংয়ের অতিথি পাখি এক দল ডানা মেলে মুক্ত আকাশে উড়ছে। আর অন্য দল চরের পানিতে ডুব সাঁতার দিয়ে খাবার খাচ্ছে। নয়ন জুড়ানো অপরূপ মনো মুগ্ধ দৃশ্য। যা চোখ মন জুড়িয়ে যায়। কিন্তু এই অপরূপ দৃশ্য বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। কিছু সময় পরেই ভেসে আসতে থাকে অসংখ্য মৃত পাখি। সরেজমিনে ভোলা ও লক্ষ্মীপুরের মাঝামাঝি মেঘনায় চোখে পড়ে এ দৃশ্য। সামান্য টাকার লোভে বিষ টোপ দিয়ে পাখি ধরতে গিয়ে এরকম শত শত পাখি মরে নদীর চরে ভাসছে। এভাবে নির্বিচারে শিকার করার ফলে পাখিদের আগমন যেমন কমে যাচ্ছে। তেমনি নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য ও সৌন্দর্য হারাচ্ছে মনোমুগ্ধকর চর। অতিথি পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কার্যকরী ব্যবস্থা না থাকায় শিকারিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ভোলার উপকূল ও দূরবর্তী বিভিন্ন চরে প্রতি বছরের মতো এ বছরও সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান দেশ থেকে কুইন আই ল্যান্ড ভোলায় পাখি আসতে শুরু করেছে। এসব পারিজাত অতিথি পাখির উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার মাঝের চর, মদনপুর, মেদুয়া, নেয়ামতপুর চরে, চরফ্যাশনের তারুয়া, কুকরী-মুকরী, সাগর কন্যা মনপুরার ঢালচর, চর পালিতাসহ অর্ধশতাধিক ছোট বড় চর আবাস স্থলে পরিণত হয়েছে। পাখিদের কলকাতনে মুখর হয়ে উঠেছে চরগু। কিন্তু এসব দুর্গম চরাঞ্চলে পাখির জন্য নিরাপদ আবাস স্থল হওয়ার কথা থাকলেও শিকারিদের কারণে তাদের নিরাপত্তা নেই। খাদ্যের সন্ধানে রং বেরংয়ের পাখা মেলা এসব পাখি উড়তে গিয়েই মারা পড়ছে শিকারিদের হাতে। ধানের সঙ্গে বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য, চেতনা নাশক দ্রব্য ও জাল ফেলে নির্বিচারে চলছে পাখি শিকার। স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিন নদীতে মাছ ধরতে গেলে মেঘনায় অসংখ্য মরা অতিথি পাখি ভাসতে দেখা যায়। এছাড়া চরাঞ্চলে অতিথি পাখি মরে পড়ে থাকে। অসাধু জেলে ভাটার সময় নদীতে কীটনাশক ধানের সঙ্গে মিশিয়ে ছিটিয়ে দেয়। ওই ধান খেয়ে পাখি পড়ে যায়। অনেক পাখি উড়ে অন্যত্র গিয়ে নদী মরে পড়ে। পাখি শিকারি দল অসুস্থ ও মৃত পাখি জবাই করে বাজারের ব্যাগে করে হোটেলে ও বাসা বাড়িতে বিক্রি করে। এসব পাখি গোপনে প্রতি পিস বিক্রি হয় ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা করে। অভিযোগ রয়েছে, দৌলতখানের সাহেবের মোড় এলাকায় আলমগীর, শাহাবুদ্দিন, জাকির, মহিউদ্দিন চক্রের ২০-২৫ সদস্য বিষ টোপ দিয়ে অতিথি পাখি নিধন করছে।
×