ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দুই বাড়িতে আগুন

সাতক্ষীরায় মুক্তিপণ দাবিতে অপহৃত কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬

সাতক্ষীরায় মুক্তিপণ দাবিতে অপহৃত কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ অপহৃত কলেজ ছাত্র গৌতম সরকারের (১৯) গলিত লাশ পাঁচ দিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মহাদেবনগর গ্রামের একটি পুকুর থেকে তার হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ লাগানো অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। অপহরণকারীরা গৌতমের মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা পণ দাবি করে। অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক ভাড়ুখালি গ্রামের নাজমুল হাসানের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গৌতমের লাশ তার বাড়ির ধারের একটি পুকুর থেকে গলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। নিহত গৌতম সরকার মহাদেবনগর গ্রামের ইউপি সদস্য গণেশ সরকারের ছেলে ও সীমান্ত আদর্শ কলেজের ডিগ্রী তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। পরিষদের একটি সালিশ নিয়ে বিরোধের জের ধরে ইউপি সদস্যের কলেজ পড়ুয়া ওই পুত্রকে অপহরণ করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা অপহরণকারী নুর ইসলাম ও রেজাউল শেখের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা গৌতম সরকারকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয়। এরপর তার মোবাইল থেকে গৌতমের বাবার কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। নিহতের বাবা গণেশ ম-ল জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গৌতম ও তার বন্ধুরা বাড়ির পাশে মহাদেবনগর মোড়ে আমিন মিস্ত্রির দোকানে বসে টিভিতে ফুটবল খেলা দেখছিল। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয়। এরপর থেকে গৌতমের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি জানান, রাতে তার নাম্বারে ছেলে গৌতমের নাম্বার থেকে ফোন করে জানানো হয় তোর ছেলেকে পেতে চাইলে দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। এরপর তিনি অপহরণকারীদের কথা মতো টাকা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে রেখেও ছেলেকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। এ ব্যাপারে পরদিন বুধবার তিনি সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নম্বর ৭৪১। নিহতের বাবা জানান, জামসেদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে একটি সালিশ নিয়ে তার বিরোধ চলছিল। জামসেদ তার সহযোগীদের নিয়ে এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। পুলিশ এ ঘটনায় নাজমুল হাসানসহ ছয়জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেনÑ নুর ইসলাম, রেজাউল শেখ, আলিম, শাওন ও মনিরুল ইসলাম। সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, গৌতমের বাবা ইউপি সদস্য গণেশ সরকারের সঙ্গে গ্রামের এক ব্যক্তির বিরোধ চলে আসছিল। তারই জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। এ ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। গৌতমের লাশ উদ্ধারের পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজনদের আহাজারির মধ্যে উত্তেজিত জনতা অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকা সন্দেহে নুর ইসলাম ও রেজাউল শেখের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সদর থানার ওসি জানান এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
×