ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রুমান হাফিজ

প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬

প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। মহান মুক্তিযুদ্ধে জয় লাভের এই মাসটিকে আমরা বড় আবেগে আনন্দ ও বেদনা নিয়ে উদযাপন করি। আর বিজয়ের মাসটিকে স্মরণ করে রাখার জন্য জাতীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচীও পালিত হয়। এটি দেশ এবং জাতির জন্য গৌরবের দিন। আনন্দ বিজয়ে, বেদনা লাখো শহীদের আত্মদান আর রক্তের স্রোতের কারণে। তবুও স্বাধীন বাংলাদেশ আমাদের প্রাণে গর্ব ও গৌরবের বাঁশি বাজায়। কিন্তু ‘সোনার বাংলা’ কতটা সর্বজনীন সোনার বাংলাদেশ হতে পেরেছে তা আমাদের ভাবনায় খুব কমই আসে। একবারও কি ভেবে দেখেছি যে স্বাধীন বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কতটা অগ্রসর হয়েছে? একাত্তরে স্বাধীনতা অর্জনে আমাদের সার্বিক প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে কতটা ফারাক রয়েছে? নাকি আদৌ কোন ফারাক নেই! বিষয়টি তখনই স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন আমরা স্বচ্ছ দৃিষ্টতে স্বাধীনতা পরবর্তী অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার দিকে তাকাই। দেখতে পাই উচ্চবিত্ত, শ্রেণী বিশেষ এবং রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের ভাগ্যই কেবল উন্নতির দিকে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে নিম্নবিত্ত তথা কৃষক-শ্রমিক ও কারিগর শ্রেণীর মানুষের ভাগ্যে তেমন একটা প্রভাব পড়েনি। বুক ভরা আশা নিয়ে এ দেশের সর্বস্তরের মুক্তিকামী মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে। শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে দীর্ঘ নয় মাস সে যুদ্ধ চলে। যার চূড়ান্ত বিজয় আসে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। এই গৌরবোজ্জ্বল দিনটিই বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি এ দেশের সাধারণ মানুষের। জীবনযুদ্ধে প্রতিনিয়ত তাদের একমুঠো ভাত যোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। দেখার যেন কেউ নেই! সর্বদা সুবিধাভোগীরা নিজেদের স্বার্থ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে। স্বাধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সূচক পূরণে যতটা এগিয়ে যাচ্ছে তার চেয়ে সুবিধাভোগীরাই বেশি সমৃদ্ধি লাভ করছে। সুবিধাভোগীরা বাঙালী, আর বঞ্চিতরাও বাঙালী! আর এ অর্জন কেবলমাত্র শ্রেণী বিশেষের জন্যই যুদ্ধে অর্জিত বিজয় তা প্রমাণ করে দিয়েছে। স্বাধীনতা তথা বিজয়ের মাস নিয়ে গর্ব কি শুধু সমৃদ্ধ শ্রেণীর জন্যই? সমাজ পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থা চলতেই থাকবে? তবে কি এই অবস্থা থেকে এদেশের সাধারণ মানুষ রেহাই পাবে না? এ প্রশ্ন আজ সমাজের সচেতন ও বিবেকবান সব মানুষের। মেজরটিলা, সিলেট থেকে
×