জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ কেরানীগঞ্জ ও ফরিদপুরে বন্দুকযুদ্ধে চার ডাকাত নিহত হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বিদেশী পিস্তল, গুলি, হাতবোমা, একটি চাপাতি ও একটি ছোরা উদ্ধার করে পুলিশ। কেরানীগঞ্জে নিহত দুই ডাকাত হলো মনতাজুল ইসলাম (৩৫) ও সাইদ আহমেদ ওরফে সবুজ (৩৪)। ফরিদপুরে নিহতরা হলো ফারুক ফকির (৪৫) ও হৃদয় হোসেন মানিক ওরফে ল্যাংড়া মানিক (৩০)। বুধবার গভীর রাতে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। খবর নিজস্ব সংবাদদাতাদের।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন মামলা থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মনতাজুলকে খুঁজছিল পুলিশ। বুধবার রাতে তেঘরিয়া সংযোগ সড়কে থানা ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল মনতাজুল ও সবুজকে একটি বিদেশী পিস্তলসহ আটক করে। রাতেই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় তাদের বিরুদ্ধ অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পোড়াহাটি, লাকিরচর ও বিসিক এলাকায় এদের কয়েকজন সহযোগীর অবস্থান, লুণ্ঠিত মালামাল ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের বিষয়ে তথ্য পায় পুলিশ। পরে রাত পৌনে একটার দিকে দুজনকে নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল পোড়াহাটি এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মনতাজুল ও সবুজের সহযোগীরা গুলিশের ওপর গুলিবর্ষণ করে এবং তাদের ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তখন আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। দুই পক্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হয় মনতাজুল ও সবুজ। প্রায় ১০ মিনিট গোলাগুলির পর হামলাকারীরা পালিয়ে গেলে মনতাজুল ও সবুজকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ফরিদপুরে ২ ডাকাত হত ॥ বুধবার রাত পৌনে একটার দিকে মোল্লাবাড়ি-বাইপাস সড়কে পিয়ারপুর মহল্লায় বন্দুকযুদ্ধে দুই ডাকাত নিহত হয়েছে। পুলিশ জানায়, নিহতরা শহরের মেঘনা জুয়েলার্সে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ছিল। দলের দুই গ্রুপের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও কোন্দলকে কেন্দ্র করে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় ওই দুই ডাকাত। নিহত দুই ডাকাত হলে, শরীয়তপুরের পালং উপজেলার চররোসন্দি গ্রামের মৃত আব্দুল করিম ফকিরের ছেলে ফারুক ফকির (৪৫) ও বরগুনার বেতাগীর কদমতলা গ্রামের রতন মিয়ার ছেলে হৃদয় হোসেন মানিক ওরফে ল্যাংড়া মানিক (৩০)।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নাজিমউদ্দিন বলেন, বুধবার রাত সোয়া ১২টার দিকে গোপন সংবাদ আসে, ডাকাত দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে রাত অনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের খন্দকার নুরু মিয়া বাইপাস সড়কের পূর্বপাশে পিয়ারপুর এলাকায় ফাঁকা জায়গায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। শব্দ শুনে পুলিশ সেখানে হাজির হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে দুটি শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে দুই ডাকাতকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুই ডাকাতকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান জানান, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি নাইন এমএম বিদেশী পিস্তল, তিনটি গুলি ও নয়টি হাতবোমা উদ্ধার করে।
ফরিদপুর পুলিশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নিহত ফারুক ও হৃদয় ফরিদপুর শহরের মেঘনা জুয়েলার্সে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। নিহত ফারুকের বিরুদ্ধে সিলেট, কুমিল্লা, ঢাকার ধামরাই, কেরানীগঞ্জ ও ফরিদপুরসহ বিভিন্ন থানায় ডাকাতি ও বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন আইনে ছয়টি মামলা রয়েছে। আর নিহত হৃদয়ের বিরুদ্ধে ধামরাই, কুমিল্লা সদর, চৌদ্দগ্রামসহ বিভিন্ন থানার ডাকাতি ও বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন আইনে চারটি মামলা রয়েছে।