ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

এক মাসের মধ্যেই এমওইউ সই হবে বলে জানালেন প্রতিমন্ত্রী

নেপালের সঙ্গে জলবিদ্যুত উৎপাদনে যাচ্ছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৯ ডিসেম্বর ২০১৬

নেপালের সঙ্গে জলবিদ্যুত উৎপাদনে যাচ্ছে বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নেপালের সঙ্গে আগামী এক মাসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্য দিয়ে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সরাসরি বিদ্যুত উৎপাদনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথমবার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি পাঁচতারা হোটেলে নেপালের সফররত জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এমওইউ সইর বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। নেপালের জল বিদ্যুত খাতে দীর্ঘদিন ধরেই বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বিলিয়ন ডলার দেশটির জল বিদ্যুত উৎপাদনে বিনিয়োগের জন্য নীতিগত সম্মতিও দিয়েছেন। বিদ্যুত, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বৈঠকের পর জানান, আগামী এক মাসের মধ্যে এমওইউ সই হবে। এর মধ্য দিয়ে আমরা নেপালে জলবিদ্যুত খাতে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছি। তিনি বলেন, সরকার নিজস্ব বিদ্যুত উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেও বিদ্যুত আমদানির চেষ্টা করছে। ভারত থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আসছে। নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুত আনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। এসব দেশে জলবিদ্যুত উৎপাদনের বিশাল সুযোগ রয়েছে। এজন্য ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ দেশটির ওপর দিয়েই বিদ্যুত আনতে হবে। ভারত এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে রাজি আছে বলে জানান তিনি। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, সভায় বিপু বলেন, একটি খসড়া এমওইউ নেপালে পাঠানো হয়েছে। এই এমওইউ সইয়ের বিষয়ে নেপালের দ্রুত সহযোগিতা কামনা করেন নসরুল হামিদ। নেপালের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনি দেশে ফিরে গিয়ে এমওইউ নিয়ে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আগামী এক মাসের মধ্যে এমওইউ সই করা সম্ভব করার বিষয়ে তিনি আশ্বাস দেন। বৈঠকে ভারতের দুটি কোম্পানির বাংলাদেশে জলবিদ্যুত বিক্রির আগ্রহের কথা জানানো হয়। এতে নেপালের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে নেপাল ছাড়াও ভারত যুক্ত। সেজন্যই দ্বিপক্ষীয় এর বদলে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা দরকার। ভারত সরকার ইতিবাচক সাড়া দিলে নেপালের কোন আপত্তি থাকবে না বলে জানান তিনি। বিদ্যুত বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, এমওইউ সই হওয়ার পর ভারতের মতো নেপালের সঙ্গে যৌথ স্টিয়ারিং কমিটি ও ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে। ফলে দেশটির বিদ্যুত খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হবে। নেপালের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জনার্দন শর্মা বুধবার বিদ্যুত ও জ্বালানি সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুত বাণিজ্যে তার দেশের আগ্রহের কথা জানান। তিনি বলেন, তার দেশে জলবিদ্যুত উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বিদ্যুত সংকটের সমাধান করা যায়। এ জন্য দেশটি বিনিয়োগ করার জন্য আগ্রহীদের অনুরোধ করছেন। বৈঠকে বিদ্যুত সচিব মনোয়ার ইসলাম, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাদ হোসাইন, পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালিদ মাহমুদ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী উপস্থিত ছিলেন। নেপালে জিএমআর নামে ভারতীয় একটি কোম্পানি জলবিদ্যুত উৎপাদন করছে। তারা বাংলাদেশে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত বিক্রির প্রস্তাবও দিয়েছে সরকারকে। এছাড়া ভারতের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি এনভিভিএন নেপাল থেকে ৫০০ হতে ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত বাংলাদেশে বিক্রি করতে আগ্রহী। এজন্য বাংলাদেশ সরকার অথবা বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী বিদ্যুত বিক্রয় চুক্তি সইয়ের প্রস্তাব দিয়েছে।
×