ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গ্র্যান্ডহোম তাণ্ডবে দিশেহারা পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ১৯ নভেম্বর ২০১৬

গ্র্যান্ডহোম তাণ্ডবে দিশেহারা পাকিস্তান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সপ্তাহের শুরুতে ক্রাইস্টচার্চে বয়ে গেছে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্প। যাতে কেঁপে উঠেছিল গোটা নিউজিল্যান্ড। এবার সেই ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভালে চলল কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের তা-ব। না ভূমিকম্প বা সুনামি নয়। অভিষেকেই কিউদের হয়ে সেরা বোলিংয়ের নতুন রেকর্ড (৬/৪১) গড়লেন ডানহাতি মিডিয়াম পেসার। ল-ভ- করে দিলেন পাকিস্তানের তারকাবহুল ব্যাটিং লাইন। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৩৩ রানে অলআউট মিসবাহ-উল হকের দল। জবাবে দ্বিতীয়দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ১০৪ রান। ৫৫ রান নিয়ে ক্রিজে অভিষিক্ত জিত রাভাল। ব্যক্তিগত ২৯ রানে তার সঙ্গে আছেন হেনরি নিকোলস। বৃষ্টির জন্য প্রথম দিনের পুরো খেলাই বাতিল হয়েছিল। ফলে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট কার্যত চারদিনে নেমে এসেছে। অতিথি পাকিরা যেখানে শুরুতেই কোণঠাসা। টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেন কেন উইলিয়ামসন। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণে স্বাগতিক পেসারদের খুব একটা অপেক্ষা করতে হয়নি। টিম সাউদির প্রথম স্পেলটা দেখুন ৪-৪-০-০। আজহার আলিকে (১৫) পরিষ্কার বোল্ড করে ধ্বংসযজ্ঞের শুরুটা করেন ডি গ্র্যান্ডহোমই। পাকিস্তানের রান তখন ৩১। অপর ওপেনার সামি আসলামকে (১৯) তুলে নেন সাউদি। এরপরই মিসবাহদের ওপর দিয়ে বয়ে যায় গ্র্যান্ডহোম সুনামি। একে একে তার শিকারে পরিণত হন বাবর আজম (৭), ইউনুস খান (২), আসাদ শফিক (১৬), সোহেল খান (৯) ও রাহাত আলি (০)। বিনা উইকেটে ৩১ থেকে যেন চোখের পলকে ৫৬/৪-এ পরিণত হয় পাকিস্তান। ডি গ্র্যান্ডহোমের বোলিং ফিগার ১৫.৫-৫-৪১-৬। নিউজিল্যান্ডের হয়ে অভিষেকে এটাই সেরা বোলিংয়ের নতুন রেকর্ড। আগে যেটি ছিল এ্যালেক্স মইরের (৬/১৫৫), এই ক্রাইস্টচার্চেই ১৯৫১ সালে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তালিকায় তৃতীয় স্থানে বর্তমান তারকা পেসার সাউদি (৫/৫৫), নেপিয়ারে ২০০৮ সালে, ইংলিশদের বিপক্ষে। গত জুলাইয়ে বয়স ৩০ পেরিয়ে গেছে। টেস্ট অভিষেকের জন্য বয়সটা নেহায়েত কম নয়। এটিই হয়তো জিম্বাবুইয়ান বংশোদ্ভূত কিউই ক্রিকেটারকে তাতিয়ে দিয়েছে। নইলে দারুণ ব্যাটিং লাইন নিয়ে গড়া টেস্টের দ্বিতীয় সেরা পাকিস্তানকে এভাবে এক হাতে গুঁড়িয়ে দেয়া সম্ভব? গ্র্যান্ডহোম যে প্রতিভাবান সেটি তার প্রথমশ্রেণীর ক্যারিয়ার দেখলেই বোঝা যায়। খেলেছেন জিম্বাবুইয়ে অনুর্ধ-১৯, অকল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের হয়ে। ৮৩টি প্রথমশ্রেণীর ম্যাচে করেছেন ৪,৩০৮ রান। সেঞ্চুরি ১০ ও হাফ সেঞ্চুরি ২৫টি। পেস বোলিংয়ে নিয়েছেন ১২৩ উইকেট। ২০১২ সালে অবশ্য কিউইদের হয়ে ৪ টি২০ ও ১টি ওয়ানডে খেলেছেন গ্র্যান্ডহোম। এদিন ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সাউদি আর ট্রেন্ট বোল্ট। মোট কথা নিউজিল্যান্ড পেসারদের সামনে অসহায় সফরকারীরা। স্রোতের প্রতিকূলে একপ্রান্তে একাই লড়েছেন মিসবাহ। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ১০৮ বলে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন অধিনায়ক। ১৩৩/১০Ñ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। ২০০১ সালে হ্যামিল্টন টেস্টের দুই ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ১০৪ ও ১১৮ রান। প্রথমদিন বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায় কাল টস করতে নেমেই অভিজাত ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন মিসবাহ। প্রথম পাকিস্তানী অধিনায়ক হিসেবে দেশকে ৫০তম টেস্টে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৪২ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান। ৪৮ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে গ্রেট ইমারন খান। পাকিস্তানের হয়ে ২৪ জয়ে অবশ্য মিসবাহই সফলতম অধিনায়ক, তার অধীনে হার ১৪ ও ড্র ১১ টেস্টে। স্কোর ॥ পাকিস্তান প্রথম ইনিংস ১৩৩/১০ (৫৫.৫ ওভার; মিসবাহ ৩১, সামি ১৯, আজহার ১৫, শফিক ১৬, সোহেল ৯, বাবর ৭, সরফরাজ ৭, ইয়াসির ৪*; গ্র্যান্ডহোম ৬/৪১, সাউদি ২/২০, বোল্ট ২/৩৯)। নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস ১০৪/৩ (৩৬ ওভার; রাভাল ৫৫*, রস টেইলর ১১, উইলিয়ামসন ৪, লাথাম ১, নিকোলস ২৯*; আমির ১/১৯, রাহাত ১/৩২, সোহেল খান ১/৩৬)। ** দ্বিতীয়দিন শেষে
×