ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গতির দানব বোল্ট মানেই উল্টা-পাল্টা জীবন!

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

গতির দানব বোল্ট মানেই উল্টা-পাল্টা জীবন!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জীবন্ত কিংবদন্তি উসাইন বোল্ট। ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডে অসাধারণ পারফর্ম করে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। ইতিহাসের একমাত্র এ্যাথলেট হিসেবে ‘ট্রিপল ট্রিপল’ জয়। গতির দানব বোল্ট মানেই উল্টা-পাল্টা জীবন ধারণ। হরহামেশাই নাইট ক্লাবে যাওয়া-আসা তার। এ নিয়ে মিডিয়ায় কম আলোচিত নন জ্যামাইকান স্প্রিন্টার। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে উসাইন বোল্ট জানিয়েছেন তার জীবনদর্শন। আর এই সাক্ষাতকারে নাইট ক্লাবের প্রতি তার আসক্ততার কথাও জানিয়েছেন উসাইন বোল্ট। তবে এটাও পরিষ্কার করলেন যে, নিয়মিত নাইট ক্লাবে গেলেও উন্মত্ত নন তিনি। বোল্ট বলেন, ‘আমি বেড়ে ওঠা সম্পর্কে একটি জিনিস শিখেছি। অনেক তারকাকে দেখেছি, গণমাধ্যম যাদেরকে প্রথম পৃষ্ঠায় রাখে। তারা একটি নির্দিষ্ট জীবন-যাপন পছন্দ করে এবং গণমাধ্যম সেটাকে ফোকাস করে আপনাকে ভাবতে শেখায় তারা যেটা করেছেন, আপনারও সেভাবে জীবনযাপন করা উচিত। এ কারণে অধিকাংশ লোক উন্মত্ত হয়ে যায় এবং চাপের কারণে ড্রাগ নেয়া পর্যন্ত শুরু করে। তারপর তারা গাঁজা, কোকেন ইত্যাদি সেবন শুরু করে। আমি এরকম ব্যক্তি হতে চাই না।’ এ সময় বোল্ট আরও বলেন, ‘কিছু লোক আমাকে নাইট ক্লাবে গিয়ে পার্টি করতে নিষেধ করেন, কিন্তু না, এটাই আমি। আমি পার্টি উপভোগ করি। সবসময় আমার মতো চলতে চেষ্টা করেছি। তাই আমি একজন ভাল আদর্শ হতে পারি। আমি সবসময় একটা কথা বলি উন্নত বিশ্বের লোকজন তৃতীয় বিশ্বের মানুষদের বোঝে না। তারা সবসময় ভাবে, আপনি যদি তারকা হন, তাহলে আপনাকে একটি শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন করতে হবে। ওয়েন রুনি ২১ বছর বয়সে বিয়ে করেছেন। কিন্তু আমি জ্যামাইকান। তাই সংস্কৃতিটা ভিন্ন। যখন একজন নারী আমাকে কাছে টানতে চান, তখন না বলা খুব কঠিন হয়ে যায়।’ বোল্টের মতে, ‘আপনি ভিন্ন একটি দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে নিজের দেশের সংস্কৃতিকে বিচার করতে পারবেন না। ইংল্যান্ডে আপনি যদি বিখ্যাত হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রথমে বিয়ে করতে হবে এবং আপনার একটা বাচ্চা থাকতে হবে। কিন্তু জ্যামাইকাতে এটা একেবারেই ভিন্ন। যদি আমার নিজের বাবা-মার কথাই বলি তাহলে আমার জন্মের ১১ বছর পর বিয়ে করে তারা।’ বোল্ট নিজেও একটি ফুটফুটে বাচ্চার জন্য মুখিয়ে আছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই সন্তান চাই। কিন্তু বুঝলেন, স্নায়ু চাপে ভুগছি। একটি ফুটফুটে বাচ্চার জন্য সত্যিই মুখিয়ে আছি। আমার বন্ধু এনজের বাচ্চা আছে। আমি সত্যিই এমন কিছু চাই। কিন্তু একটি শিশু অনেক সময়ের ব্যাপার। ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডটা ভিন্ন জগত। তাই আমি প্রস্তুত হতে চাই। পুরোপুরি প্রস্তুত। অবশ্য আমি যথেচ্ছভাবে বাচ্চা নিতে চাই না। আমার বাবার এই সমস্যা ছিল। আমি এই সমস্যাটা চাই না।’ আগামী বছর লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ। এটাই হতে পারে উসাইন বোল্টের শেষ টুর্নামেন্ট। এরপরই এ্যাথলেটকে বিদায় বলার ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছেন তিনি। অবসরের পর কি? বোল্টের জন্য এই প্রশ্নের উত্তরটা খুবই সহজ। কারণ ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নটা তার দীর্ঘদিনের। ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলতে চান তিনি। তাই প্রিমিয়ার লীগের ক্লাবটিতে যোগ দেয়ার আগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের সঙ্গে অনুশীলন করার কথাও পাকা হয়ে গেছে জ্যামাইকান কিংবদন্তির। এ প্রসঙ্গে বোল্ট বলেন, ‘বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কোচের সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়েছে। শীঘ্রই জার্মানিতে দলটির সঙ্গে কয়েকদিনের জন্য অনুশীলন শুরু করব। দেখা যাক কি হয়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে যদি খেলতে পারতাম তাহলে স্বপ্নটা সত্যি হতো। হ্যাঁ, সেটা হতো মহাকাব্যিক।’ বোল্ট আসলে জাত চ্যাম্পিয়ন। তাই ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডের পর ফুটবল মাঠেও আলো ছাড়ানোটা এখন তার কেবলই সময়ের ব্যাপার।
×