ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অসিদের লজ্জায় ডুবিয়ে সিরিজ জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১৬ নভেম্বর ২০১৬

অসিদের লজ্জায় ডুবিয়ে সিরিজ জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঠিক আড়াইদিনও নয়, বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়া দ্বিতীয়দিন বাদ দিলে হোবার্টের দ্বিতীয় টেস্টে দুইদিন আর এক সেশনেই হারল অস্ট্রেলিয়া। অথচ সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে স্বাগতিকদের সামনে জয়ের বিকল্প ছিল না। ইনিংস হার এড়াতে প্রয়োজন ছিল ১২০ রান। মঙ্গলবার চতুর্থদিন আর ৪০ রান যোগ করতেই বাকি ৮ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬১ ওভারের মধ্যে অলআউট হয় ১৬১ রানে। নিজেদের একমাত্র ইনিংসে ৩২৬ রান করে ইনিংস ও ৮০ রানের বিশাল জয় তুলে নিল প্রোটিয়ারা। অতিথি সেনাপতি ফ্যাফ ডুপ্লেসিসের চোখে এখন ৩-০’র স্বপ্ন। পার্থের প্রথম টেস্টে বড় হার, এখানে প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে গুটিয়ে যাওয়া- কুলিন অসিদের লজ্জার অনুভূতিটুকুও যেন নষ্ট হয়ে গেছে। টানা দুই হারে এক টেস্ট আগেই সিরিজ খোয়ানোর অভিব্যক্তি জানাতে গিয়ে বিস্মিত, স্তম্ভিত খোদ অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। ৩+৬= ৯ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন প্রোটিয়া পেসার কাইল এ্যাবট। ২৪ নবেম্বর এ্যাডিলেডে শুরু তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। ২ উইকেটে ১২১ রান নিয়ে চতুর্থদিন শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। উসমান খাজা ৫৬ ও স্মিথ ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৮ রান যোগ করে ব্যক্তিগত ৬৪তে থেমে যায় খাজার প্রতিরোধ। অধিনায়ক স্মিথ ৩১-এ। এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে স্বাগতিকদের ইনিংস। ২০ ওভারেরও কম সময় ৩২ রান তুলতে শেষ ৮ উইকেট হারায় অসিরা। সাত ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ম্যাচের নায়ক এ্যাবট ৬ আর তরুণ কাগিসো রাবাদার ৪ শিকারের পেস আগুনেই চূর্ণ অসিদের অহঙ্কার। শ্রীলঙ্কা সফর হয়ে টানা নিজেদের শেষ ৫ টেস্টে, দক্ষিন আফ্রিকা সফরে ৫ ওয়ানেডতে হারের পর স্মিথদের সামনে এখন মুখ লুকানোর জয়গাটুকুও নেই। পুরো টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের দৈর্ঘ্য ৯৩ ওভার, অর্থাৎ ৫৫৮টি বল। নিজেদের মাঠে এরচেয়ে কম বল খেলে হারের মাত্র তিনটি নজির আছে। যার মধ্যে সর্বশেষটি ৮৮ বছর আগে, সেই ১৯২৮ সালে। ব্র্যাডম্যান যুগের পর এই প্রথম এত কম বল খেলে হারল স্মিথরা। সব মিলিয়ে জন্মভূমিতে এটি অসিদের সবচেয়ে বাজে পাঁচ হারের একটি। ‘সত্যি বলতে আমি বিব্রত, লজ্জিত, স্তম্ভিত। আমরা অত্যন্ত বাজেভাবে উইকেট খুইয়েছি। আজ ৪০ রানে ৮টা, প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে ১০টা। এর কোন জবাব থাকতে পারে না। এখানে বসে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতেও আমার কষ্ট হচ্ছে। ভক্তদের কাছে ক্ষমা চাইছি। আমরা এখন কেবল শেষ ম্যাচটার দিকেই তাকাতে পারি।’ তবে কোচ ড্যারেন লেহম্যানের কোন দোষ দেখছেন না। সব দোষ নিজেরা মাথা পেতে নিয়েছেন। আত্মবিশ্বাস ফেরাতে ডেভিড ওয়ার্নার, জো বার্নস, এ্যাডাম ভোজেস, কালাম ফার্গুসন ও পিটার নেভিলদের শেফিল্ড শিল্ডে খেলানো হবে বলেও ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন স্মিথ। শ্রীলঙ্কা সফরের আগেও আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরে ছিল অস্ট্রেলিয়া। এখন তিনে। শেষ টেস্টেও হেরে গেলে কেবল হোয়াইটওয়াশই নয়, ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো র‌্যাঙ্কিংয়ে চারের নীচে (৫-এ) নেমে যাবে কুলিন অসিরা। স্মিথ যখন লজ্জায় মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজছেন তখন উচ্ছ্বাসিত সফরকারী সেনাপতি ডুপ্লেসিস। ইনজুরির জন্য নেই নিয়মিত অধিনায়ক ও বড় তারকা এবি ডি ভিলিয়ার্স। প্রথম টেস্টের পর ছিটকে গেছেন ডেল স্টেইনও। তবু এমন সাফল্য। ডুপ্লেসিস বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা দুই জয়ে সিরিজ জয় দারুণ আনন্দের। তবে আমরা এখানেই থামতে চাই না। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফল ৩-০ করতে চাই। এটাই সেরা সুযোগ।’
×