ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ডিকাবের আলোচনা অনুষ্ঠানে সুইডিশ রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য

লেখক-ব্লগার ও শিক্ষক হত্যাকাণ্ডে দোষীদের শনাক্তে সফল সরকার

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

লেখক-ব্লগার ও শিক্ষক হত্যাকাণ্ডে দোষীদের শনাক্তে সফল সরকার

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকায় নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত জোহান ফ্রিসেল বলেছেন, লেখক-ব্লগার ও শিক্ষক হত্যকা-ের পর দোষীদের শনাক্তে সরকার সফল হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশী পণ্যকে ব্রান্ড করতে ‘মেক ইন বাংলাদেশ’ কর্মসূচী নেয়ার জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আগামী ডিসেম্বরে ঢাকায় অভিবাসন সম্মেলন অভিবাসীদের স্বার্থরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন সুইডিশ রাষ্ট্রদূত। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট এ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ডিক্যাব টক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ডিক্যাব সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টির সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত জোহান ফ্রিসেল। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ডিক্যাব সাধারণ সম্পাদক পান্থ রহমান। ডিক্যাব টক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জোহান ফ্রিসেল বলেন, পহেলা জুলাই রাজধানীর গুলশানের জঙ্গী হামলা ছিল অপ্রত্যাশিত। এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের বিশেষ কোন প্রস্তুতিও ছিল না। তবে এই ঘটনার পরে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উল্লেখজনক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ব্লগার, লেখক, এলজিবিটি অধিকার কর্মী খুন হয়েছেন। তবে এসব হত্যাকা-ের পর সরকার দোষীদের শনাক্ত করতে সফল হয়েছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুইডিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে শিল্পের অগ্রগতি হচ্ছে। অনেক পণ্যই এখানে উৎপাদিত হচ্ছে। তাই দেশীয় পণ্যকে ব্যান্ড করার জন্য ভারতের মতো একটি কর্মসূচী নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। ভারতের মোদি সরকার মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ সরকারও ‘মেক ইন বাংলাদেশ’ কর্মসূচী গ্রহণ করতে পারে। জোহান ফ্রিসেল বলেন, অভিবাসন বিষয়ে আগামী ডিসেম্বরে ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অভিবাসন নিয়ে সকল দেশের সামনে একটি ইতিবাচক মনোভাব তৈরিতে এই সম্মেলন ভূমিকা রাখতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিন বছর আগে সুইডেনেও এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল বলে তিনি জানান। জোহান ফ্রিসেল বলেন, সুইডেনে বর্তমানে প্রায় ১৪-১৫ হাজার বাংলাদেশী নাগরিক রয়েছে। তাদের প্রায় ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশই বৈধভাবে বসবাস করছেন। তারা সুইডেনের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া সুইডেনে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণের সুযোগও রয়েছে বলে তিনি জানান। শিল্পায়নের সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিশুদ্ধ বায়ু রক্ষার বিষয়েও জোর দেন। এ বিষয়ে জোহান ফ্রিসেল বলেন, বাতাসে কার্বন গ্যাস কমাতে হবে। আশির দশকে চীনের সাংহাই ও বেজিংয়ে শিল্প উৎপাদনের সময় ব্যপক হারে কার্বন গ্যাস নিঃসরিত হয়েছিল। এই বিষয়টি মাথায় রেখে শিল্প কারখানায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনান্ড ট্রাম্পের বিজয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের দারিদ্র্য, নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে সহযোগিতামূলক কর্মসূচী রয়েছে। এসব কর্মসূচীতে কোন হেরফের হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। জোহান ফ্রিসেল বলেন, বাংলাদেশ ও সুইডেন যৌথভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর সমতা ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সুইডেন বিশেষভাবে নারীর সমতার ওপরে জোর দিয়ে আসছে। সুইডিশ সরকারের প্রায় সকল কর্মসূচীতেই নারীর সমতা নিশ্চিত করেই কর্মসূচী গ্রহণ করে থাকে বলে তিনি জানান। জোহান ফ্রিসেল বলেন, বাংলাদেশ ও সুইডেনের সম্পর্ক বহুমুখী ও বিস্তৃত। এই সম্পর্ক আগামীতে আরও গভীর হবে।
×