ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নিজের পারফর্মেন্স নিয়ে চিন্তিত নন সামি

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

নিজের পারফর্মেন্স নিয়ে চিন্তিত  নন সামি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অধিনায়ক হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০১২ ও ২০১৬ টি২০ বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন ড্যারেন সামি। এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরে রাজশাহী কিংসের নেতৃত্বে আছেন তিনি। তার দল রাজশাহী দুই ম্যাচে একটি করে জয়-পরাজয় দেখেছে। তবে ব্যাটে-বলে আহামরি কোন নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি ক্যারিবীয় অধিনায়ক। দুই ম্যাচে কোন উইকেট পাননি, তবে প্রথম ম্যাচে ২৩ বলে ৩ ছয়ে ৩১ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন। নিজের নৈপুণ্য যেমনই হোক, দল নিয়েই যত চিন্তা সামির। তিনি দাবি করেছেন যে কোন পর্যায়ে দলকে জেতানোর জন্যই নিজের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকে সবসময়। সেজন্য ব্যক্তিগত নৈপুণ্য নিয়ে কোন চিন্তা নেই তার। এমন দাবিই করলেন তিনি শনিবার মিরপুর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি মাঠে দলের অনুশীলন শেষে। এবার বিপিএলে নেতৃত্ব গুণের জন্যই রাজশাহী কিংসের অধিনায়কত্বের ভার চেপেছে সামির কাঁধে। দল প্রথম ম্যাচে জয়ের কাছাকাছি গিয়েও খুলনা টাইটান্সের কাছে ৩ রানে হেরে গিয়েছিল। তবে পরের ম্যাচেই সামির দল ঢাকা ডায়নামাইটসের বিরুদ্ধে জয় তুলে নেয় ৬ উইকেটে। উভয় ম্যাচে সামি ছিলেন অনুজ্জ্বল। মূল পরিচয় পেসার হলেও প্রথম ম্যাচে ১ ওভারে ১১ রান এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ২ ওভারে ১৮ রান দিয়ে কোন উইকেট পাননি তিনি। ব্যাট হাতে প্রথম ম্যাচে ২৩ বলে ৩১ করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ০ রানে অপরাজিত ছিলেন। নিজের বিষয়ে সামি বলেন, ‘আসলে ক্রিকেট হচ্ছে দলগত খেলা। যারা আছে সবাইকে কিছু না কিছু নৈপুণ্য দেখাতে হয়। আমি সেটা পারিনি। কিন্তু আমার কারও কাছে কিছু প্রমাণ করবার নেই। আমি দলের অধিনায়ক। যখনই আমি মাঠে নামি আমি আমার সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ দেয়ার চেষ্টা করি দলের জন্য। কিছুদিন হয়তো জিতে বের হয়ে আসি, কিছুদিন পারি না। কিন্তু আমি আমার ব্যক্তিগত নৈপুণ্য নিয়ে চিন্তিত নই। আমি জানি আমার মধ্যে কি করার সক্ষমতা আছে। আমি সে চেষ্টায় সবসময় সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করি। এটাই আমার মৌলিক গুণাবলী।’ সামির কথার প্রমাণ আন্তর্জাতিক টি২০ ক্রিকেটে তার অধীনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঈর্ষণীয় সাফল্য থেকেই পাওয়া যায়। প্রথমবার অধিনায়ক হয়েই ক্ষুদ্রতম ফরমেট টি২০ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসর বিশ্বকাপ শিরোপা দলকে জেতান সামি। ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ওই আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে আবার যেন ক্রিকেট পরাশক্তি হিসেবে পুনর্জাগরণ ঘটে ক্যারিবীয়দের। এর আগ পর্যন্ত দলের সব ফরমেটে নাজুক পরিস্থিতি একসময়ের ক্রিকেট পরাশক্তিদের ক্রমেই ঘোর অমানিশায় ডুবিয়ে দিচ্ছিল। দলকে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে এবং সংঘবদ্ধ রেখে ফলাফল নিজেদের পক্ষে আনার দিক বিবেচনায় ক্রিকেট পিপাসুদের বরাবরই মুগ্ধ করেছেন তিনি। তবে ২০১২ টি২০ বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে ছিলেন একেবারেই অনুজ্জ্বল। ৭ ম্যাচে ১৮ গড়ে মাত্র ৫৪ রান করেছিলেন ব্যাট হাতে। সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৬ রানের একটি ইনিংস ছিল। আর বল হাতে এ পেসার নিয়েছিলেন ৩২.৭৫ গড়ে মাত্র ৪ উইকেট। চলতি বছর ভারতের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয়বারের মতো টি২০ বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন সামি। এবার তার ব্যক্তিগত নৈপুণ্য ছিল আরও মলিন। ৬ ম্যাচে তেমন ব্যাট করার সুযোগ পাননি, করতে পেরেছেন ৮ রান। আর বল হাতে মাত্র ১টিই উইকেট ঝুলিতে ভরতে পেরেছিলেন। কিন্তু এরপরও তার অধীনে দল ছিল সংঘবদ্ধ এবং দলগতভাবেই নৈপুণ্য দেখিয়ে জয় তুলে নিয়েছে ক্যারিবীয়রা। সে কারণেই একমাত্র দল হিসেবে টি২০ বিশ্বকাপে দুইবার শিরোপা জয় করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ বিষয়ে সামি বলেন, ‘যে কোন ক্রিকেট ম্যাচেই জয়টাই গুরুত্বপূর্ণ। যে কোন পর্যায়ে আমি খেলি লক্ষ্য থাকে দল যেন জয়ী হয়ে আসতে পারে। সেটার জন্যই সবসময় আমার চিন্তা থাকে।’ অধিনায়ক হিসেবে যে কোন পরিস্থিতিতে হাসিখুশি থেকে ক্রিকেটারদের অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত রাখার চেষ্টা করেন। আর সেটাই একটি দলকে ভাল নৈপুণ্য দেখাতে সহায়ক হয়। এ কারণেই অধিনায়ক হিসেবে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৭ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ১৭ পরাজয়ের বিপরীতে জিতিয়েছেন ২৭ ম্যাচ (৩ ম্যাচে ফলাফল আসেনি)।
×