ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জিন শামীমার শরীরে আগুন লাগিয়েছে?

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

জিন শামীমার শরীরে আগুন লাগিয়েছে?

স্টাফ রিপোর্টার। জিন যদি ফতুল্লা থেকে গৃহবধূ শামীমা আক্তার রুনাকে রাতের অন্ধকারে অপহরণ করে বিমানবন্দরে এনে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়- সেটা কি বিশ্বাসযোগ্য? ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে এখন এমনই সব অবিশ্বাস্য তর্ক-বিতর্ক, প্রশ্ন-পাল্টা প্রশ্ন, যুক্তি-অযুক্তির লড়াই চলছে। বেডে শুয়ে অগ্নিযন্ত্রণায় ছটফট করছেন চল্লিশোর্ধ শামীমা। তিনিও বিলকুল বলছেন একই কথা, বদ জিন আমারে আগুন লাগাইছে। আমারে বাঁচান। তার মুখের এমন ভাষ্যে বিস্মিত চিকিৎসক নার্স ও অন্যরা। তাদের ভাষায়, শামীমা মানসিক ব্যাধিগ্রস্ত। তিনি রহস্যজনকভাবে দগ্ধ হয়ে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। দগ্ধ শামীমা প্রলাপ বকছেন, সঙ্গে থাকা বদ জিন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রাণে মেরে ফেলবে। এ রহস্যজনক ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ হোসেন রুনা জানান, শামীমা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশিপুর এলাকায় থাকতেন। শুক্রবার রাত দুইটার সময় তার সঙ্গে থাকা বদ জিন তাকে বিমানবন্দর রেললাইন বালুর মাঠ এলাকায় নিয়ে আসে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বিমানবন্দর গোলচত্বরে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। পরে দৌড়ে বিমানবন্দর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এসে পড়লে তাকে উদ্ধার করে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে। কিভাবে তার শরীরে আগুন লেগেছে তা জানা যায়নি। এ সম্পর্কে বিমানবন্দর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শামীমাকে হঠাৎ পুড়া শরীর নিয়ে রেললাইন ঘেষে হেঁটে পুলিশ ফাঁড়ির কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। পথচারীরা তাকে ফাঁড়িতে গিয়ে পুলিশের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন। তিনি ফাঁড়িতে গেলে পুলিশ তাকে একটি চাদর দিলে তিনি শরীরের উর্ধাংশ ঢাকেন। এরপর এস আই ফরহাদ হোসেন রুনা এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। তখন শামীমা বলেন, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম নিজ বাসায়। হঠাৎ গভীর রাতে লোহার জিন (বদ জিন) এসে আমাকে নিয়ে আসে এয়ারপোর্ট রেললাইনের কাছে। এখানে আগুন লাগিয়ে দিলে- আমি পুড়ে যাই। শামীমার এমন দাবি পুলিশের কাছেও হাস্যকর লাগছে। পুলিশের ধারণা- হয়ত মানসিক বিকারগ্রস্ত হওয়ায় রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় বিছানায় আগুন লেগে পুড়েছে তার শরীর। ফরহাদেরও কৌতূহলী প্রশ্নÑ তদন্ত না হয় করলাম। কিন্তু জিনের দেখা পাব কোথায়? তার ঠিকানাই বা কোথায়? শামীমার অভিযোগ সত্য হলে- তো জিনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ পার্থ শংকর পাল জানান, নারীর শরীরের শ্বাসনালীসহ ৪৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
×