ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রামীণফোনের ‘স্মার্ট সিটি হ্যাকাথন’ উদ্বোধনকালে বললেন মেয়র

ঢাকা উত্তরে আরও ৫ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা বসাব

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১২ নভেম্বর ২০১৬

ঢাকা উত্তরে আরও ৫ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা বসাব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন আরও পাঁচ হাজার সিসিটিভি (ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন) ক্যামেরা বসানোর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। নির্বাচনী ওয়াদা হিসেবে নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে এসব ক্যামেরা লাগানো হবে বলে জানান তিনি। শুক্রবার গুলশানে বেসরকারী মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের কর্পোরেট হেড অফিস জিপি হাউসে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘স্মার্ট সিটি হ্যাকাথন’ উদ্বোধনকালে মেয়র এসব কথা বলেন। মেগাসিটি ঢাকার বাস্তব সমস্যার ডিজিটাল সমাধানে প্রেনিয়ার ল্যাব ও গ্রামীণফোনের ইনোভেশন সেন্টার হোয়াইট বোর্ড ৩৬ ঘণ্টার এ হ্যাকাথনের আয়োজন করে। উদ্বোধনী বক্তব্যে আনিসুল হক বলেন, নির্বাচনের আগে জনগণের কাছে কথা দিয়েছিলাম জানমালের নিরাপত্তায় বিভিন্ন এলাকায় সিটিটিভি ক্যামেরা লাগাব। আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় পুলিশের সঙ্গে মিলে গুলশান বনানী তথা কূটনৈতিক এলাকায় ৬৫৬ সিসিটিভি লাগিয়েছি। আরও ৫০০ ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া আমরা আরও ৫ হাজার ক্যামেরা কেনার কথা ভাবছি এবং সেটাও ডিএনসিসি সীমানার বিভিন্ন এলাকায় লাগাব। ডিএনসিসি মেয়র অভিজাত এলাকায় সড়ক দখলের সমালোচনা করে বলেন, গরিব হকারকে তাড়াতে পারি, পুলিশ তাড়াতে পারে। বড়লোক হকার কিছু আছে যারা পুলিশকে তাড়াতে পারে। তারা গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকায় রাস্তা বানাতে গিয়ে প্রতিটি ব্লক কিছু না কিছু জমি দখল করে আছে। এ সময় তিনি যাতায়াত সমস্যা নিরসনে ঢাকায় ৫ হাজার নতুন বাস নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান। তিনি বলেন, সব বাস কোম্পানিকে একত্রে ছয়টি কোম্পানি করে ৬ রঙের বাস করার চিন্তা-ভাবনা আছে। এতে বাস ব্যবস্থাপনা সহজ হবে। বর্তমানে একেক কোম্পানির বাস রাস্তায় এক একেকবার থামায়। ফলে রাস্তায় যানজট তৈরি হচ্ছে। অনেক সময় আমার মা-বোনরা বাসে উঠতেই পারছেন না। এসব সমস্যা নিরসনের জন্য ৫শ’ কোম্পানির ৫ হাজার বাস ছয়টি কোম্পানির আওতায় নিয়ে আসা হবে। ফলে রাস্তায় প্রতিযোগিতা কমে যাবে। কারণ কোম্পানিগুলো নিজ নিজ লভ্যাংশ পাবে। নাগরিক সেবায় বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ের অভাব পূরণে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, দায়িত্ব নেয়ার পর উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকার রাস্তাঘাট পরিষ্কার করা হচ্ছে। মেয়র বলেন, পরিবারের কোন সদস্য বিপদে পড়লে মাত্র ৫ সেকেন্ডেই সে বার্তা পৌঁছে যাবে অভিভাবকদের কাছে। ‘নগর’ নামে একটি এ্যাপস সে বার্তা বাহক, যা তৈরি করেছে ডিএনসিসি। তিনি বলেন, এ্যাপের বিশেষ ‘সিকিউরিটি অপশন’ সহজেই কাজটি করে দেবে। এ্যাপসটি ব্যবহারের মাধ্যমে নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা আরও বৃদ্ধি পাবে। ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমাদের দেশের মেধাবী সন্তানরা কাজ করছেন বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে। মাইক্রোসফটে কর্মরত মেধাবী তরুণ জামিলের মাধ্যমে আমরা ‘নগর’ এ্যাপটি তৈরি করি। এর মাধ্যমে যে কেউ ইচ্ছে করলে নগরের যেকোন সমস্যা আমাদের ছবি তুলে পাঠিয়ে দিতে পারেন। সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব। এ্যাপসটিতে যে বিশেষ সিকিউরিটি অপশন রাখা হয়েছে তা বিশ্বের কোন এ্যাপসে নেই। এর কল্যাণে যে কেউ বিপদে পড়লে তা তার অভিভাবককে জানাতে পারবেন মাত্র ৫ সেকেন্ডে। এ্যাপে ৫ সেকেন্ড চেপে ধরলেই সঙ্কেত পৌঁছে যাবে। শুধু তাই নয়, পাশপাশি বিপদ সঙ্কেতটি চলে যাবে পুলিশ কন্ট্রোল রুমেও। ঢাকাকে স্মার্টসিটি করে গড়ে তোলা খুব সহজ কাজ নয় মন্তব্য করে আনিসুল হক বলেন, মেয়র হওয়ার আগে অনেক কমিটমেন্ট করেছিলাম। ইতোমধ্যে অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে। আগামী ছয় মাস পর শহরের চিত্র আরও পাল্টে যাবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান জানান, প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় ৩০ দল অংশ নিচ্ছে। বিজয়ী দল হোয়াইট বোর্ডের সঙ্গে জিপির ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে কাজ করার সুযোগ পাবে। এছাড়া তাদের দেয়া ধারণা বাণিজ্যিকভাবে উপস্থাপনের জন্য একটি বিশেষ ডেমো ডে’র আয়োজন করা হবে। এছাড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দলকে ২৫ লাখ টাকা অনুদান দিতে স্পাইডার ডিজিটাল (দুবাই) এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।
×