ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়ায় দুই সপ্তাহ কন্ডিশনিং ক্যাম্প, নতুন মুখ তানভির ও শান্ত, বাদ রুবেল, আল আমিন, নাসির ও রাব্বি

নিউজিল্যান্ড সফরের প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে টাইগারদের

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ৬ নভেম্বর ২০১৬

নিউজিল্যান্ড সফরের প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে টাইগারদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একদিকে চলছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল টি২০)। আরেকদিকে নিউজিল্যান্ড সফরের বাজনা বেজে গেছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা শুরু হবে আগামী মাসে, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে। দেড় মাস আগেই সেই সফরের দল দেয়া হয়েছে। যদিও বলা হচ্ছে, প্রাথমিক দল। তবে প্রাথমিক দলের ২২ সদস্যের ২০ জনই যাবেন নিউজিল্যান্ডে। আর ২২ জন আবার অস্ট্রেলিয়া হতে যাওয়া কন্ডিশনিং ক্যাম্পে থাকবেন। ২২ সদস্যের ঘোষিত দলে তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, সাব্বির রহমান রুম্মন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদী হাসান মিরাজ, শুভাগত হোম চৌধুরী, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাইজুল ইসলাম, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শফিউল ইসলাম, শুভাশীষ রায়, মোহাম্মদ শহীদ, এবাদত হোসেন ও লেগ স্পিনার তানভির হায়দার রয়েছেন। স্ট্যান্ডবাই ক্রিকেটার হিসেবে শাহরিয়ার নাফীস, আব্দুল মজিদ, লিটন কুমার দাস, মোশাররফ হোসেন রুবেল, কামরুল ইসলাম রাব্বি, আল আমিন হোসেন, আলাউদ্দিন বাবু, নাসির হোসেন ও রুবেল হোসেন রয়েছেন। কাঁধের অস্ত্রোপচারের পর আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে পারেননি ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজ। এমনকি বিপিএলেও খেলতে পারছেন না। তবে স্বস্তির বিষয় হলো, পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় দুর্দান্ত উন্নতির লক্ষণ দেখা গেছে। আর তাতে করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও খেলতে পারবেন মুস্তাফিজ। নিউজিল্যান্ড সফরে মুস্তাফিজ যেতে পারেন। এমন সম্ভাবনাই ছিল। সেই সম্ভাবনা ঠিকও হলো। তবে প্রাথমিক দলে তিনজন নতুন মুখও যুক্ত হলো। পেসার হান্টের আবিষ্কার পেসার এবাদত হোসেন, আরেক পেসার নাজমুল হোসেন শান্ত ও লেগ স্পিনার তানভির হায়দার নতুন মুখ। এর মধ্যে এবাদত ও শান্তকে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়া হলেও নিউজিল্যান্ড সফরে থাকবেন না। এমনকি এবাদতকে এখনই বাদ দেয়া হতে পারে। কারণ, তার ইনজুরি আছে। শান্তকে ভবিষ্যত জাতীয় দলের ক্রিকেটার বিবেচনায় দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। অস্ট্রেলিয়ায় ক্যাম্পে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যেন পেস আক্রমণের বিপক্ষে নেটে ব্যাটিং অনুশীলনটা ভালভাবে করতে পারেন, সেটাও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এজন্যও এবাদত ও শান্তকে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। তবে লেগ স্পিনার তানভিরকে ভালভাবেই জাতীয় দলে ভাবা হচ্ছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রামে প্রস্তুতি ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে ঝলক দেখান তানভির। এরপরই তাকে জাতীয় দলের জন্য ভাবা হচ্ছে। তবে জাতীয় দলের বিবেচনায় থাকছেন না পেসার রুবেল হোসেন, আল আমিন ও রাব্বি। তিনজনই পেস আক্রমণের ভরসা হতে না পারাতেই, ফর্মহীনতায় ভোগাতেই প্রাথমিক দলেও স্থান পাননি। ইনজুরি কাটিয়ে দলে যোগ হয়েছেন মোহাম্মদ শহীদ। সেই সঙ্গে নাসিরকেও রাখা হয়নি। নিচের দিকের ব্যাটসম্যান হিসেবে এবং অফ স্পিনার হিসেবে নাসিরের চেয়ে ভাল অপশন আছে। সাব্বির রহমান রুম্মন ও শুভাগত হোম আছেন। আর তাই নাসিরকে বিবেচনা করা হয়নি। নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার আগে দুই সপ্তাহ অস্ট্রেলিয়ায় কন্ডিশনিং ক্যাম্প হবে। সিডনিতে হবে ক্যাম্প। সেখানে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে বাংলাদেশ দল। বিপিএল শেষে দুই ধাপে দলের ক্রিকেটাররা অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা হবেন। যারা ফাইনালে উঠবেন না, তারা ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছাবেন। আর যারা ফাইনালে খেলবেন, তারা ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ছাড়বেন। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ১৪ ও ১৬ ডিসেম্বর দুটি টি২০ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচটি বিগ ব্যাশ ফ্র্যাঞ্চাইজি সিডনি সিক্সার্সের বিপক্ষে খেলবে। দ্বিতীয় ম্যাচটি সিডনি থান্ডার্সের বিপক্ষে হবে। দুটি ম্যাচই হবে সিডনির ব্ল্যাকটাউনে। ম্যাচ দুটি শেষে আরও কয়েকটা দিন সিডনিতে ক্যাম্প করবে বাংলাদেশ দল। এরপর নিউজিল্যান্ডে উড়াল দেবে। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে কিউইদের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে, তিনটি টি২০ ও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। প্রথম ওয়ানডে দিয়ে ২৬ ডিসেম্বর ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে। এরপর ২৯ ও ৩১ ডিসেম্বর যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। ওয়ানডে সিরিজ শেষে ৩, ৬ ও ৮ জানুয়ারি যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি২০ ম্যাচ হবে। নির্ধারিত ওভারের সিরিজ চলার সময় এবাদত ও শান্ত বাদে বাকি ২০ ক্রিকেটার দলের সঙ্গেই থাকবেন। নির্ধারিত ওভারের সিরিজ শেষে ১২ জানুয়ারি প্রথম ও ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টটি শুরু হবে। টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে টেস্টের চূড়ান্ত দলই শুধু থাকবে নিউজিল্যান্ডে। বাকিরা দেশে ফিরে আসবেন। এ সিরিজের জন্য শুক্রবার রাতে প্রাথমিক দল দেয়া হয়েছে। অবশ্য বিপিএলে প্রাথমিক দলের ক্রিকেটারদের দিকে নজর রাখা হবে। নিয়মিত ক্রিকেটারদের বাইরে যদি কেউ খুব খারাপ করেন, তাকে বাদ দেয়ার সম্ভাবনাও থাকবে। তা যদি না হয়, সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে ঝালাই করা হবে। যদি সেখানে দেখা হয়, নিউজিল্যান্ডে জাতীয় দলের জন্য মানানসই নয়; তাহলে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে। এ বিষয়গুলো নিয়ে নির্বাচক কমিটি ও টিম ম্যানেজমেন্টের মধ্যে আলোচনা চলছে। সিদ্ধান্ত দ্রুতই হয়ে যাবে। তবে অস্ট্রেলিয়ায় ২২ ক্রিকেটার যাবে। সেখান থেকে শুধু চূড়ান্ত দলের ১৫ ক্রিকেটার নন, ২০ ক্রিকেটার যাবেন নিউজিল্যান্ডে। সাধারণত একটি সফরে চূড়ান্ত দলই যায়। সেই দলে ১৫ ক্রিকেটার থাকেন। কিন্তু এবার সফরটি নিউজিল্যান্ডের মতো কঠিন কন্ডিশনে। বাংলাদেশ দলও জয়ের ধারাবাহিকতার মধ্যে আছে। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে কন্ডিশন জয়টাই আগে জরুরী হয়ে পড়েছে। আর তাই অস্ট্রেলিয়ায় আগে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করে, এরপর নিউজিল্যান্ডে খেলতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে, টি২০ ও টেস্ট দলের সবাইকে একসঙ্গে রাখার সিদ্ধান্তও হয়েছে। ওয়ানডে ও টি২০ দলের ক্রিকেটাররা যখন খেলবেন, তখন টেস্ট দলের ক্রিকেটাররা যেন কন্ডিশনের সঙ্গে ভালভাবে মিশে যেতে পারেন, সেই ভাবনা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত। আর তাই প্রাথমিক দলের ২২ ক্রিকেটার থেকে নিউজিল্যান্ডে দলের সঙ্গে ২০ ক্রিকেটারকে রাখার সিদ্ধান্ত আপাতত চূড়ান্ত।
×