ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় মা ইলিশ শিকার নিষেধাজ্ঞা শতভাগ সফল

এখনও চাল পায়নি ২৯৫০ জেলে পরিবার

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ২ নভেম্বর ২০১৬

এখনও চাল পায়নি ২৯৫০ জেলে পরিবার

মেজবাহউদ্দিন মাননু, কলাপাড়া ॥ ইলিশের প্রজননকালীন নিষেধাজ্ঞা এ বছর দীর্ঘ সময় টানা ২২ দিন সত্ত্বেও শতভাগ সফলভাবে পালিত হয়েছে। উপকূলীয় কলাপাড়াসহ সাগরবক্ষে কিংবা নদীতে একজন জেলেও ইলিশ শিকার করেনি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হচ্ছে আজ। জেলেদের চলছে ফের সাগরে ইলিশ শিকারের প্রস্তুতি। অথচ এখন পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞাকালে পরিবারপ্রতি ২০ কেজি চালের সরকারী খাদ্য সহায়তা অর্ধেক জেলে পরিবার পায়নি। এখনও খাদ্য গুদাম থেকে চাল উত্তোলন করেনি চাকামইয়া, লতাচাপলী এবং ধানখালী ইউনিয়নের জনপ্রনিধিরা। এ তিন ইউনিয়নের সুবিধাভোগীর সংখ্যা ২৯৫০ জেলে পরিবার। বাকি ইউনিয়নের চাল উত্তোলন করা হলেও বিতরণ করা হয়নি অধিকাংশ ইউনিয়নে। ফলে এখন এই স্বল্প সময় জেলেরা সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিবেন না চাল সংগ্রহ করবেন, এ নিয়ে পড়েছেন দোদুল্যমান শঙ্কায়। স্বেচ্ছায় ২২ দিন কর্মবিমুখ থেকেছেন জেলেরা। ইলিশ শিকারে তাদের নিরুৎসাহিত করেছেন ট্রলার মালিক, আড়তমালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। উল্টো জেলেসহ এ পেশা সংশ্লিষ্ট মানষেরা নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়কে পার করেছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। করেছেন ইলিশের প্রজনন উৎসব। তারপরও জনপ্রতিনিধি কিংবা সংশ্লিষ্ট সরকারী দফতরের ঢিলেমির কারণে শেষ সময় পর্যন্ত জেলেদের কাছে পৌঁছেনি খাদ্য সহায়তার চাল। গত ১২ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা শুরুর দিন থেকে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, নৌপুলিশ ও থানা পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা চোখে পড়লেও জেলেরা নিজেদের থেকেই অবরোধ পালনে আন্তরিক ছিল। প্রশাসনের সব স্তরের কর্মকর্তারাও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এমনকি কলাপাড়া উপজেলার সাগর-নদী কিংবা অভয়াশ্রম এলাকা ছিল মা ইলিশের জন্য শতভাগ নিরাপদ। এ বছরের চিত্রটিই ছিল ভিন্নতর। ইলিশের বাম্পার আহরণের কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে বলে সকলের অভিমত। প্রজননকালীন নিষেধাজ্ঞার সময় কর্মবিমুখ জেলেদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২০ কেজি করে চাল দেয়ার সরকারী নির্দেশনা রয়েছে। জেলেদের সহজ-সরল স্বীকারোক্তি সরকার দেয়, আমরা যথাসময় ঠিকমতো পাই না। ওজনে দেয়া হয় কম। পশ্চিম চাপলী গ্রামের ২৫ এবং চরগঙ্গামতির দুই জেলে জানান, তাদের গত মে-জুন-২০১৬ মাসের ৮০ কেজি করে চাল লোপাট করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আজ পর্যন্ত তারা ওই চাল পায়নি। আর এখন অবরোধকালীন চাল পাবেন কি না তা জানেন না। ভোলায় সবার ভাগ্যে জুটবে না চাল নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা থেকে জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে ২২ দিনের জন্য সব নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষে কাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে মাছ ধরা। ভোলার জেলেরা পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এ অভিযানের ২২ দিন পার হতে চললেও ভোলার জেলেরা এখনও পুনর্বাসনের ২০ কেজি করে সরকারী চাল পায়নি। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে চাল দেয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু দেরিতে হলেও বরাদ্দ কমা আশায় প্রায় ৩২ হাজার জেলের ভাগ্যে পুনর্বাসনের চাল জুটবে না। এদিকে চাল না পেয়ে বেকার জেলেরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে গোপনে মাছ ধরতে নামে। অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে জেল খাটছে।
×