ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

তবে চিঠিতে কি থাকছে এখনই বলা যাবে না ॥ আইনমন্ত্রী

সুপ্রীমকোর্ট এলাকা থেকে আইসিটি সরানোর চিঠির জবাব শীঘ্রই

প্রকাশিত: ০৪:১০, ৩০ অক্টোবর ২০১৬

সুপ্রীমকোর্ট এলাকা থেকে আইসিটি সরানোর চিঠির জবাব শীঘ্রই

বিকাশ দত্ত ॥ সুপ্রীমকোর্ট এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরানোর বিষয়ে সুপ্রীমকোর্র্ট প্রশাসনের দেয়া চিঠির জবাব শীঘ্রই দিচ্ছে আইন মন্ত্রণালয়। আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক জনকন্ঠকে বলেছেন, সুপ্রীমকোর্ট প্রশাসন যে চিঠি দিয়েছে তার জবাব দেবেন। তবে চিঠিতে কি থাকছে তা এখনই বলা যাবে না। শুধু বলেছেন, একটু অপেক্ষা করুন সবই দেখতে পাবেন। এর আগে বুধবার এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জেলায় জেলায় স্থাপনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি আইন মন্ত্রণালয়। সুপ্রীমকোর্ট এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরানোর বিষয়ে সুপ্রীমকোর্র্ট প্রশাসনের দেয়া চিঠির জবাব দেয়া হবে। এই বিচার জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। অন্যদিকে এর আগে ৮টি সংগঠনের পক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, একাত্তরের মুিক্তযুদ্ধের সময় যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল তাদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালটি পুরাতন হাইকোর্র্ট ভবন থেকে সরানো যাবে না। ট্রাইব্যুনাল ওখানেই থাকবে এবং অবশিষ্ট যে সমস্ত মানবতাবিরোধী অপরাধী আছে তাদের বিচার হবে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। তারা বলেছেন, একদিন বিচার শেষে জার্মানি ও জাপানের মতো পুরাতন হাইকোর্ট ভবনও গণহত্যাকারী বিচারের জাদুঘরে পরিণত করা হবে। ট্রাইব্যুনালের সরানোর বিপক্ষে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি,বার ক্উান্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ ৮টি সংগঠন এর বিপক্ষে থাকলেও এ্যাটর্নি জেনারেল সরানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মানবতাবিরোধী শীর্ষ অপরাধীদের বিচারের পর ট্রাইব্যুনালে জনবল কমানোর পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছেন। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ট্রাইব্যুনাল গঠনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়কে অনুমতি দিয়েছিলেন। ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর এ পর্যন্ত ২৬টি মামলায় ৫২ জনকে বিভিন্ন দ- প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যুদ-, এক জনের যাবজ্জীবন, একজনের ৯০ বছরের কারাদ- এবং ২৫ জনকে আমৃত্যু কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে আপীল বিভাগে ৭টি মামলা চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে। ৬ জনের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে। বর্তমানে আপীল বিভাগে ১৭ জনের মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে ২৪টি মামলা বিভিন্ন পর্যায়ে বিচারাধীন রয়েছে। এ সমস্ত মামলায় আসামির সংখ্যা প্রায় ৭০ জন। এদের মধ্যে একটি বড় অংশ পলাতক রয়েছে। ৩২২৯ আসামির বিরুদ্ধে সর্বমোট ৫৮৫টি অভিযোগ ্আসায় মামলার গুরুত্ব অনুধাবন করে পর্যায়ক্রমে নতুন মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। ২৪ অক্টোবর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মানবতাবিরোধী শীর্ষ অপরাধীদের বিচারের পর ট্রাইব্যুনালে জনবল কমানোর পক্ষে মতামত ব্যক্ত করছেন। তিনি নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন ‘ট্রাইব্যুনালে যত লোকবল আছে, তা রাখার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। তদন্তের ব্যাপারেও না, প্রসিকিউশনের ব্যাপারেও না। এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, গত ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বলা হয়েছে যদি একজনও যুদ্ধাপরাধী থাকে তার বিচার অব্যাহত থাকবে। সেই বিচার বর্তমান অবস্থায় হবে নাকি জেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত । সরকার যদি মনে করে এ বিচার জেলা পর্যায়ে নিয়ে যাবে, তবে অন্য কথা। এছাড়া সরকার যদি মনে করে হাইকোর্টের বিচারপতিদের এখান থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পর্যায়ের বিচারকদের নিয়োগ করতে পারেন। উল্লেখ্য, ১৮ আগস্ট সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে , বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টে বর্তমানে পর্যাপ্ত স্থানাভাবে বিচারপতিগণের প্রয়োজনীয় চেম্বার ও এজলাসের ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না।
×