ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাক্ষী মিন্টুর জবানবন্দী

আমীর রাজাকাররা আমার দুই ভাইসহ শতাধিক লোককে হত্যা করে ॥ যুদ্ধাপরাধী বিচার

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৪ অক্টোবর ২০১৬

আমীর রাজাকাররা আমার দুই ভাইসহ শতাধিক লোককে হত্যা করে ॥ যুদ্ধাপরাধী বিচার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নোয়াখালীর সুধারামপুরের পাঁচ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দ্বিতীয় সাক্ষী জাহিদ হোসেন মিন্টু জবানবন্দী দিয়েছেন। জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন, রাজাকার আমীর হোসেনসহ অন্যান্য রাজকাররা আমার দুই ভাই আলী হোসেন, আলী হায়দারসহ শতাধিক লোককে হত্যা করেছে। জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের জেরার জন্য আজ সোমবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গাইবান্ধার আব্দুল জব্বার ম-লসহ ছয় রাজাকারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৮ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছে ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এ মামলায় গ্রেফতার রঞ্জু মিয়াকে সেফহোমে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম জাহিদ হোসেন মিন্টু। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬০ বছর। আমার ঠিকানাÑ গ্রাম শ্রীপুর, থানা-সুধারাম, জেলা-নোয়াখালী। একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি আহমেদীয়া হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিলাম। বর্তমানে আমি ব্যবসা করি। ১৯৭১ সালের ১৫ জুন দুপুর আনুমানিক দুইটা-আড়াইটার দিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী স্থানীয় রাজাকার আমাদের শ্রীপুর ও সোনাপুর গ্রাম ও আশপাশের এলাকায় আক্রমণ করে। স্থানীয় রাজাকারদের মধ্যে আসামি আবুল কালাম ওরফে এফএম মনসুর, মোঃ ইউসুফ, জয়নাল আবেদীন, আবুল কুদ্দুসসহ অন্যান্য রাজাকার। পাকিস্তানী আর্মি ও রাজাকাররা প্রথমে মাইজদী ও সোনাপুর প্রধান রাস্তায় এসে আহমেদীয়া স্কুলের মোড়ে নামে। তারপর পাকিস্তানী আর্মি ও রাজাকাররা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্বদিকে আক্রমণ করে। তারা প্রথমে এসে আমাদের কাছারি ঘরে আক্রমণ করে আমার বড় দুই ভাই আলী হোসেন, আলী হায়দার ও আলী হায়দারের বন্ধু মঈনউদ্দিনকে ঘর থেকে বের করে এনে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। সে সময় আমার দুই ভাই ও ভাইয়ের বন্ধু মঈনউদ্দিন তাদের কর্মস্থল থেকে আমাদের বাড়িতে এসে অবস্থান করছিল। ওই ৫ রাজাকার আমার দুই ভাই ও ভাইয়ের বন্ধুসহ শতাধিক লোককে হত্যা করে। গাইবান্ধার রাজাকার ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গাইবান্ধার আব্দুল জব্বার ম-লসহ ছয় আসামির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৮ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছে ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এ মামলায় গ্রেফতার রঞ্জু মিয়াকে সেফহোমে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। পলাতক রাজাকাররা হলোÑ আব্দুল জব্বার ম-ল, জাফিজার রহমান ওরফে খোকা, আব্দুল ওয়াহেদ ম-ল, মমতাজ আলী ব্যাপারী ও আজগর হোসেন খান। প্রসিকিউশন শুনানিতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুই মাস সময় চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদন শুনানি করে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৮ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন। গাইবান্ধা জেলার নান্দিনা ও ফুলবাড়ি গ্রামের ওই আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা, হত্যা ও ৫০ বাড়িতে লুটপাট করা এবং খুঁজে খুঁজে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।
×