ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কমিটিতে নতুন যারা;###;প্রেসিডিয়াম : লে. কর্নেল ফারুক খান, ;###;ড. আব্দুর রাজ্জাক, নুরুল ইসলাম নাহিদ, রমেশ চন্দ্র সেন, আব্দুল মান্নান খান ও পীযূষ ভট্টাচার্য ;###;যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক : আব্দুর রহমান

শেখ হাসিনা কাদের ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৪ অক্টোবর ২০১৬

শেখ হাসিনা  কাদের ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ অব্যাহতি চেয়েও পেলেন না ৩৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বরং হাজার হাজার কাউন্সিলরের অনড় দাবি ও পূর্ণ সমর্থনে সর্বসম্মতিক্রমে অষ্টমবারের মতো সভাপতি পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুর এই জ্যেষ্ঠ কন্যা। অন্যদিকে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শেখ হাসিনার নাম সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব করেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও সমর্থন করেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেন সদ্যবিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ আর সমর্থন করেন জাহাঙ্গীর কবীর নানক। এই দুই পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় দলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে নির্বাচিত ঘোষণা করলে মিলনায়তনে উপস্থিত সাড়ে ৬ সহস্রাধিক কাউন্সিলর উল্লাসে ফেটে পড়েন। অষ্টমবারের মতো সভাপতির দায়িত্ব প্রদানে কাউন্সিলরসহ দলের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা যে গুরুত্বদায়িত্ব আমার ওপর আবারও অর্পণ করলেন, তা আমি বহন করব। ৩৫ বছর একটা দলের সভাপতি, তবে একটা সময় আমাকে বিদায় নিতে হবে। আর এখন থেকেই আগামী নির্বাচনের জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে। তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে জয়ী হয়ে যাতে দেশবাসীর সেবা করতে পারি সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাব। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে তিনি সবার সহযোগিতাও কামনা করেন। এরপর তিনি দলের সভাপতিম-লীর সদস্য, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষ পদে নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে কাউন্সিলররা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর সর্বসম্মত দায়িত্ব অর্পণ করেন। সম্মেলনস্থল থেকে বের হয়ে গাড়িতে ওঠার সময় অতি স্নেহের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে জড়িয়ে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশরাফও এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে তাঁর দোয়া কামনা করেন। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক জাতীয় কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। দুপুর একটা পর্যন্ত চলার পর দেড় ঘণ্টার বিরতি দিয়ে ৩টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশ থেকে আগত ৪১ জেলার নেতার বক্তব্য শুনেন প্রধানমন্ত্রী। এই দীর্ঘ সময় সঞ্চালকের ভূমিকাতেও ছিলেন তিনি। এরপর শুরু হয় কাউন্সিল অধিবেশন। প্রথমে দলের ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্র এবং দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব কাউন্সিলে সর্বসম্মতক্রমে পাস হয়। এরপর সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আবারও সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চাইলে পুরো মিলনায়তনের চিত্র পাল্টে যায়। সব কাউন্সিলর দাঁড়িয়ে ‘নো নো’ বলতে থাকলে এবং সেøাগান দিতে থাকলে প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত প্রবল দাবির মুখে হার মানতে বাধ্য হন। বিদায়ী বক্তব্য প্রদান শেষে বিকেল ৫টা নাগাদ পূর্বের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করে মঞ্চ ছেড়ে কাউন্সিলরদের আসনে গিয়ে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, অন্য দুই নির্বাচন কমিশনার প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও সাবেক সচিব রাশেদুল হাসান মঞ্চে উঠে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করেন। টানটান উত্তেজনার মাঝে প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রথমে সভাপতি পদে নির্বাচন দেন। সভাপতি পদে নাম প্রস্তাব ও সমর্থনের জন্য কাউন্সিলরদের আহ্বান জানালে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠতম সভাপতিম-লীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মঞ্চে উঠে ওই পদে অষ্টমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন। তা সমর্থন করেন সভাপতিম-লীর আরেক সদস্য গৃহায়নমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার পরপর তিনবার এ পদে আর কোন প্রস্তাব আছে কি-না, তা জানতে চান। এ সময় হাজার হাজার কাউন্সিলর ‘কেউ নেই, কেউ নেই’ বলে সমস্বরে বলতে থাকেন। এ পদে আর কোন নাম প্রস্তাব না আসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করেন ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। এ সময় তুমুল করতালি আর সেøাগানে সেøাগানে পুরো মিলনায়তন এবং বাইরে থাকা নেতাকর্মীদের উল্লাসে মুখরিত হয়ে উঠে। এরপরই শুরু হয় সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনের প্রক্রিয়া। সম্মেলনের কয়েক দিন আগে থেকে যে গুঞ্জন চলছি, তাই সত্যে পরিণত হয় এ নির্বাচনে। বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার যে স্বপ্ন শেখ হাসিনা দেখছেন, সেই লক্ষ্য পূরণে তাঁর সঙ্গী কে হবেনÑ এ নিয়ে টানটান উত্তেজনার মধ্যেই দলটির বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নিজেই মঞ্চে উঠে নতুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নাম ঘোষণা করেন। আর এ প্রস্তাব সমর্থন করেন যুগ্মসাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ পদেও আর কোন নামের প্রস্তাব না আসায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে ওবায়দুল কাদেরকে নির্বাচিত ঘোষণা করলে তুমুল করতালির মাধ্যমে তাঁকেও অভিনন্দন জানান কাউন্সিলররা। ৬৪ বছর বয়সী ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হয়ে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করেন। এরপর জড়িয়ে ধরেন বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে। আশরাফের সঙ্গে আলিঙ্গন শেষে সভাপতিম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনকেও পা ছুঁয়ে সালাম করেন নবনির্বাচিত এই সাধারণ সম্পাদক। নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষে নির্বাচন কমিশন মঞ্চ ত্যাগ করার পর নতুন সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মঞ্চে উঠেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী আগামী তিন বছরের জন্য কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতিম-লীর ১৯টি পদের মধ্যে ১৬টি এবং ৪টি যুগ্মসাধারণ সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষ পদের নাম ঘোষণা করেন। বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশরাফুলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, ও আমার ছোট ভাইয়ের মতো। শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে সে সংগঠন ও দেশকে ভালবেসেছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেছে, এজন্য ধন্যবাদ জানাই। আশা করি সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে।’ নতুন সাধারণ সম্পাদক প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রনেতা থেকে সে এ পর্যন্ত ওঠে এসেছে। সে সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় দল আরও শক্তিশালী হবে বলে আমি মনে করি। সভাপতিম-লীর সদস্য হলেন যারা ॥ নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর কাউন্সিলররা সর্বসম্মতিক্রমে পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ গঠনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেন। সভাপতি পদে পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার পর আগামী তিন বছরের জন্য ১৯টি সভাপতিম-লীর সদস্য পদের মধ্যে ১৪টি নাম ঘোষণা করেন। বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্থান হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই পরিষদে। পুরনোদের মধ্যে যারা সভাপতিম-লীর সদস্য পদে বহাল থাকলেন তার হলেন- সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্লাহ, এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এই গুরুত্বপূর্ণ পরিষদে পদোন্নতি পেয়েছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, এ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান। দুজন নতুন মুখ ঠাকুরগাঁওয়ের সাবেকমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন ও যশোর থেকে পীযুষ ভট্টাচার্য সভাপতিম-লীতে স্থান পেয়েছে। পুরনো যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি ও জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে নতুন যোগ হয়েছেন বিদায়ী কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান। কোষাধ্যক্ষ পদে এইচ এন আশিকুর রহমানই থাকছেন নতুন কমিটিতে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন সাধারণ সম্পাদক ও বিদায়ী সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে খুব শীঘ্রই নতুন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। সর্বসম্মতিক্রমে দলের ঘোষণাপত্র অনুমোদন ॥ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান ও অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতায় আসার প্রক্রিয়াকে নাকচ করে দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রণীত দলীয় ঘোষণাপত্র কাউন্সিল অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। ঘোষণাপত্র উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ও সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম উত্থাপনকালে বলেন, ৪৬ পৃষ্ঠার এই ঘোষণাপত্রে আগামী দিনে আমরা কী ধরনের বাংলাদেশ দেখতে চাই ও তা বাস্তবায়নে করণীয় পদক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে সংশোধিত এই ঘোষণাপত্রে। এতে অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়া নাকচ করে দিয়ে বলা হয়েছে, বুলেট নয়, ব্যালটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে। জনগণের ভোটে সরকার পরিবর্তন ছাড়া অন্য কোন উপায়ে ক্ষমতায় আসার আর সুযোগ নেই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলমান থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বিচার অব্যাহত রাখার ঘোষণা রয়েছে ঘোষণাপত্রে। একজন যুদ্ধাপরাধী অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত এ বিচার চলতে থাকবে, কোন শক্তিই তা বন্ধ করতে পারবে না। সংগঠনে দলাদলি, গ্রুপিং বা বিভেদ সৃষ্টি না করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। গঠনতন্ত্রে সংযোজিত হয়েছে জঙ্গীবাদমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের কথা ॥ কাউন্সিল অধিবেশনে গঠনতন্ত্র উপ-পরিষদের আহ্বায়ক ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি দলের সংশোধিত গঠনতন্ত্রের খসড়া উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। খসড়া উত্থাপনকালে ড. রাজ্জাক বলেন, গঠনতন্ত্রে জঙ্গীবাদমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের বিষয়টি সংযোজিত করা হয়েছে। জাতীয় কমিটির আকার ১৭০ থেকে বাড়িয়ে ১৮০ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই জাতীয় কমিটির সভা ৬ মাসের পরিবর্তে এক বছরের মধ্যে আহ্বানের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পরিধি বাড়িয়ে ৮১ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে সভাপতিম-লীর পদের সংখ্যা ১৫ থেকে বাড়িয়ে ১৯, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ৩ জনের পরিবর্তে ৪ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদ ৭ থেকে বাড়িয়ে ৮ এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আরও দুজন বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের নতুন বিধানও এবারের গঠনতন্ত্রে সংযোজন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের আগামী এক বছরের বাজেট ১২ কোটি ৫৬ লাখ ॥ কাউন্সিল অধিবেশনে দলের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব উত্থাপন করলে তা কাউন্সিলরদের ভোটে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। আশিকুর রহমান জানান, এবারের ২০তম কাউন্সিলের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এছাড়া আগামী এক বছরের বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এ টাকা আপনাদের চাঁদা ও অনুদান থেকেই সংগৃহীত। এ প্রসঙ্গে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ অত্যন্ত নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনেই দল পরিচালনা করে। আমরা প্রতিবছর দলের আয়-ব্যয় স্বচ্ছতার সঙ্গে সবার সামনে তুলে ধরতে চার্টার্ড এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অডিট করি। নিয়মিতভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে আয়-ব্যয়ের হিসাব তুলে দেয়ার পাশাপাশি আয়কর রিটার্ন দাখিল করা হয়। আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড গঠন ॥ কাউন্সিল অধিবেশনে আগামী তিন বছরের জন্য দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যের নাম ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে পদাধিকার বলে শেখ হাসিনা সভাপতি এবং সদস্য সচিব হবেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সংসদীয় বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কাজী জাফর উল্লাহ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, অধ্যাপক আলাউদ্দিন আহমেদ ও রাশিদুল হাসান। স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড গঠন ॥ স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পাদনে স্থানীয় সরকার পরিষদ মনোনয়ন বোর্ড নামে নতুন একটি ধারা আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে এবার সংযোজন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাউন্সিল অধিবেশনে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। এ বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সদস্য সচিব থাকবেন ওবায়দুল কাদের। স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা হলেন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কাজী জাফর উল্লাহ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, অধ্যাপক আলাউদ্দিন আহমেদ, রাশিদুল আহসান, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ড. আবদুর রাজ্জাক ও লে. কর্নেল (অব) ফারুক খান। কাউন্সিলরা সর্বসম্মতভাবে এ মনোনয়ন বোর্ড অনুমোদন দেন। সব প্রক্রিয়া শেষে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করে গণভবনে ফিরে যান। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা পুনর্নির্বাচিত এবং সাধারণ সম্পাদক পদে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নির্বাচিত হওয়ায় রবিবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের দুজনকে অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।
×