ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশাখাপত্তম বন্দরে বাংলাদেশী যুবক উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২২ অক্টোবর ২০১৬

বিশাখাপত্তম বন্দরে বাংলাদেশী যুবক উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ভারতের বিশাখাপত্তম বন্দরে যাওয়া খালি কন্টেনার থেকে বাংলাদেশী এক যুবককে উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কন্টেনারে এ যুবক কিভাবে ঢুকল আর কিভাবে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি এড়িয়ে তা জাহাজীকরণ হয়ে গেল সেই বিষয়টি বেশ আলোচনা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বন্দর কর্তৃপক্ষকে এর জন্য দায়ী করা হলেও এ নিয়ে রয়েছে পারস্পরিক দোষারোপ। তবে ঘটনাটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না ভেবে অসতর্কতা হিসেবেই দেখছে সকল পক্ষ। রোহান নামের এই যুবক বর্তমানে ভারতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভারতের বিশাখাপত্তম বন্দরে বৃহস্পতিবার একটি খালি কন্টেনার খুলে বের করে আনা হয় বাংলাদেশী যুবক রোহানকে। তেরো দিন আগে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া ‘সিনার বাটম’ নামের পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজে কন্টেনারটি ছিল। কলম্বো বন্দর হয়ে তা পৌঁছায় বিশাখাপত্তমে। যুবকটি কন্টেনার অভ্যন্তরেই ছিল ১২ দিন। ভারতের দ্য হিন্দু, দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এবং তেলেগু ভাষার বিভিন্ন দৈনিকে খবর বের হয় যে, কন্টেনার থেকে বের করে আনা হয়েছে বাংলাদেশী এক যুবককে। একটানা না খেয়ে আধমরা অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। পুলিশ এই যুবককে উদ্ধার করে কিং জর্জ হাসপাতালে ভর্তি করে। খাওয়া দাওয়া ও চিকিৎসার মাধ্যমে সে দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠছে। ভারতীয় পত্রিকাগুলোর খবরে জানা যায়, রোহান হোসেনের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে। পেশায় সে একজন শ্রমজীবী। কন্টেনারে পণ্য তোলার জন্য খুলতে গেলে সেখানে নড়াচড়ার শব্দ পাওয়া যায়। বিষয়টি পুলিশ স্টেশনে জানানো হলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। তার শারীরিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। শুধু তাই নয়, তাকে উদ্ধার করা হয় অর্ধচেতন অবস্থায়। চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার পর তাকে ফেরত পাঠানো হবে বাংলাদেশে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালি কন্টেনারে ঢুকে এই যুবক কলম্বো হয়ে ভারতের বিশাখাপত্তম পর্যন্ত কিভাবে পৌঁছাল তা এখন বেশ আলোচিত বিষয়। এর জন্য কেউ বা দায়ী করছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের অসাবধনাতাকে, কেউ দায়ী করছেন কন্টেনার ডিপোকে আবার কেউ বা দাবি করছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে। তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (এডমিন এন্ড প্লানিং) মোঃ জাফর আলমের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। বন্দরের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানতে চাইলে তারা এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে অসাবধানতাবশত এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাটি যে ঘটেছে এ ব্যাপারে সকলেই একমত। হতে পারে যুবকটি কন্টেনারের মুখ খোলা পেয়ে সেখানে ঢুকে ঘুমিয়ে পড়েছিল। পরে ভালভাবে চেক না করেই কন্টেনারের মুখ বন্ধ করে তা তুলে দেয়া হয়েছে জাহাজে। এ ব্যাপারে বেসরকারী কনেটনার ডিপো এ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা জানান, নিয়মানুযায়ী ডিপো থেকে কন্টেনার বের করা হয় দরজা খোলা অবস্থায়। কেননা, বন্দরে প্রবেশ ও জাহাজীকরণের পূর্বে কন্টেনারগুলো পরীক্ষা করা হয়। যেহেতু ডিপো থেকে দরজা খোলা কন্টেনার বের হয় সেহেতু কোন লোক যাওয়া সম্ভব নয়। কন্টেনারে কোন যুবক প্রবেশ করে থাকলে তা জেটিতেই হয়েছে বলে তার অভিমত। এদিকে, বন্দর কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জাহাজীকরণের পূর্বে কন্টেনার পরীক্ষার দায়িত্ব বন্দরের নয়। এ কাজটি করে থাকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ফলে এর দায় কাস্টমসেরই।
×