ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা জালিয়াতির চেষ্টা ॥ ১৩ পরীক্ষার্থীর দু’বছর জেল

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ২২ অক্টোবর ২০১৬

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা জালিয়াতির চেষ্টা ॥ ১৩ পরীক্ষার্থীর দু’বছর জেল

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের অধীনে ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির চেষ্টা করায় ১৩ ভর্তিচ্ছুকে ২ বছর করে বিনাশ্রম কারাদ- দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরের মোট ৮৭টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ক ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই সময়ে ১১টি কেন্দ্র থেকে উক্ত পরীক্ষার্থীদের আটক করা হয়। পরে আটককৃতদের বিশ^বিদ্যালয় প্রক্টরের রুমে পরীক্ষা চলাকালীন ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট রবীন্দ্র চাকমা পাবলিক পরীক্ষা আইন-১৯৮০ এর ৯ (খ) ধারা অনুযায়ী ২ বছর বিনাশ্রম কারাদ-ের আদেশ দেন। কারাদ-প্রাপ্তরা হলেন ইমরান খান সুজন, সাবিয়া ইসলাম নওরীন, আল ইমরান, আকাশ খন্দকার, জাহিদ হাসান, তারিক চৌধুরী, অবণী রায়, মাহমদুল হাসান তারেক, সাদমান ইয়াছির, আল আমিন, ইসতিয়াক আহমেদ ও জুলকার নাইন নির্ঝর, সঞ্চিতা রানী। আটককৃতদের মধ্যে দুইজনকে ইডেন মহিলা কলেজ, একজনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ ভবন, এছাড়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজ, ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ ও সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজসহ আরও কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে চারজনের পরিচয় সম্পর্কে জানা যায়। তারা হলেন- ক্যামব্রিয়ান কলেজের আল ইমরান, উত্তরা মডেল কলেজের ইমরান খান শোভন, মাইলস্টোন কলেজের সাদিয়া ইসলাম নওরীন ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কে এম কলেজের আকাশ। পরীক্ষা চলাকালে আল ইমরানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ ভবন থেকে আটক করা হয়। শোভন ও নওরীনকে আটক করা হয় ইডেন কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে। আটক নওরীন জনকণ্ঠকে বলেন, আমি ও আমার বান্ধবী সঞ্চিতা মাইলস্টোন কলেজে পড়তাম। সঞ্চিতা জালিয়াতি করে পরীক্ষা দিয়ে চলে গেছে। সে ধরা পড়েনি। আমার বাবার পরিচিত বোরহান উদ্দিন নামের এক লোকের সঙ্গে প্রশ্নের ব্যাপারে সাড়ে তিন লাখ টাকার চুক্তি করা হয়েছিল। আটক আল ইমরান জনকণ্ঠকে বলেন, আমার আপন বড় ভাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স পড়ুয়া এক লোকের মাধ্যমে সাড়ে চার লাখ টাকার বিনিময়ে জালিয়াতির ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ‘ক’ ইউনিটের ১৭৪৫টি আসনের বিপরীতে ৯০ হাজার ৪২৭ ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ৫৮টি ও ক্যাম্পাসের বাইরে ২৯টি কেন্দ্রসহ মোট ৮৭টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও ভর্তি পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন বা যোগাযোগ করা যায় এমন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। পরীক্ষার হলে অনিয়ম ও জালিয়াতিসহ যে কোন অপরাধের তাৎক্ষণিক শাস্তি দিতে মোবাইল কোর্টও দায়িত্ব পালন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ আলী জানান, শুক্রবার সকালে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে জালিয়াতির অভিযোগে মোট ১৩ জনকে আটক করা হয়। পরীক্ষার সময় তারা মোবাইল ফোনের এসএমএস ও বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করছিল। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই ১৩ জনকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদ- দিয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জানান, প্রত্যেক কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস চেক করে প্রবেশ করানো হয়েছে। কিন্তু যারা জালিয়াতি করবে তারা ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করলে পরিদর্শকরা তাদের আটক করে।
×