ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা

‘ইতিবাচক চিন্তা ছাড়া উপায় নেই’

প্রকাশিত: ০৬:২১, ৯ অক্টোবর ২০১৬

‘ইতিবাচক চিন্তা ছাড়া উপায় নেই’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম ওয়ানডেতে হারের পর এবার সামনে দ্বিতীয় ওয়ানডে। হারলেই সিরিজ হার হয়ে যাবে। প্রথম ওয়ানডেতে ফিল্ডিংয়ের বাজে অবস্থা, ক্যাচ মিসের মহড়ার পর ব্যাটিংয়ে আশা জাগিয়েও হার হয়েছে। তাতে বোঝাই গেছে, ইংল্যান্ড কতটা শক্তিশালী দল। সুযোগ বুঝে কোপ দিয়েছে। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও তা বুঝেছেন। তাইতো বলেছেন, ‘ইতিবাচক চিন্তা করা ছাড়া উপায় নেই।’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘একটা জিনিস হতে পারে, এটা নিয়ে বারবার চিন্তা করতে পারি। এটা নিয়ে অনেক আলোচনা হবে, এটাই স্বাভাবিক। আরও একটু হতে পারে পেশাদার হয়ে চিন্তা কর। আমাদের আরও দুটি ম্যাচ বাকি। আমাদের সব সুযোগই আছে। আমরা যদি চেষ্টা করি ওই সুযোগগুলো আমাদের আসতে পারে। আমরা অনেক বাজে অবস্থায় হেরেছি (প্রথম ওয়ানডেতে) বলে খারাপ লাগাটা বেশি থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। সামনের দুটি ম্যাচ ভাল ক্রিকেট খেলার মাধ্যমে আমরা জিততে পারি। ইতিবাচক চিন্তা করা ছাড়া উপায় নেই।’ প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের এত কাছে গিয়েও হার হয়েছে। ৫১ রানে ৩৯ রান দরকার ছিল। ৬ উইকেট। সবচেয়ে বড় বিষয়, ইমরুল কায়েস ও সাকিব আল হাসান সেট ব্যাটসম্যান। দুইজন মিলে ১১৮ রানের জুটিও গড়ে ফেলেন। যেতাটা যেন সময়ের ব্যাপারই। এমন সময়েই বিপদ ঘনিয়ে আসে। সাকিব আউট হতেই সব ওলট-পালট হয়ে গেল। ২৭১ থেকে ২৮৮Ñ মাত্র ১৭ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। সবাই হতাশ হয়ে যান। মাশরাফি এ নিয়ে বলেন, ‘এই ম্যাচটা অবশ্য জেতা উচিত ছিল আমাদের। ৫২ বলে ৩৯ লাগবে, ৬ উইকেট হাতে। ওখান থেকে ম্যাচ হারা অবশ্যই হতাশার। এভাবে উইকেট পতনতো আমাদের পক্ষে আসবে না, এটাই স্বাভাবিক। আরও একটু ভিন্নভাবে চেষ্টা করা যেত। সাকিব আউটের পরও ইমরুল, মোসাদ্দেক ছিলেন। এ দুইজন যদি ব্যাট হাতে হাল ধরতেন, তাহলেও জয় আসত। কিন্তু পারলোই না। মাশরাফি তাই বলেছেন, ‘হয়তোবা আরও একটু দেখে শুনে খেললে শেষ দুই ওভারে যদি ১৫-১৬ লাগতো, আমরা (নিচের সারির ব্যাটসম্যানরা) চেষ্টা করতে পারতাম। কারও দোষ নিয়ে লাভ নেই। এর আগেও এমন হয়েছে। কিছুদিন ধরেই এমন হচ্ছে। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে।’ মাশরাফিকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার জন্য এটা কতটা হতাশার? জবাব দেন, ‘এটা যে কারও জায়গা থেকেই হতাশার। এটা কারো একার ব্যাপার না। পুরো দলই এখন আপসেট। একটা পর্যায়ে যখন ৭-৮ করে লাগতো, তখন আমরা এভাবে ব্যাটিং করতে পারতাম। কিন্তু যখন আমাদের ৫ করে লাগবে, তখন আমাদের আরও ধৈর্যশীল ব্যাটিং করা লাগতো। এটা আসলে সবসময় একই রকম যায় না। এখানে হয়তোবা কিছু ভাল জিনিস হয়েছে। এগুলো পরের ম্যাচে কাজে লাগাতে পারলে সামনে হয়তো ভাল কিছুই হবে।’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষদিকে ব্যাটিং ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও হলো। এ নিয়ে মাশরাফি জানান, ‘এটা ব্যাখ্যা করা আসলে কঠিন। আস্কিং রেট যদি হয় ৪-৫ তাহলে তখন বিগ শটের প্রয়োজন হয় না। যখন আস্কিং রেট ৮-এর বেশি থাকে তখন হয়তো বিগ শট খেলতে হয়। প্রথম ওয়ানডেতে ওটা দরকার ছিল না। ওদের একটা পর্যায়ে ফিল্ডিং ক্লোজ করে রাখতে হয়েছিল। কারণ সিঙ্গেল আটকানোর প্রয়োজন ছিল ওদের। ওই মুহূর্তে আমরা অনেক বাজে শট খেলে আউট হয়েছি।’ এমন হার মেনে নেয়া কঠিন বলেও মনে করছেন মাশরাফি, ‘ভারতের সঙ্গেও আমরা খুব ক্লোজ ম্যাচ হেরেছি। প্রথম ওয়ানডেটিও হতাশার। ৩০০ রান চেজ করে জিততে পারলে সবদিক থেকে ভাল অবস্থানে থাকতে পারতাম। ম্যাচটি জিততে পারলে আমরা ১-০তে এগিয়ে যাওয়ার ভাল সুযোগ পেতাম। সে সুযোগটা নিতে পারেনি। হারতো হারই। এই ধরনের হার মেনে নেয়া খুব কঠিন। আউটগুলো দেখলেই বোঝা যাবে, ব্যাটসম্যানরা কতটা প্যানিক ছিল। হয়তোবা আরও নরম্যাল থাকতে পারতাম। ওখানে ১০-১২ বল ডটও হলে খুব একটা সমস্যা ছিল না। রান করার তাড়াতেই আমরা আউট হয়েছি।’ ফিল্ডিং কোনভাবে ভাল হয়নি। তিনটি নিশ্চিত ক্যাচ মিস হয়েছে। যা বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকেই বের করে দিয়েছে। ফিল্ডিং নিয়ে মাশরাফি জানান, ‘আমাদের ভাল হয়নি। ওই সময় আমরা যদি ক্যাচ তিনটা নিতে পারতাম তাহলে ২৮০-২৯০ হতো। তাহলে আমাদের মানসিক অবস্থাও অন্যরকম হতে পারতো। উইকেটটা খুব ভাল ছিল। যদি ২৮০-৯০ হতো তাহলে ব্যাটসম্যানদের জন্য আরও একটু ভাল হতো। মানসিক অবস্থাটা অন্যরকম থাকতো।’ ড্রেসিংরুমে যে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়েও বলেছেন মাশরাফি, ‘আমরা একটা কথা বলছিলাম, আমাদের শেষ পর্যন্ত ইমরুলের সঙ্গে উইকেটে থাকতে হবে। আমি যখন যাই তখনও ইমরুলের সঙ্গে আলাপ ছিল, ইমরুলকে কমপক্ষে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হবে। আসলে সেটা হয়নি। তারপরও ইমরুল যেভাবে ব্যাটিং করেছে, সেই সঙ্গে উইকেটে স্ট্রাগল করেছে। আসলে ওর যে পরিস্থিতি ছিল ওই অবস্থায় খুব কঠিন ছিল ব্যাটিং করা। তারপরও সে দলের জন্য চেষ্টা করেছে। ওই সময় পরিকল্পানই ছিল ইমরুলকে সঙ্গ দেয়া। সেট হতে ৩-৪ বল লাগলে চেষ্টা করবে।’ মুশফিক টানা ব্যর্থ হয়েই চলেছেন। মুশফিককে নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে। তা যেন মানতে পারছেন না মাশরাফি, ‘মুশফিক আমাদের দলের সেরা ব্যাটসম্যান। এটা আমরা সবাই জানি। ৩-৪ ম্যাচের পর মুশফিককে নিয়ে প্রশ্ন করাই উচিত নয়। মুশফিক আমাদের দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। সে সঠিক সময়ে ব্যাক করবে।’
×