ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না জেসন রয়

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৪ অক্টোবর ২০১৬

জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না জেসন রয়

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপটা ভাল যায়নি ইংল্যান্ডের। বিশ্বকাপের মাত্র কিছুদিন আগে দলের নেতৃত্ব নিয়েছিলেন ইয়ন মরগান। এরপর গত ১৮ মাস দারুণ ক্রিকেট খেলেছে ইংলিশরা। বিশ্বকাপের পর টানা ৬ সিরিজের মধ্যে ৪টিতেই জিতেছে তারা। বাকি দুটি অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩-২ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ৩-২ ব্যবধানে হেরেছে। সবমিলিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন দারুণ অবস্থানে আছে তারা। সেটার প্রমাণ দিয়েছে গত মাসে পাকিস্তানকে ঘরের মাটিতে ৪-১ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে। তবে এই ছন্দটা ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ এখন বাংলাদেশ সফরে আসা দলের জন্য। এমনটাই মনে করেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা ওপেনার জেসন রয়। তিনি বাংলাদেশের মাটিতে আগেও খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরে খেলেছেন। তবে বাংলাদেশের কন্ডিশনে ইংলিশ ক্রিকেটারদের মানিয়ে নেয়াটাই কঠিন কাজ বলে মনে করছেন তিনি। সেজন্য ক্রিকেটে পুরো মনোযোগী হয়ে, সতর্ক থেকে খেলাটাই সাফল্যের চাবিকাঠি হবে বলে জানান তিনি। নিজের নৈপুণ্যটা ধরে রেখে আরও শতক হাঁকানোর পাশাপাশি দলকে বিজয়ী দেখতে চান জেসন। সোমবার মিরপুরে অনুশীলনের ফাঁকে এসব কথা বলেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে দারুণ সময় যাচ্ছে ইংল্যান্ডের। টানা জয়ের মধ্যেই আছে তারা। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর নিজ দেশে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩-২, আরব আমিরাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩-১ এবং নিজ দেশে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৩-০ ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করেছে তারা। মাঝে অবশ্য ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩-২ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ৩-২ ব্যবধানে দুটি সিরিজ হেরেছে। কিন্তু দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে চলেছে ইংলিশরা। এই সাফল্য এবার বাংলাদেশ সফরে ধরে রাখাটাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন জেসন রয়। তিনি বলেন, ‘প্রায় দেড় কিংবা দুই বছরের কাছাকাছি খুবই দারুণ সময় ছিল। আমি এর প্রতিটা মিনিটই খুব উপভোগ করেছি। হয়তো পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারা যে কোন কিছুর চেয়ে জরুরী এবং হয়তো সেটাই অন্য যে কোন কিছুর চেয়ে কঠিনতম কাজ। মনোযোগটাই চাবিকাঠি হতে পারে। লেগে থেকে যতক্ষণ সম্ভব ব্যাট করার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু এটা নিয়ে অবশ্যই বেশি চিন্তা করা উচিত হবে না। নিজের যে কাজটা সেটার জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে এবং অবশ্যই রান করতে হবেÑ এইতো।’ এবার ইনজুরি ও নিরাপত্তা ইস্যুর কারণে বেশ কয়েকজন নিয়মিত ক্রিকেটার বাংলাদেশ সফরে দলের সঙ্গে আসতে পারেননি। এটাকে বরং ভালভাবেই দেখছেন জেসন। কারণ এতে করে নতুনদের জন্য দারুণ একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে ভাল কিছু করার। এ বিষয়ে জেসন বলেন, ‘যেই দলে আসুক সে তাদের জায়গাটা পাওয়ার ক্ষেত্রে উপযুক্ত এবং সত্যি বলতে কি এটা অবশ্যই দারুণ ব্যাপার। তারা অনেক বড় একটা সুযোগ পেয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের অবস্থাটা যাচাইয়ের। সেটা হতে পারে বেন ডাকেট কিংবা অন্য যে কেউ। আমি আরও কিছু ছেলের সঙ্গে নেটে ব্যাটিং করেছি।’ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের লজ্জাজনকভাবে প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়ার পরই দলে প্রথম ডাক পেয়েছিলেন জেসন। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ডাবলিনে ৮ মে তার অভিষেক হলেও বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। ফলে ২৬ বছর বয়সী এ ডানহাতি ক্রিকেটার ব্যাট হাতে নামতে পারেননি। তবে এরপর নিয়মিত খেলে ইতোমধ্যে ওয়ানডেতে ৩ সেঞ্চুরি ও ৫ অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন ৩০ ওয়ানডেতে। কিন্তু নিজেকে অন্যদের চেয়ে আলাদা একটা অবস্থানে নিয়ে যেতে চান তিনি। করতে চান আরও শতক এবং দলকেও বিজয়ী দেখতে চান। এ বিষয়ে জেসন বলেন, ‘এখনও আমার অবশ্যই কিছু কাজ করার বাকি আছে। আরও অনেক রান করতে হবে। আরও কিছু শতক এবং সে রকম কিছু করা দরকার। আমি অবশ্যই অন্য কারও মতো সাধারণভাবে নিজেকে থিতু করতে চাই না। আমি সবসময়ই অন্যদের চেয়ে ভালকিছু করতে চাই। অবশ্যই নিজের উন্নতি করতে চাই, আরও অনেক শতক হাঁকিয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে অনেক বেশি বেশি ম্যাচ জিততে চাই। এই মুহূর্ত মানসিকভাবে আমি যে অবস্থায় আছি তাতে আমি বেশ সন্তুষ্ট।’ এ্যালেক্স হেলস না থাকায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন মুখ বেন ডাকেটকে নিয়ে ইনিংস উদ্বোধন করার সম্ভাবনা আছে তার। তবে সেসব নিয়ে ভাবছেন না জেসন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না কার সঙ্গে আমি উদ্বোধন করব, কিন্তু আমি শুধু নিজের মতো করে খেলতে চাই। এটা যদি নতুন ছেলে ডাকেট হয় অবশ্যই চেষ্টা করব পুরোটা সময় তাকে সহায়তা দিয়ে যাওয়ার। সে হয়তো কিছুটা স্থায়ুচাপে আছে, তবে অবশ্যই এখানে আসার জন্য যথেষ্ট উপযুক্তই তিনি।’
×