ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মনোবল নিয়ে খেলতে পারলে সুযোগ থাকবে

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৩ অক্টোবর ২০১৬

মনোবল নিয়ে খেলতে পারলে সুযোগ থাকবে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষ। তা নিয়ে আর ভাবার কোন অবকাশ নেই। সামনেই যে শুক্রবার থেকেই আরেকটি সিরিজ শুরু হচ্ছে। সেই সিরিজটি আবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। যে দলটি বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগেই পাকিস্তানকে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজে হারিয়েছে। তবুও বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই ম্যাচেই যে জিতেছে বাংলাদেশ। আর ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ততো কোন সিরিজে হারেইনি বাংলাদেশ। আর তাই বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে মনে করেন, ‘আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলতে পারলে সুযোগ থাকবে।’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জেতার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ নিয়ে মনের কথাটি বলেছেন মাশরাফি। আফগানদের বিপক্ষে সিরিজ সামনে রেখে ইংল্যান্ডকেও হারানোর সম্ভাবনাই দেখছেন, ‘আমি মনে করি সিরিজটা (আফগানদের বিপক্ষে) জিততে পেরেছি এটা একটা ভাল দিক। আর দ্বিতীয় ম্যাচের পর হারলে একটা চাপ থাকে এটা স্বাভাবিক। সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পেরে ভাল লাগছে। আর আমি মনে করি, সামনে যে সিরিজ আসছে সেটা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। আমরা যদি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলতে পারি, আশাকরি আমাদের সুযোগ থাকবে। এর আগেও আমরা ভাল খেলেছি ওই আত্মবিশ্বাসটা আছে।’ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০ সালের আগে বাংলাদেশের কোন জয় নেই। তবে ২০১১ সালের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে আবার ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের কোন জয় নেই। ২০১১ সালে বাংলাদেশে হওয়া বিশ্বকাপে এবং ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে হওয়া বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। গতবছরতো ইংল্যান্ডকে বিদায় করে দিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেই খেলেছে মাশরাফিবাহিনী। এবার যখন দুই দল সিরিজ খেলতে নামবে, তখন সাড়ে ৬ বছর পর আবার ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হবে। সিরিজ জয় আর ম্যাচ জয়তো এক নয়। তবে একটি করে ম্যাচ জিততে থাকলেতো সিরিজ জয়ও হতে পারে। মাশরাফি তাই বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে শুরুতে আমরা একটু দেখে শুনে খেলতে চেয়েছিলাম। উইকেটটা কেমন, কেমন ব্যবহার করে, এটা আমাদের পরিকল্পনায় ছিল। যখন ব্যাটসম্যানরা বুঝতে পেরেছে এ উইকেটে রান করা সম্ভব, তখন ওরা স্বাভাবিক খেলা শুরু করেছে। গত ম্যাচে (দ্বিতীয় ম্যাচে) আমরা যেভাবে খেলছি সেখান থেকে উন্নতি করার অনেক জায়গা আছে। আমরা শুরু থেকেই এভাবে খেলতে চেয়েছিলাম। হয়তো তৃতীয় ম্যাচে এসে করতে পেরেছি। আশাকরি এখান থেকে কিছু আত্মবিশ্বাস নিয়ে সামনের ম্যাচগুলো খেলতে পারব।’ তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে প্রথম দুটি ম্যাচে বাংলাদেশ খারাপ খেলেছে, সেই ছায়া ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেওতো থাকতে পারে। যতই বাংলাদেশ তৃতীয় ওয়ানডেতে গিয়ে আফগানদের ১৪১ রানের বড় ব্যবধানে হারাক। যতই আফগানদের দুমড়ে মুছড়ে দিক। ইংল্যান্ড দলতো আর আফগানিস্তানের মতো কমশক্তির দল নয়। পুরো শক্তির দলই। মাশরাফি তাই বলেছেন, ‘আসলে যারা বেশি খেলে, সুযোগটা বেশি থাকে। খেলতে খেলতে এ ধরনের পরিস্থিতি হ্যান্ডেল করতে পারে। ওইভাবে বলব না, এই ম্যাচে (তৃতীয় ম্যাচে) যেমন আমরা ভাল খেলেছি। এই সিরিজে কিন্তু ওরা আমাদের চেয়ে দুইটা ম্যাচ ভাল খেলেছে।’ তবে শেষ পর্যন্ত তৃতীয় ওয়ানডেতে যে বাংলাদেশ দাপটের সঙ্গে জিতেছে, সেটিই দলের ক্রিকেটারদের মনোবল চাঙ্গা করেছে। আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে দিয়েছে। দুই দলের মধ্যে যে এখনও কত পার্থক্য সেটিই বোঝা গেছে। আফগানদের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে বাংলাদেশ বাজে খেলেছে। আফগানরা ভাল খেলেছে। কিন্তু তৃতীয় ওয়ানডেতে এসে দুই দলের আসল রূপ বের হয়েছে। আর তাই সিরিজ বাংলাদেশই শেষ পর্যন্ত জিতে নিয়েছে। জয় সবসময়ই দলকে উজ্জীবিত করে। বাংলাদেশকেও করেছে। আর সেই জয় নিয়ে এখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও বাজিমাত করতে পারলেই হয়ে যায়। পারবে বাংলাদেশ তা করতে? আফগানিস্তানের বিপক্ষে আসলে প্রস্তুতিমূলক সিরিজই ছিল। যদিও সিরিজটি কঠিন হয়েছে। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে নামার আগে সিরিজটি প্রস্তুতি নেয়ার সেরা মঞ্চ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। তিন ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এ ম্যাচগুলোতে ভুল শুধরে নেয়া গেছে। দলের কম্বিনেশন নির্ধারণ করা গেছে। ভবিষ্যতে কি করা দরকার তা বোঝা হয়েছে। সঙ্গে ১০ মাস পর ওয়ানডে খেলতে নেমে আত্মবিশ্বাসও মিলেছে। সেই আত্মবিশ্বাস এখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে কাজে লাগান গেলেই হয়। তাহলে মাশরাফি যে বলেছেন, ‘আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলতে পারলে সুযোগ থাকবে’, সেই সুযোগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জয়ও হয়ে যাবে।
×