ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় অবৈধ বাংলাদেশীদের পুনঃনিবন্ধনের সময় বাড়ল

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মালয়েশিয়ায় অবৈধ বাংলাদেশীদের পুনঃনিবন্ধনের সময় বাড়ল

বাংলানিউজ ॥ মালয়েশিয়ায় অনিবন্ধিত বাংলাদেশী শ্রমিকদের বৈধ হওয়ার সময় বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। কর্মরত কোম্পানির মালিকদের মাধ্যমে এই পুনঃনিবন্ধনের (রি-হায়ারিং) সুযোগ নিতে পারবেন শ্রমিকেরা। সোমবার সকালে কুয়ালালামপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম ফোনে এ তথ্য জানান। শহীদুল ইসলাম বলেন, গত জুন মাসে অনিবন্ধিত শ্রমিকদের পুনর্নিবন্ধনের বেঁধে দেয়া সময় শেষ হয়। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে অনেকেই পুনর্নিবন্ধনের আবেদনের আওতাভুক্ত হতে পারেননি। আমরা এ দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সময়সীমা বাড়ানোর সুপারিশ করি। তিনি বলেন, আমাদের সুপারিশ আমলে নিয়ে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনর্নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়িয়েছে মালয়েশীয় সরকার। জানা গেছে, তিনটি কোম্পানির মাধ্যমে বিদেশী শ্রমিকদের এই পুনর্নিবন্ধনের কাজ চলছে। শুধু বাংলাদেশীদের জন্যই একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয়া হয়। আর মাই-ইজি নামের প্রতিষ্ঠানটি অনলাইনে শ্রমিকদের পুনর্নিবন্ধনের বিষয়টি প্রক্রিয়া করে। মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যমতে, গত জুন মাসের পর থেকেই মালয়েশিয়ায় অনিবন্ধিত বিদেশীদের ধরপাকড় বেড়ে যায়। বিভিন্ন সময়ে হাজারের ওপর বাংলাদেশী আটকের খবর পাওয়া যায়। তবে শহীদুল ইসলাম বলেন, এটি মালয়েশিয়ায় একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে পুনর্নিবন্ধনের কোন সম্পর্ক নেই। বিভিন্ন অপরাধে বাংলাদেশীসহ অন্য দেশের বিদেশীরা আটক হন। এর মধ্যে নিবন্ধন না থাকাও একটি অপরাধ। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী পুনর্নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে না পারার বিষয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত ইমিগ্রেশন আইনজীবী ড. শেখ সালাহউদ্দিন বলেন, বিভিন্ন কারণে কয়েক হাজার বাংলাদেশী বৈধ হতে আবেদন করেননি। কারণ, মালয়েশিয়ান সরকার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে যাদের বৈধ হওয়ার জন্য আবেদন করতে বলেছে তারা ওই ক্যাটাগরির অবৈধ নয়। তারা কেউ সাগর পথে পাচারকারীদের মিথ্যা প্রলোভনে এসেছেন, কেউবা বৈধ পথে স্টুডেন্ট ভিসায় মালয়েশিয়ায় এসে তারপর অবৈধ হয়ে পড়েছেন। তারা পুলিশী অভিযানের কারণে কয়েক মাস ধরেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদিকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ জানায়, যারা রি-হায়ারিংয়ে অংশ নিচ্ছেন না এবং যে কোম্পানির মালিক অবৈধ শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার ১৯৫৯/৬৩ অনুচ্ছেদের ৫৫ (বি) ধারা মোতাবেক আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন স্থানে যদি অবৈধ শ্রমিক পাওয়া যায় তাহলে মালিকপক্ষ ও কর্মচারীকে ৫০ হাজার রিঙ্গিত জরিমানাসহ এক বছরের জেল কার্যকর করা হবে। অন্য আরেকটি আইনে আছে কোন মালিকপক্ষ যদি পাঁচজনের বেশি অবৈধ শ্রমিক রাখে তাহলে পাঁচ বছরের জেল কার্যকর হবে। মালয়েশিয়ায় চলমান ‘অবৈধ’ বিদেশী শ্রমিকদের বৈধকরণ (রি-হায়ারিং) প্রকল্পে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশীসহ প্রায় দুই লাখ শ্রমিক নিবন্ধন করেছেন। তবে এখনও বহু সংখ্যক বাংলাদেশী অবৈধ শ্রমিক বৈধতার জন্য আবেদন করেননি বলেই জানা যায়। এদিকে স্টুডেন্ট ভিসা ও সাগর পথে মালয়েশিয়ায় যারা প্রবেশ করেছেন তাদের বৈধ করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. জাহিদ হামিদি। ওই ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের অনেক অবৈধ শ্রমিক আছে বলে জানা যায়।
×