ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৬’ অনুষ্ঠিত হবে ১৯-২১ অক্টোবর

তথ্যপ্রযুক্তি মেলায় এক শ’ বিদেশীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

তথ্যপ্রযুক্তি মেলায় এক শ’ বিদেশীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ‘নন স্টপ বাংলাদেশ’ স্লোগান সামনে রেখে আগামী ১৯-২১ অক্টোবর তিন দিনব্যাপী দেশে সবচেয়ে বড় তথ্য প্রযুক্তির মেলা ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬’ অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর বারিধারা বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে এ প্রদর্শনী চলবে। বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস) ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ-টু-আই কর্মসূচীর সহায়তায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের আয়োজন করছে। তথ্য প্রযুক্তির এই মেলায় প্রায় এক শ’ বিদেশী অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। মেলায় অংশগ্রহণ করে তাঁরা বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তিকে আরও কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেসব বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন। সোমবার সচিবালয়ে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬’ এর উপদেষ্টা কমিটির সভায় সভাপতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ তথ্য জানান। উপদেষ্টা কমিটির সভায় অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার ছাড়াও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে প্রায় এক শ’ বিদেশী বক্তা অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি নিজস্ব মতামত তুলে ধরবেন। একই সঙ্গে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’-এ সরকারের ৪০টি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরবে। এ প্রদর্শনীতে আইসিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কোথায় ছিল, কোথায় আছে এবং কোথায় যেতে চায় সে বিষয়গুলো সম্পর্কেই দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে। এ মেলার বিষয়ে বিভিন্ন সার্কেল থেকে গুরুত্বপূর্ণ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে মুহিত বলেন, সবাই এ মেলার বিষয়ে জানতে পারলে মেলায় স্টল আরও আসবে। সভায় জানানো হয়, ২০১৮ সালে ১০০ কোটি এবং আগামী ২০২১ সালে ৫০০ কোটি ডলারের সফটওয়্যার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এ প্রদর্শনীর আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত বছর ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড আয়োজনে ৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। এবার খরচ ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এই অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য সাংগঠনিক কমিটিসহ আটটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, উদ্বোধনী, সমাপনী ও ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা উপকমিটি, প্রদর্শনী উপকমিটি, অভ্যর্থনা, প্রটোকল ও লজিস্টিক উপকমিটি, সেমিনার ও কর্মশালা উপকমিটি, যোগাযোগ ও প্রকাশনা উপকমিটি, সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিষয়ক উপকমিটি, ফিন্যান্স ও স্পন্সর উপকমিটি, স্বাস্থ্য উপকমিটি, নিরাপত্তা ও প্রটোকল উপকমিটি। সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় এ মেলা হবে। এবার মেলায় ৩ লাখ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটবে বলেও আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এবারের মেলা আয়োজনের বিভিন্ন বিষয় প্রোজেক্টরের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি সেকেন্ডে ৪০ লাখ মেগাবাইট ডাটা শেয়ার হচ্ছে। সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন হলো এই ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড । এতে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে যখন ডিজিটাল কথাটা বলেছেন বিরোধীপক্ষ তখন মশকরা করত জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, এখন এর ছোঁয়া গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই গতি থাকলে টার্গেট ছাড়িয়ে যাব। এই খাত অর্থনীতিতেও বিরাট ভূমিকা রাখছে। জাতীয় নির্বাচনে ভোটিং সিস্টেমকে ডিজিটালাইজড করার উপর গুরুত্বারোপ করে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রকৃতপক্ষে দেশকে ডিজিটাল করতে হলে এটা (ভোটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড) করতে হবে। এটা রিয়েলি নট টাফ জব। সভায় রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক জানান, ট্রেনেও ডিজিটাল পদ্ধতির ছোঁয়া লেগেছে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, সরকার ডিজিটালি কতটুকু সেবা দিচ্ছে তা অনেক জনগণ জানেন না, কোন কোন মন্ত্রীও জানেন না। কোন কোন মন্ত্রণালয় কি কি সেবা দিচ্ছে মন্ত্রণালয়ে সেই তালিকা থাকা উচিত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, এখন আর আলাদা ব্র্যান্ড খোঁজার দরকার নেই, ডিজিটাল বাংলাদেশ ইটসেলফ এ ব্র্যান্ড। এ সময় ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে ইয়াফেস ওসমান স্বরচিত ছড়াও শোনান। বেসিসের সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্যাটেন্ট এ্যান্ড ডিজাইন আইনটি ১৯১৯ সালের। এ আইন দিয়ে সফটওয়্যার রক্ষা করতে পারব না। তাই তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে শিল্পমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। এদিকে, এবারের মেলায় প্রদর্শনীতে থাকবে সফটওয়্যার শোকেসিং, ই-গভর্নেন্স এক্সপোজিশন, মোবাইল ইনোভেশন, ই-কমার্স এক্সপো ও স্টার্টআপ জোন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট ১২টি সেমিনার হবে। মেগা সেমিনার বা কনফারেন্সের মধ্যে রয়েছে, মিনিস্টিরিয়াল বা ডেভেলপমেন্ট পার্টনার্স কনফারেন্স, আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প, আইসিটি এডুকেশন সম্মেলন। এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, অ্যাওয়ার্ড নাইট ছাড়াও মেলায় আরও কিছু প্রোগ্রাম থাকবে।
×