ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাবিবুর রহমান স্বপন

ইছামতি বাঁচাও

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ইছামতি বাঁচাও

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহ থেকে শাহজাদপুর যাতায়াত করতেন পাবনা শহরের মধ্য দিয়ে ইছামতি নদীপথে তাঁর পদ্মা বোটযোগে। তখন নদীতে লঞ্চ ও বড় নৌকা চলত। পাবনা শহরের মধ্যে ইছামতি ছিল প্রায় ৩শ’ ফুট প্রস্থ। বর্তমান ৫০ থেকে ৭০ ফুট মাত্র। এখন ইছামতি মরা নদী। ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এটাকে দেখলে প্রথমেই কেউ মনে করবে এটি একটি নর্দমা। যেমনটি মনে করেছিলেন জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো। তিনি পাবনায় জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদানের দিন অফিস থেকে বাংলোতে যাবার সময় লক্ষ্য করেন ‘ইছামতি’ নদীকে নর্দমায় রূপ পাওয়ার চিত্রটি। আর এর সিংহভাগই বেদখল হয়ে গেছে। পাবনার জেলা প্রশাসক সম্প্রতি ‘ইছামতি নদী বাঁচাও’ শিরোনামে একটি মিটিং করেছেন। নদী বাঁচানোর আকুতি সাধুবাদ পাওয়ার দাবি রাখে। উদ্যোগটি মহৎ। কিন্তু কাজটি দুরূহ। কারণ অনেক। এর অন্যতম কারণ নদী ও সরকারী জমি দখল করে দুর্বৃত্তরা। তাদের বলা হয় ভূমিদস্যু। তাদের হাত শক্তিশালী। যেহেতু তারা প্রভাবশালী। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পাবনার রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় রেখা রানী বালো ইছামতি নদীর এমন দুর্দশা দেখে কষ্ট পেয়েছেন এমনটিই জানিয়েছেন। তাকে ধন্যবাদ যে, তিনিই প্রথম একজন জেলা প্রশাসক যিনি ইছামতি নদী বাঁচানোর সেøাগান নিয়ে সভা আহ্বান করেছেন। একটা দুরূহ কাজে হাত দিয়েছেন। ইছামতি নদী দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করে এতে জলধারা প্রবাহিত হবে এ স্বপ্ন পাবনাবাসীর। কিন্তু তাদের প্রাণের এই দাবি বাস্তবায়ন কে করবে? ২০০৭ সালে যখন সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল তখন মানুষের বুকে আশার সঞ্চার হয়েছিল এবার ইছামতি অবৈধ দখলমুক্ত হবে। পাবনা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত স্বাস্থ্য দফতরের জমিতে ছিল বাসস্ট্যান্ড। সেখানে মসজিদও নির্মাণ করা হয়েছিল। সেনাবাহিনীর সদস্যসহ পুলিশ-র‌্যাব এবং ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থেকে মাত্র চার ঘণ্টায় সব কিছু অপসারণ করল। অথচ ইছামতি পুনরুদ্ধার করা গেল না! কারণ নানাজনের নানা মত। কেউ বলেন তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দু’জন উপদেষ্টা ছিলেন, যাদের বাড়ি পাবনায়। তাদের যদি সদিচ্ছা থাকত তা হলে ইছামতি নদী উদ্ধার করা যেত। অবশ্য একজন উপদেষ্টার সদিচ্ছার কারণেই তো পাবনায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার একনেকের সভায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিলটি অনুমোদন করে। জমি হুকুম দখলের প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০০০-২০০১ অর্থবছরে। এরপর নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে প্রকল্পটি আর আলোর মুখ দেখেনি। একইভাবে ১৯৮০-৮১ সালে জিয়াউর রহমান সরকারের সময় দু’বছর পাবনা মেডিক্যাল কলেজ চলে। এরশাদ সরকার ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করে দেয়। এসব ইতিহাস পাবনাবাসীর জানা। তবে পাবনাবাসী স্পষ্টভাবে জানেন না কোন্ কারণে ইছামতি নদীর জমি উদ্ধার করা যায়নি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওই সময়। রহস্য বড়ই জটিল ও কুটিল! সরিষার মধ্যেই ছিল ভূত। ‘ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।’ যারা ক্ষমতাসীন ছিলেন তাদের এবং আত্মীয়স্বজনের দখলেই ছিল ইছামতি নদী, যা এখনও আছে। অবৈধ দখলদারদের কারও বাড়ির সম্পূর্ণ অংশ এবং কারও বাড়ির সিংহভাগ ইছামতি নদী দখল করে। কারওবা আছে অফিস, গুদামঘর, গাড়ির গ্যারেজ। এটি আমার কথা বা মনগড়া তথ্য নয়। এই তথ্য পাবনা জেলা প্রশাসনের। ইছামতি নদী পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ২০০৩ সালে পাবনা জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, সড়ক ও জনপথ, এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পাবনা পৌরসভা এক যৌথ জরিপ কাজ করে। পাবনা শহরের ম-লপাড়া সংযোগ খাল থেকে শালগাড়িয়া সিঙ্গা শ্মশানঘাট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত জরিপ করে ২৮৫টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়। ১৯২২ সালে সম্পাদিত ডিএস মৌজা ম্যাপ অনুসারে জরিপ কাজ সম্পন্ন করা হয়। জরিপ দল তাদের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছে, অবৈধ দখলদাররা অসৎ উপায় অবলম্বন করে ১৯৬২ সালের এসএ রেকর্ড এবং পরবর্তীকালে হাল রেকর্ডে তাদের দখলদারিত্বের অনুকূলে দলিলপত্র বা কাগজপত্র তৈরি করে নিয়েছেন। এখানে উল্লেখ করতে হয়, অবৈধ কাগজপত্র তৈরি করতে সার্বিক সহায়তা করেছেন সরকারী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাই। ২০০৯ সালে ইছামতি নদীর দিয়ারা জরিপ শুরু হয়েছে। গত হয়েছে ৭ বছর। যে সেটেলমেন্ট অফিসার শুরু করেছিলেন ইছামতি জরিপ কাজ তিনি এখনও পাবনায় স্বপদে বহাল আছেন। কিন্তু কোন রহস্যজনক কারণে দিয়ারা সেটেলমেন্টের কাজ এখনও আলোর মুখ দেখল না! সেটি নিয়ে কি ভেবেছেন পাবনাবাসী? আর একই ব্যক্তি একই পদে প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পাবনায় আছেন- এই প্রশ্ন কি কারও মনে উদ্রেক হয়েছে? তিনি আরও দুই দশক পাবনায় থাকুন একই পদে (যেহেতু সরকার রেখেছেন) এ নিয়ে প্রশ্ন নাইবা করলাম। আমরা এটা তো জানতে চাইতে পারি ইছামতি নদীর দিয়ারা জরিপ কতদূর অগ্রসর হলো? জরিপ কাজটাও কি ধামাচাপা পড়তে যাচ্ছে প্রভাবশালীদের প্রভাবে? সারাদেশের নদী অবৈধ দখলদারদের দখলে চলে গেছে এবং যাচ্ছে। নদী শুকিয়ে সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়ায় দখলদারদের জন্য এই দখল পাকাপোক্ত করতে আরও সুবিধা হয়েছে। ১৯২২ সালে ডিএস মৌজা ম্যাপ অনুসারে নদী উদ্ধার করা কি সম্ভব হবে? তা না হলে ১৯৬২ সালের এসএ রেকর্ডে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করা হয়েছে। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর জমিদার কর্তৃক প্রদত্ত ভুয়া পত্তনি নথির মাধ্যমে সরকারী জমি বা খাস জমি দখল করা হয়। আর এই দখল কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন সরকারী কর্মকর্তারা। ভূমি দফতরের তহশিলদার, সার্কেল অফিসার (রাজস্ব), পরবর্তী সময়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং জেলা প্রশাসকের যোগসাজশে ভুয়া পত্তনি নথি তৈরি করে নদী-বিল-বাঁওড়-এর জমি দখল করেছে প্রভাবশালী ব্যক্তি তথা ভূমিদস্যুরা। রাজস্ব দফতরের অনেক অফিসারও এসব জমির ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে নিজেরাও দখল করেছে। সরকারী জমি বা রাষ্ট্রের জমি বেদখল হয়েছে সরকারী কর্মকর্তাদের অপকর্মের কারণে। যাদের ওপর সরকারী জমি দেখভালের দায়িত্ব ছিল তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেননি। অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে সরকারী জমি বেহাত হওয়ার প্লট তৈরি করে দিয়েছেন তারা এমন কথা সর্বজনবিদিত বা স্বীকৃত। ২০০৯ সালে নদী রক্ষার জন্য একটি বেসরকারী সংস্থা হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। এরপর সরকার ২০১৩-এর ২২ জুলাই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন পাস করে। আইনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য একই বছর ৩ আগস্ট জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন গঠন করা হয়। চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয় কমিশনে। কাজ শুরু হয়েছে দুদিন পর ৫ আগস্ট থেকে। নদী রক্ষা কমিশনের একটি দল সম্প্রতি পাবনা পরিদর্শন করে। কমিটির সম্মানিত সদস্যগণ উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়নের জন্য বড়াল নদী সরজমিনে দেখেন। বড়াল দখল হয়ে গেছে। নদী দখল করে আঁড়াআঁড়ি বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। এখন বাঁধ অপসারণ করে নদীর গতিপথ ঠিক রাখার কাজ করছে নদী রক্ষা কমিশন। নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানসহ পানি সম্পদমন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী দু’জনই পাবনার সাংবাদিকসহ সিভিল সোসাইটির সঙ্গে পাবনা সার্কিট হাউসে মতবিনিময় করেন। পাবনার সকল স্তরের মানুষ ইছামতি নদী রক্ষার দাবি জানায়। এরপর গত হয়েছে প্রায় ৯ মাস। ইছামতি নদীর ব্যাপারে নদী রক্ষা কমিশন কোন কাজ করেনি। হয়ত তারা তখন ইছামতি নিয়ে কাজ করবে বা মাথা ঘামাবে যখন উচ্চ আদালত আবার একটি আদেশ-নির্দেশ দেবে। নদী উদ্ধারের জন্য পাবনাবাসী সোচ্চার। কিন্তু পাবনাকে যারা নিয়ন্ত্রণ করে, পাবনার সকল প্রতিষ্ঠান যারা নিয়ন্ত্রণ করে তারা ততটা সোচ্চার নন। কারণ ‘ডাল মে কুছ কালা হ্যায়’। তারা নদীর জমি দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করার ব্যাপারে কথা বলেন না। তাদের সঙ্গে একই সুরে কথা বলেন মেরুদ-হীন কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী। তারা বলেন ‘নদীতে পানি আনতে হবে, নদীর আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে।’ এখানেই তো আসল রহস্য। মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে প্রবাহিত করার নক্সা। কূপের মধ্যে মরা সাপ-ব্যাঙ ইতাদি রেখে নদী পরিষ্কার করার প্রকল্প! ঢাকার চতুর্দিকের চারটি নদীর জমি উদ্ধারে সরকার বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে উদ্ধার কাজে বহু সাফল্য অর্জিত হয়েছে। অব্যাহত আছে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতটা আন্তরিক ততটা আন্তরিক যদি হতেন তাঁর দলের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা এবং সরকারী কর্মকর্তাগণ তা হলে নদী-বিল-বাঁওড়ের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ সহজতর হতো। এখানেই যত বিপত্তি। বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের পারিবারিক স্বার্থ, গোষ্ঠী স্বার্থ এবং সরকারী কর্মকর্তাদের পকেটস্বার্থ জড়িত। সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য এভাবেই বাস্তবায়ন হয় না। জনগণ বা দেশ গোল্লায় যায়, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ হয়! এ ব্যাপারে পাবনার বর্তমান জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন। কারণ, পাবনা শহরের সরকারী জমি বা অর্পিত অনাগরিক সম্পত্তি বেহাত হয়েছে। আর এই বেহাতের জন্য সরাসরি দায়ী জেলা প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা। সাবেক এক জেলা প্রশাসকের সময়ে শহরের কয়েক কোটি টাকার বাড়ি (সাবেক দুর্নীতি দমন অফিস) সরকারের বেহাত হয়েছে। তারও আগে একইভাবে শহরের প্রায় ডজন দুয়েক বাড়ি সরকারের হাতছাড়া হয়ে গেছে। ভুয়া বা জাল দলিল, জাল আমলনামা এবং জাল ওয়ারিশনামা তৈরি করে পরিত্যক্ত বাড়ি দখল করেছে ভূমিগ্রাসীরা। আদালতে মামলা করে একতরফা রায় নিজেদের অনুকূলে নিয়ে পাকা বাড়িসমূহ দখল করেছে এবং তা বিক্রিও করে দিয়েছে। অর্পিত অনাগরিক সম্পত্তি এভাবে দখলের প্রক্রিয়া এখনও চলছে। শহীদ বুলবুল কলেজের জন্য ছাত্রাবাস হিসেবে চিহ্নিত পরিত্যক্ত বাড়িটিও একতরফা রায়ে অবৈধ দখলে চলে যাচ্ছে! পাবনা শহরের প্রায় এক ডজন বাড়ি দখলের জন্য মামলা চলছে নিম্ন ও উচ্চ আদালতে। এর মধ্যে অন্যতম সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক বাড়ি সংলগ্ন মঞ্জুশ্রী দেবীদের বাড়ি (এই বাড়িটি আগে শিশু একাডেমির কার্যালয় ছিল)। বাড়িটিতে একটি নোটিস ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে ‘আদালতে মামলা বিচারাধীন’। হয়ত এক সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সরকারের হাতছাড়া হয়ে যাবে সেটিও। বর্তমান জেলা প্রশাসক সাহস করে সত্য উচ্চারণ করতে পেরেছেন। তিনি ইছামতি নদী রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি তো মনে করতে পারতেন কি দরকার ঝামেলা কাঁধে নেবার। চাকরি করতে এসেছি, করে চলে যাব। না, তিনি তার ওপর সরকার কর্তৃক অর্পিত মহান দায়িত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেই নদী রক্ষার ডাক দিয়েছেন। পাবনাবাসী চায় তিনি শক্ত হাতে বিষয়টি নিয়ে অগ্রসর হবেন। যারা পাবনার মানুষকে জিম্মি করে তাদের পদানত রেখে সকল প্রতিষ্ঠান দখলে রাখবেন মনে করেন তারা হয়ত সাময়িকভাবে সফল হবেন। তবে এমন এক সময় আসবে যখন তাদের পায়ের নিচে মাটি থাকবে না। পাবনার গণমানুষের কল্যাণে কোন উন্নয়নমূলক কাজ না করলেও চক্রটি পাবনার জনহিতকর প্রাচীন প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের কবলে রেখেছেন কৌশলে। সকল দেশের ধনকুবেররা তাদের এলাকার গণমানুষের জন্য উন্নয়নমূলক বা জনহিতকর কাজ করে থাকেন। আমেরিকার ফোর্ড, বিল ক্লিনটন, বিল গেটস, ভারতের মিত্তাল কিংবা টাটা এবং বিড়লা তার উদাহরণ। এমনকি আমাদের দেশেও এমন উদাহরণ ভূরি ভূরি। জহুরুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তি। তিনি তার জন্মভূমি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে স্কুল, কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। আমরা জানি শিক্ষাদান হচ্ছে বড় দান। আমাদের পাবনার ধনাঢ্যদের কাজ! তারা কি করছেন? জনগণ সবই দেখছে। ধনাঢ্যদের যে সামাজিক দায়িত্ব থাকতে হয় বা রাখতে হয় তা প্রায়শই রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলে থাকেন। বঙ্গবন্ধুও তাঁর বক্তৃতা-বিবৃতিতে সামর্থ্যবান বা বিত্তবানদের সামাজিক কর্মকা-ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাতেন। এটি সকল ধর্মেও উল্লেখ আছে। পাবনাবাসীর প্রাণের দাবি নদী দেশ-জনতার সম্পদ, এটি উদ্ধার হোক। আর এই মহৎ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। জেলা প্রশাসক অবশ্যই অবগত আছেন দুর্নীতিবাজরা যতই শক্তিশালী হোক তারা জনগণের শক্তির কাছে তুচ্ছ। মনে রাখা দরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নদী উদ্ধারে সচেষ্ট। লেখক : সাংবাদিক [email protected]
×