ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন-বাসে কোথাও নেই খালি

নাড়ির টানে ছুটছে বাড়ি

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

নাড়ির টানে ছুটছে বাড়ি

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ঈদে ঘরমুখো মানুষের টার্গেট গন্তব্যে পৌঁছা। নাড়ির টানে বাড়ি যেতে ট্রেনে, বাসে যে যেভাবেই সম্ভব গন্তব্যে পৌঁছুতে যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। রেল স্টেশনে ট্রেনের কোচের ভেতর কোন জায়গা নেই। উঠে দাঁড়িয়েছে দরজার সিঁড়িতে, ট্রেনের সংযোগস্থলে ও মই বেয়ে ছাদে। তারপরও যেতে হবে। জীবনের ঝুঁকি হাতে নিয়েই ট্রেনের ছাদে যারা চড়েছেন তারা বৃষ্টির তোয়াক্কা না করেই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার দৃঢসংকল্প। চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে ১০টি আন্তঃনগর ট্রেন ছাড়াও মেইল ও এক্সপ্রেস ট্রেন এমনকি ঈদ উপলক্ষে স্পেশাল ট্রেনে চড়ে বাড়ি ফিরছেন। অপরদিকে, যারা ট্রেনের সুবিধা পাচ্ছেন না তারা বাসে চড়ে বা নিজস্ব পরিবহনে চট্টগ্রাম ত্যাগ করছেন। অপরদিকে, সারা বছর যাত্রীদের জন্য ট্রেনের কোচ মেরামত করায় অন্তত ঈদের যাত্রায় সরকারের পক্ষ থেকে ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়েছে শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য। টিকেটে নয়, ঈদ স্পেশাল ট্রেনগুলো মূলত রেল কর্মচারীদের গন্তব্যে পৌঁছার জন্য দেয়া হয়েছে পাসের বিনিময়ে। এছাড়াও বিভিন্ন ট্রেনের সঙ্গে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হয়েছে কর্মচারীদের জন্য। এক্ষেত্রে রেল কর্মচারীরা তাদের সুনির্দিষ্ট পাসের মাধ্যমে যাতায়াতের সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক কর্মচারীই বছরে ৬ সেট ডাবল পাস ও ১২ সেট সিঙ্গেল পাস পেয়ে থাকেন। প্রত্যেক দফতর থেকে এসব পাস কর্মচারীদের জন্য ইস্যু করা হয়। এ প্রসঙ্গে পাহাড়তলীর রেলওয়ে কারখানা ব্যবস্থাপক (নির্মাণ) সাদেকুর রহমান বলেন, ঈদ স্পেশাল ট্রেনে রেল কর্মচারীরা পাসের মাধ্যমে চলাচল করতে পারেন। কোনভাবেই এ ধরনের কর্মচারীদের বিনা টিকেটে যাচ্ছে বলার সুযোগ নেই। কারণ, চাকরির সুবাদে প্রত্যেক রেল কর্মকর্তা-কর্মচারী এ সুবিধা পেয়ে থাকেন। চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৭টায় সুবর্ণা এক্সপ্রেস যেমন যাত্রীতে ঠাসা, তেমনি বিকেল ৫টার মেঘনা এক্সপ্রেসেও যাত্রী দাঁড়ানোর ঠাঁই নেই। তবে শুধুমাত্র রাতের ট্রেনগুলোতে ঝুঁকি নিয়ে ছাদে ওঠার প্রবণতা অনেকটা কম। বিশেষ করে সিলেট রুটের উদয়ন ও জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনে ঝুঁকি নিচ্ছে না যাত্রীরা। তবুও ট্রেনের ভেতরে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। ঠাসাঠাসি করে হলেও গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে যাত্রীরা। টার্গেট ঈদ। পরিবার পরিজন নিয়ে ট্রেনে গাদাগাদি করে গেলেও স্বজনদের সঙ্গে মেলামেশার আনন্দটাই আলাদা। ঢাকাগামী ট্রেনগুলোতে এবার চাপ অনেকটা কম। এর কারণ হচ্ছে ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন থাকায় এ চাপ কমেছে। কারণ, সরাসরি এখন বিজয় এক্সপ্রেসে ময়মনসিংহ যাওয়া যায়। ফলে উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের চাপ এক-তৃতীয়াংশ কমেছে এ ট্রেনের কারণে। এরপরও ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে এ বছর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন যোগ হওয়ায় অনেক সুবিধা ভোগ করছে ঢাকাগামী যাত্রীরা। তবে চাঁদপুরগামী একটি লোকাল ট্রেন সাগরিকা এক্সপ্রেস ও একটি মাত্র আন্তঃনগর ট্রেন মেঘনা এক্সপ্রেস হওয়ায় বিশেষ করে বরিশাল রুটের যাত্রীরা এ ট্রেনটিকে টার্গেট গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এছাড়াও লাকসাম থেকে চাঁদপুরগামী আরও দুটি স্পেশাল ট্রেন থাকায় অনেকে চট্টগ্রাম থেকে লাকসামে লোকাল অথবা এক্সপ্রেস ট্রেনে পৌঁছে সেখান থেকে চাঁদপুর পৌঁছার চেষ্টা করছে। মূলত চাঁদপুর যাওয়ার বেশিরভাগ যাত্রীই হচ্ছে বরিশাল, ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের লোকজন। অপরদিকে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে বাস রুটে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন অনেক ভাল। বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল বেড়ে যাওয়ায় যাত্রীদের ভোগান্তি নেই। এরপরও স্বল্প সময়ের যাত্রায় অলঙ্কার মোড় থেকে বাসের ছাদে চড়েও অনেকে গন্তব্যে পৌঁছার চেষ্টা করছে।
×