ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় টি২০তে ৪ উইকেটের জয়ে লঙ্কানদের ‘হোয়াইটওয়াশ’ করল অসিরা, ঝড়ো হাফ সেঞ্চুরিতে (২৯ বলে ৬৬) ‘নায়ক’ গ্লেন ম্যাক্সওয়েল

বিদায় তিলকারত্নে দিলশান

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিদায় তিলকারত্নে দিলশান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেট বিধাতার খেলা বোঝা দায়। শ্রীলঙ্কা তো বটেই, তিলকারতেœ দিলশান আধুনিক সময়েরই সফল ব্যাটসম্যান। সতের বছরের ক্যারিয়ারে দারুণ সব উদ্ভাবনী শট খেলে ক্রিকেটপ্রেমী মানুষকে মুগ্ধ করেছেন। দিলস্কপের প্রবক্তা তিনি। ইতিহাসে তিন ভার্সনে সেঞ্চুরি রয়েছে এমন ব্যাটসম্যান হাতে গোনা, দিলশান তাদেরই অন্যতম। ব্যক্তিগত ও দলীয় দুই ক্ষেত্রেই সেই দিলশানকে বিদায় নিতে হলো একরাশ হতাশা সঙ্গী করে। শুক্রবার কলম্বোয় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জীবনের শেষ টি২০তে নিজে আউট হয়েছেন ১ রান করে। ৪ উইকেটের হারে তার দল শ্রীলঙ্কা সিরিজে ‘হোয়াইটওয়াশ’ ২-০ ব্যবধানে। এই সিরিজেই ওয়ানডেকে বিদায় জানিয়েছেন, সেটিতেও হারে এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজরা। বিদায় বেলায় লঙ্কান ক্রিকেটের ভবিষ্যত নিয়ে আশার বাণী শুনিয়েছেন ৩৯ বছর বয়সী এ তারকা। বলেছেন, দ্বীপ-দেশটির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্বিত তিনি। ‘সতের বছরের ক্যারিয়ারে শ্রীলঙ্কা দলের সঙ্গে এমন কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছি যা কখনই ভুলতে পারব না। যেমন অভিষেকের কথা বলতে পারি, লর্ডসে সেঞ্চুরিও ছিল বিশেষ কিছু। কি পাইনি তা নিয়ে ভাবতে চাই না, যা পেয়েছি তাতেই খুশি। আমার বিশ্বাস শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট আবার ঘুরে দাঁড়াবে। এখানে প্রতিভাবান ক্রিকেটারের অভাব নেই। ওদের সময় দিতে হবে। ধনঞ্জয় ডি সিলভা, কুশল মেন্ডিজ ও দীনেশ চান্দিমালের ভেতর অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা, মুত্তিয়া মুরলিধরনসহ অনেক গ্রেট ক্রিকেটারকে পাশে পেয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তা ও আমার পরিবারকে। যাদের কারণে দেশের হয়ে সেবা করতে পেরেছি।’ কলম্বোয় বিদায়ী ম্যাচ শেষে বলেন দিলশান। তবে চান্দিমাল বাহিনী এই তারকাকে বিদায় বেলায় জয় উপহার দিতে পারেনি। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামার সময় দিলশানকে ব্যাট উুঁচিয়ে ‘গার্ড অব অর্নার’ দেন সতীর্থরা। কিন্তু ৩ বল মোকাবিলায় ১ রান করে জন হ্যাস্টিংসের বলে ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন দিলশান। একমাত্র হাফ সেঞ্চুরি ধনঞ্জয় ডি সিলভার (৫০ বলে ৬২), কুশল পেরেরা করেন ২২ রান, আর কেউ দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। অসিদের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন জেমস ফকনার (৩/১৯), এ্যাডাম জাম্পা (৩/১৬) ও হ্যাস্টিংস (২/২৩)। জবাবে আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এদিন হাফ সেঞ্চুরির পথে প্রতিপক্ষকে বেসামাল করে তোলেন। ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ২৯ বলে ৬৬ রান করে আউট হন তিনি। এক সময় তার রান ছিল ১৪ বলে ৩০। সেখান থেকে টানা দুটি ছক্কা ও দুটি করে চার হাঁকিয়ে ১৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন! ১২ বলে ৫০ করে অবশ্য দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ডটি যুবরাজ সিংয়ের (২০০৭)। ২৫ রান করে আউট হন অধিনায়ক ওয়ার্নার। ১৭.৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৪-১এ ওয়ানডে জয়ে টেস্ট ব্যর্থতার (৩-০) কষ্ট আগেই ভুলেছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এবার তারা টি২০ সাফল্যে শ্রীলঙ্কা সফর শেষ করল। সিরিজসেরাও হয়েছেন ওয়ার্নার। দিলশানকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৮৭ টেস্টে ৫৪৯২ রান করেছেন, সেঞ্চুরি ১৬টি। ৩৩০ ওয়ানডেতে ২২ সেঞ্চুরির সাহায্যে ১০২৯০ রান। ৮০ টি২০তে ১ সেঞ্চুরি ও ১৩ হাফ সেঞ্চুরিসহ করেছেন ১৮৮৯ রান। ২০১৩ সালে টেস্ট থেকে অবসর নেয়া দিলশান ২০০৯-এ টি২০ র‌্যাঙ্কিংয়ে ব্যাটসম্যানদের তালিকায় শীর্ষে ওঠেন। গত বছর অলরাউন্ডার হিসেবেও এক নম্বরে জায়গা করে নিয়েছিলেন। চার বার (২০০৯, ২০১১, ২০১৩, ২০১৫) জায়গা পেয়েছেন আইসিসির সেরা ওয়ানডে দলে। ২০০৯ বিশ্বকাপে উইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৭ বলে ৯৬ রানের ম্যারাথন ইনিংসের জন্য টি২০তে সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কার পান। শ্রীলঙ্কার টি২০ বিশ্বকাপ জয়ে (২০১৪) ছিলেন দলের সঙ্গী হিসেবে, দু’বার খেলেছেন ফাইনালে (২০০৯, ২০১২)।
×