ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লাব্বায়েক আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

লাব্বায়েক আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক

অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম রফিক ॥ আজ ৬ জিলহজ। পবিত্র হজ ও তৎসংশ্লিষ্ট ওমরাহ পালনের মৌসুম। এ মাস ছাড়াও অন্যান্য মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলমানরা ওমরাহ পালন করে। বর্তমানে আমাদের দেশ থেকে যেভাবে প্রচুর সংখ্যক হজযাত্রী হজে যাচ্ছেন তেমনি প্রতিমাসে ওমরাহযাত্রীও কম নয়। আমাদের ওমরাহযাত্রী ভাইবোনরা প্রায়শই ওমরাহযাত্রার নিয়মকানুন সম্পর্কে জানতে চান। ওমরাহ পালনকারীর জন্য একটি মজার ও হৃদয় নিঙরানো জিয়ারত হলো মদিনা শরীফ গমন করা। তাই হজ ও উমরার সময় রাসূলের শহর মদিনা শরীফ জিয়ারতের আদব ও নিয়মকানুন নিচে তুলে ধরা হলো। মদিনা শহর নবীজী ও তাঁর পুণ্যাত্মা মহান সাহাবাদের ত্যাগ ও পদধূলিতে ধন্য শহর। এর সৌন্দর্য ও পবিত্রতার অনুভবই আলাদা। মদিনা সফরে আল্লাহর হাবীবের (স) প্রিয় উম্মতদের বৈশিষ্ট্যই হলো সর্বাধিক আদব ও ভক্তি প্রদর্শন করা। তাই এ শহরে উপস্থিত হওয়ার পর সকল স্থানে ধীরে ধীরে আদবের সাথে চলতে হয়। মনে রাখতে হবে যে, এ সকল স্থানে রাসূলুল্লাহর (সা) পা মোবারক পড়েছে। সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে যে, বেয়াদবীর দায়ে পড়ে জিয়ারতের সওয়াব যেন হারাতে না হয়। মনে রাখতে হবে রাসূলুল্লাহর (সা) সাহাবীগণ কিভাবে আদবের সাথে চলতেন, ভয় রেখে কথা বলতেন। আফসোস্ করতে করতে আল্লাহর দরবারে দোয়া করতে হবে: ইয়া আল্লাহ, আমি তো দুনিয়াতে তোমার হাবীব ও তাঁর সাহাবীগণের দর্শন লাভ করতে পারিনি, আখিরাতে তুমি আমাকে তাঁদের নিকট হতে বঞ্চিত করো না পবিত্র মদিনা নগরীতে বাস ঢুকলে আর আপনাদের চোখে মসজিদে নববীর মিনার চোখে পড়লে মহানবীর ওপর দরুদে ইবরাহিমী পড়ুন। বাস থেকে নেমে পূর্ব প্রদর্শিত নিয়ম অনুযায়ী প্রথমেই হোটেলে উঠুন। প্রয়োজনে একটু বিশ্রাম করুন। ভাল পোশাক-আশাক পড়ে মসজিদে নববীতে নামাজ আদায় করতে যান। নামাজ শেষ হলে ২১Ñ২৩নং গেট হয়ে বাবে আবদুল মজিদ দিয়ে সোজা সামনের দিকে গেলেই সামনেই পড়বে হুজুরের রওজা শরীফ। অন্যদের দেখাদেখি দাঁড়িয়ে জিয়ারত করুন। প্রথমেই সালাম দিন নবীজীকে। তারপর হযরত আবু বকরকে (রা)। তারপর হযরত উমরকে (রা)। এর পর সমস্ত নবী রাসূল, নবীজীর পরিবারবর্গ, সাহাবায়ে কেরাম, শুহাদায়ে কেরাম, জান্নাতুল বাকীর মেহমানবৃন্দ ও নিজের ময়মুরুব্বিদের স্মরণ করতে পারেন। দোয়া ও সালাম পেশের নমুনা ॥ রাসূলুল্লাহর (সা) রওজা মোবারকের সামনে বলতে হবে, হে আল্লাহ্! তুমি আমাদের সর্দার, দোজাহানের বাদশাহ, তোমার হাবিব, আকায়ে নাম্দার, সারওয়ারে ক্বায়েনাত, তাজেদারে মদিনা মোহাম্মদুর রাসূলুল্লার্হ (সা) ওপর দরুদ-সালাম আর বরকত নাযিল কর। হে আল্লাহ্ তোমার নিকট প্রার্থনা রাসূলুল্লাহ্র (সা) উসিলায় আমাকে কামেল অটল ঈমানদান কর- যা হবে স্থায়ী আর যার ফলে তুমি আমার অন্তরে গেঁথে যাবে, আমাকে সাচ্চা ইয়াকীন, উপকারী এলেম, তাকওয়াপূর্ণ অন্তর, তোমার যিকিরকারী জিহ্বা, নেক্কার সন্তান, হালাল জীবিকা নসীব কর, নসীব কর সত্যিকার তওবাহ্, উত্তম ধৈর্য, বিপুল সওয়াব, এমন নেক আমল-যা কবুল হবে, এমন ব্যবসা যাতে ক্ষতি নেই, মুসলমান হিসেবে মৃত্যু এবং তোমার খাস রহমতে নেক বান্দাদের সাথে শামিল করিও। হে শ্রেষ্ঠতম দয়ালু, হে বিশ্ব প্রতিপালক, আমাদের হাজত পুরা কর, কাজ আসান কর, জিয়ারত কবুল কর, ভয় দূর কর, বক্ষ ঈমানি নূর দিয়ে প্রসারিত কর, দোষ গোপন কর, গোনাহ্ মাফ কর, দুঃখকষ্ট দূর কর এবং নেক আমলের মধ্য দিয়ে জীবনের অবসান ঘটাও। সালাম পাঠ করার নিয়ম- আস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলাইকা আইয়ুহান্নাবী, ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু। আস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ। আস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলাইকা ইয়া নবী আল্লাহ্। আস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলাইকা ইয়া হাবীবাল্লাহ। আস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলাইকা ইয়া খায়রা খালকিল্লাহ। আস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলাইকা ইয়া সাইয়িদাল মুরসালিন। আস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলাইকা ইয়া খাতমান নাবীয়্যিন। আস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলাইকা ইয়া রাহমাতাল্লিল আলামীন। আস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলাইকা ইয়া শাফীয়াল মুযনিবীন। আস্সালামু আলাইকা ইয়া খালিফাতি রাসূলুল্লাহি আবু বকর (রা)। আস্সালামু আলাইকা ইয়া আমীরাল মু’মিনীন উমর ফারুক (রা)।
×