ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভুটানের সঙ্গে লজ্জার ড্র বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ভুটানের সঙ্গে লজ্জার ড্র বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্বস্তির ড্রতে হাঁফ ছেড়ে বাঁচল বাংলাদেশ। আরেকটু হলেই তো হড়কে যাচ্ছিল পা। অল্পের জন্য বেঁচে ইজ্জত রক্ষা করল টম সেইন্টফিটের শিষ্যরা। এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্স (প্লে অফ) ম্যাচে মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশ গোলশূন্য ড্র করে ভুটানের সঙ্গে (প্রথম লেগের ম্যাচ)। আগামী ১০ অক্টোবর ভুটানের থিম্পুতে অনুষ্ঠিত হবে ফিরতি ম্যাচ। কথায় আছে, ‘খালি কলসি বাজে বেশি।’ সেইন্টফিটের শিষ্যদের খেলা দেখে তেমনটাই মনে হয়েছে। প্রতিপক্ষের সীমানায় তেড়ে-ফুঁড়ে বাংলাদেশ দল বার বার হানা দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু ‘মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত’-এর মতোই তাদের আক্রমণের ধার হারিয়ে যায় প্রতিপক্ষের ডি বক্সের কাছে গিয়েই। ফলে বার বার মৃত্যু ঘটেছে গোল সম্ভাবনার। বল নিয়ন্ত্রণ প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশি হলেও বাংলাদেশের খেলা ছিল সামগ্রিকভাবে ছন্নছাড়া। ছিল না কোন গেমপ্ল্যান। কাদার কারণে মাঠ পিচ্ছিল ছিল। তবে সেটা কোন অজুহাত হতে পারে না। কারণ ভুটান দলকেও তো একই মাঠে খেলতে হেয়েছে। বরং মনে হয়েছে ফিটনেসে ও দমের বিচারে তাদের চেয়ে তুলনামূলক পিছিয়ে ছিল স্বাগতিকরাই। একের পর এক গোলের সুযোগ নষ্ট করে জাতিকে তারা যেমন হতাশ করেছেন, তেমনি ভুটানের বার বার কাউন্টার এ্যাটাকগুলোর ক্ষিপ্রতা-ভয়াবহতা নিদারুণ স্নায়ুচাপেও ভুগেছে বাংলাদেশী ফুটবলপ্রেমীরা। বাংলাদেশে দলের ফরোয়ার্ডরা ব্যর্থ হলেও রুবেল মিয়া ছিলেন স্বমহিমায় উজ্জ্বল। তিনিই একমাত্র ভাল খেলে প্রতিপক্ষের রক্ষণে আতঙ্ক ছড়াতে সক্ষম হন। সবচেয়ে বেশি ব্যর্থ ছিলেন ফরোয়ার্ড শাখাওয়াত হোসেন রনি। প্রচুর গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন তিনি। ভুটানের গোলরক্ষক হরি গুরং অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করে বেশ কটি আক্রমণ রুখে দেন। প্লে অফে গত ২ ও ৭ জুন তাজিকিস্তানের সঙ্গে যথাক্রমে ০-৫ এবং ০-১ গোলে হারে বাংলাদেশ। হারলেও আরেকটা ‘লাইফ লাইন’ পায় বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ ভুটানের বিপক্ষে। ভুটানকেও যদি হারানো না যায়, তাহলে আগামী তিন বছরÑ অর্থাৎ ২০১৯ সাল পর্যন্ত এএফসি আয়োজিত কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলতে পারবে না বাংলাদেশ। আর হারাতে পারলে বাছাইপর্বে খেলতে পারবে বাংলাদেশ। তাজিকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই হলুদ কার্ড দেখার কারণে ভুটানের বিপক্ষে প্রথম লেগের ম্যাচে খেলতে পারেননি মিডফিল্ডার জামাল ভূঁইয়া। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ভুটানের সঙ্গে ৬ ম্যাচ খেলেছে। তাতে জয়ের পাল্লা ভারি বাংলাদেশেরই। তারা জিতেছে ৪ ম্যাচেই। বাকি ২ ম্যাচ ড্র হয়। সর্বশেষ ম্যাচেও জয় বাংলাদেশের, ৩-০ গোলে, গ্রুপ পর্বে, সাফ সুজুকি কাপে, ভারতের কেরলে। মঙ্গলবার ভুটানের বিপক্ষে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটি বজায় রাখতে সক্ষম হলো বাংলাদেশ। তাও কোনক্রমে। পরিসংখ্যান মোতাবেক বাংলাদেশেরই ম্যাচে ফেবারিট হওয়ার কথা, কিন্তু গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ দলের মালদ্বীপে গিয়ে প্রীতি ম্যাচে তাদের জাতীয় দলের কাছে ০-৫ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া এবং গত ২৫ আগস্ট এএফসি কাপের প্লে অফ ম্যাচে ভুটানের থিম্পুতে ভুটানী ক্লাব এফসি টারটনের কাছে ৪-৩ গোলে বাংলাদেশের শেখ রাসেলের হেরে যাওয়ায় গতকালের ম্যাচে বাংলাদেশ আদৌ জিততে পারবে কি না, এ নিয়ে তৈরি হয় সংশয়। তার ওপর মামুনুল ইসলামসহ নিয়মিত দলে না থাকা সিনিয়র একাধিক ফুটবলারের ঠাঁই হয়নি, দলের বেলজিয়ান কোচ টম সেইন্টফিটের চূড়ান্ত ২৩ জনের দলে। ৭ মিনিটে প্রথম কর্নার পেয়েছিল বাংলাদেশ। আব্দুল্লাহর মাপা কর্নার পড়ে পোস্টের খুব কাছেই। ১৫ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে রুবেল মিয়ার ক্রস বক্সে পান রনি। গোলরক্ষককে একা পেয়েও নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। ২১ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে রুবেল মিয়ার ক্রসে দুর্দান্ত হেড নেন রনি। তবে বল ফিরিয়ে দিয়ে নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে দলকে বাঁচান ভুটানের গোলরক্ষক হরি গুরং। দ্বিতীয়ার্ধেও গোল মিসের মহড়া অব্যাহত রাখে বাংলাদেশ। রনি ও তপুর একাধিক প্রচেষ্টা নসাত হয়। ভুটানও বেশ কটি আক্রমণ করে। তবে বাংলাদেশ ডিফেন্ডারদের দৃঢ়তায় তা গোলে পরিণত হয়নি।
×