ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কেরানীগঞ্জে আগামী বছর জবি শিক্ষার্থীদের হল নির্মাণ শুরু

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কেরানীগঞ্জে আগামী বছর জবি শিক্ষার্থীদের হল নির্মাণ শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কেরানীগঞ্জে আগামী বছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হল নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। মন্ত্রী জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গায় ১০তলার একটি হল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওই হলে এক হাজার ছাত্র থাকতে পারবেন। এছাড়া ছাত্রীদের জন্য নির্মাণাধীন হলের কাজ চলছে। রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়। এ সময় শিক্ষা সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোন সমস্যার হঠাৎ সমাধান করা যায় না। ইতোমধ্যে জবির জন্য ২৭৪ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, যা ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। এর আওতায় কেরানীগঞ্জে ২৫ বিঘা জমির ওপর ১০তলা বিশিষ্ট আবাসিক ছাত্রাবাস, শিক্ষকদের আবাসন প্রকল্প, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান ছাত্রী হোস্টেলকে ১৭তলা ও ২০তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি ঝিলমিল ও পূর্বাচল এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন জায়গাও খোঁজা হচ্ছে। পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায় হল নির্মাণের দাবির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় কারাগারের ওই জমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নয়। এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা সরকারের জায়গা। এখানে হল নির্মাণের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কিছু করার নেই। এই জায়গায় হল নির্মাণের বিষয়টি সম্পূর্ণই সরকারের বিবেচনার বিষয়। গত মাসের শুরু থেকেই হলের দাবিতে আন্দোলন করছে জবি শিক্ষার্থীরা। পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায় তারা আবাসিক হল নির্মাণের দাবি তোলেন। এ জন্য তারা সমাবেশ, ছাত্র ধর্মঘট, অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচী পালন করেছে। বৈঠকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে যে সমস্ত ভবন অন্যের দখলে রয়েছে বলে শোনা যায়, সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়। সেগুলো সাবেক জগন্নাথ কলেজের নামে বরাদ্দ হওয়া ছোট ছোট কিছু বাড়ি। যার সংখ্যা পাঁচ থেকে ছয়টি। সেখানে কোন হল নির্মাণ করা সম্ভব নয়। শ্রেণীকক্ষ পাঠদানকে আকর্ষণীয় করার তাগিদ শিক্ষামন্ত্রীর ॥ নতুন উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে শ্রেণীকক্ষ পাঠদানকে আকর্ষণীয় করার জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ডিজিটাল ক্লাসরুম সলিউশন (স্মার্ট বোর্ড) প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান। শ্রেণীকক্ষের পাঠদানকে সহজবোধ্য ও আকর্ষণীয় করতে তাৎক্ষণিক বিভিন্ন ছবি, সার্ট, ইমেজ প্রভৃতি প্রদর্শনে সক্ষম ডিজিটাল প্রযুক্তির শিক্ষা উপকরণ-স্মার্ট বোর্ড সরবরাহ করা হয়েছে এমন ৫১টি স্কুল থেকে আগত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণ কর্মশালা থেকে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষক ও অতিথিবৃন্দ সাভার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষাদানে স্মার্ট বোর্ডের ব্যবহার অনলাইনে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন। শিক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় আধুনিক শিক্ষাদান পদ্ধতি আত্মস্ত করতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রযুক্তি এবং মানবসম্পদ একইতালে এগোতে হবে। বিশ্বায়নের এ যুগে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে খাপখাওয়াতে না পারলে আমরা টিকতে পারব না। নতুন প্রজন্মকে বিশ্বমানের জ্ঞান, দক্ষতা, প্রযুক্তিতে পারঙ্গম করতে না পারলে আমরা আরও পিছিয়ে যাব। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করতে দেশের ২৪ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম গড়ে তোলা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে আইসিটি প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় আইসিটি সেবা সহজলভ্য করতে সকল উপজেলায় উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং এ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন (ইউআইটি আরসিই) নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নির্মিত এ ধরনের ১২৫টি ইউআইটি আরসিই পুরোদমে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি এ্যান্ড একসেস এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্টের পরিচালক ড. মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিক্ষা সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ এবং রহিম আফরোজ লিমিটেডের উপদেষ্টা সাবেক সচিব ড. মাহবুবুর রহমানও বক্তৃতা করেন।
×