ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বেতাগীতে পাষণ্ড স্বামীর নির্যাতনে স্কুলছাত্রী হাসপাতালে

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বেতাগীতে পাষণ্ড স্বামীর নির্যাতনে স্কুলছাত্রী হাসপাতালে

নিজস্ব সংবাদদাতা, বরগুনা, ২ সেপ্টেম্বর ॥ দফায় দফায় নির্যাতন সয়ে স্বামীর হাত-পা ধরেও মেলেনি শারমিন আকতার নিপার নির্বিঘ্নে পথ চলার নিশ্চয়তা। তিনি বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের আবুল হোসেন হাওলাদারের মেয়ে ও বেতাগী গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজের ভোকেশনাল শাখার ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ভালবাসার কথা বলে যে যুবক বিয়েতে বাধ্য করেছিল সেই স্বামীই আজ জীবনের কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। নিপা জানান, সদর ইউনিয়নের ভোলানাথপুর গ্রামের আবদুস সোবহানের ছেলে সানোয়ার হোসেনের সঙ্গে গত জানুয়ারি মাসে পরিবারের চাপে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের পিড়িতে বসেন। বিয়ের ১০ দিনের মাথায় স্বামী সানোয়ার হোসেন অর্থ দাবি করে। নিপা তৃতীয়বারে শ্বশুরবাড়ি গেলে টাকা না নিয়ে যাওয়ায় শুরু হয় লাথি, ঘুষি। এক পর্যায়ে ঘাড় ধরে খাট থেকে ফেলে দেয়া হয়। এর পর থেকেই স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা নানাভাবে নির্যাতন চালাতে থাকে। নিপা জানান, একাধিকবার তাকে নির্যাতনের পর বাবার বাড়ি যেতে চাইলে পা গুঁড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এদিকে স্কুল ছাড়তেও বাধ্য করেন স্বামী। ক্লাসে যেতে বাধা দিয়ে ভবিষ্যতে নিজের পায়ে যেন না দাঁড়াতে পারি সে স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। ৮ মাসের বৈবাহিক জীবনে মাত্র ২ মাস কেটেছে শ্বশুরবাড়ি। স্বাামীর নির্যাতন এড়াতে মেয়ের লেখাপড়ার ইচ্ছায় গেল ঈদ-উল-ফিতরের পর থেকে নিজ বাড়িতে রেখেই নিপাকে লেখাপড়া করাচ্ছিলেন বাবা আবু হাওলাদার। কিন্ত সোমবার সকাল ৭টার দিকে বাড়ি থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসার পথে বেতাগী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের হিজলতলা এলাকায় পৌঁছলে রাস্তায় পরে থাকা জ্বালানি কাঠ দিয়ে বেধড়ক আঘাত করে সানোয়ার। এতে নিপার মাথা, হাত ও পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ও তার সাথে থাকা একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বান্ধবী রেমিজাও আহত হয়। আহতদের বেতাগী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ইকবাল হোসেন জানান, নিপার স্বাস্থ্যের অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হলেও মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় এখনও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
×